ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

কেন্দ্রে আসেননি অর্ধেকের বেশি ভোটার

সিসিকে ভোট পড়েছে ৪৬.৪১ শতাংশ

নাসির উদ্দিন,সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৩ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২৩
সিসিকে ভোট পড়েছে ৪৬.৪১ শতাংশ

সিলেট: বুধবার (২১ জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রে ছিল উৎসবের আমেজ।

গত কয়দিনের মতো ভারি বৃষ্টিও ছিল না। উপরন্তু নির্বাচনের জন্যই যেন থেমেছিল ‘আসমানী ফোয়ারা’ বৃষ্টি। আগেই ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে আগেই সরে দাঁড়ান বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বিএনপির ভোট বর্জনের ডাকে নেতাদের দেখা মিলেনি ভোটের মাঠে।

আর আরিফুল হক চৌধুরীও নির্বাচনের আগের রাতে ঘোষণা দেন আম কুঁড়াতে দাদার বাড়ি যাবেন। ভোটের দিন সকালে তিনি মৌলভীবাজারে চলে যান। তবে দাদার বাড়ি না গিয়ে তিনি গেছেন কোরবানির পশুর হাটে! সেখানের একটি ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

এদিকে বিএনপির নির্বাচনে না আসার ঘোষণার পর জনমনে আতঙ্কের কমতি ছিল না। যদিও প্রশাসন নির্বিঘ্নে ভোটারদের কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের কথাও যেন আস্থা রাখতে পারেননি ভোটাররা।

বুধবার (২১ জুন) অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪৬ দশমিক ৪১ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। সিলেট সিটিতে ভোটর রয়েছেন ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৮১১ জন। আর নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সিসিকের ১৯০টি কেন্দ্রের ভোটের ফলাফল অনুযায়ী প্রদত্ত ভোট ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৫৯টি। এরমধ্যে বৈধভোট ২ লাখ ২৬ হাজার ৬৪৩টি। আর বাতিল হয়েছে ১ হাজার ২১৬ জন।

সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের সিসিকে গত দুই মেয়াদে মেয়রের চেয়ার ছিল বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরীর দখলে। ফলে নগরে ভোটের মাঠে আধিপত্য গড়ে তোলেন আরিফ।

যে কারণে বিএনপি নির্বাচন বর্জন, আরিফুল হক চৌধুরীর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। সেসঙ্গে দলের আনুগত্য স্বীকার করে প্রায় দেড় ডজন বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীও রণে ভঙ্গ দেন এবং ইসলামী আন্দোলরনের প্রার্থী ভোট বর্জন করায় ভোটের মাঠে প্রভাব পড়েছে মনে করছেন অনেকে। বিএনপির নির্দেশ অমান্য করে প্রার্থী হন দলের ৪৩ নেতাকর্মী। যাদের দল থেকে ইতোমধ্যে বহিষ্কারও করা হয়েছে। তবে তারাও ভোট টানতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং এই অনুপস্থিতির মধ্যে জামায়াতের একটা বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে, মনে করছেন অনেকে।

বুধবার ভোট চলাকালে চলাকালে কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। তবে কিছু কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজমান ছিল। অবশ্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্কতার কারণে ভোটে ব্যাঘাত ঘটেনি।

বুধবার রাত ৯টায় ১৯০টি কেন্দ্রের ভোটের ফলে তাকে বেসরকারিভাবে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার ফয়সাল কাদের।

ঘোষিত ফলে ১৯০টি কেন্দ্রে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৯১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল পেয়েছেন ৫০ হাজার ৮৬২ ভোট। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ৬৫ হাজার ৫১৯ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন।  

দিন শেষে ভোটের ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা) ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৯১ ভোট পেয়ে বেসরকারি বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল (লাঙ্গল) ৫০ হাজার ৮৬২ ভোট।

এছাড়া মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শাহ জাহান মিয়া (বাস) ২৯ হাজার ৬৮৮ ভোট। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা) ১২ হাজার ৭৯৪ ভোট। স্বতন্ত্র  আব্দুল হানিফ কুটু (ঘোড়া) ৪ হাজার ২৯৬ ভোট। মোহাম্মদ ছালাউদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট) ২ হাজার ৬৪৮ ভোট। স্বতন্ত্র জহিরুল আলম (গোলাপ ফুল) ৩ হাজার ৪০৫ ভোট। তবে আগেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মাহমুদুল হাসান ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। আর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪২টি ওয়ার্ডে ১৯০টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৩৬৪টি কক্ষে ভোট দেন ৪২টি ওয়ার্ডের ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন ভোটার। এসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন ১৯০ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১ হাজার ৩৬৭ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ২ হাজার ৭৩৪ জন পোলিং অফিসার।  কেন্দ্রগুলোতে স্থাপিত ১ হাজার ৭৪২টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে নির্বাচন কমিশন।

বাংলাদেশ সময়: ১১০১ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২৩
এনইউ/এএটি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।