ঢাকা: জাতীয় সংসদের শূন্য ঘোষিত ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন একতারা প্রতীকের স্বতন্ত্রপ্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম)।
সোমবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর বনানী মডেল স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই অভিযোগ করেন ৷
হিরো আলম বলেন, নির্বাচনে সকাল থেকে ভোটারদের উপস্থিতি কম।
তিনি আরও বলেন, মোট ১২টি কেন্দ্রে আমাদের এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সকাল ১০টার মধ্যে যদি আমার এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া না হয়, তাহলে সারাদিন কি ঘটবে আমি জানি না। আমি এখন সেই জায়গাগুলোয় যাব এবং দেখব, কেন আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে! এমন হলে ভোটাররা ভোট দিতে আসবেন না। কারণ ভোটারদের মনে ভয় আছে।
এ আরও অভিযোগ করেন, যেহেতু এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে, সেহেতু তারা (আওয়ামী লীগ) এক তরফা নির্বাচনের চিন্তা করেছে।
পরিস্থিতি এমন থাকলে ভোট বর্জন করবেন কিনা বা ভোটের ফলাফল মেনে নিবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফলাফল মেনে নিবো কিনা, সেটা পরের হিসাব। তবে আমরা ভোটের মাঠে শেষ পর্যন্ত থাকবো। কারণ আমরা দেখতে চাই, তারা আমাদের উপর কতটা অত্যাচার করতে পারে, কতটা আমাদের এজেন্টদের বের করে দেয়, কতটা জোর করে ব্যালট পেপারে সিল মারে। এটি দেশে জনগণ দেখবে। আমাদের উপর কতটা অন্যায় অত্যাচার করা হয়, সেটি দেখার জন্য আমরা শেষ পর্যন্ত থাকবো।
এজেন্টদের বের করে দেওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কর্মকর্তা ও পুলিশকে জানানো হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তারা এখনো আমাদের এজেন্টদের ঢুকাতে পারেনি। তারা বলছে বিষয়টি তারা দেখছেন। বনানী থানাতেও আমি ফোন করেছি, তারাও বলেছে বিষয়টি দেখছেন।
নির্বাচন কমিশনের উপর কতটুকু আস্থা আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন হলে তো আস্থা থাকবে না। এজেন্টই কেন্দ্রে ঢুকতে পারছে না, তাহলে ভোটাররা কীভাবে আসবে। কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়া মানে তারা (আওয়ামী লীগ) এক তরফা নির্বাচন করতে চাচ্ছে। আমার সব কেন্দ্রে এজেন্ট আছে। মোট ৬০০ জন এজেন্ট দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ভোটের পরিবেশ খুব একটা ভালো না। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদেরকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে ঘাড় ধাক্কা দেওয়া হয়েছে, তাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে তারা এখনও কেন্দ্রে ঢুকতে পারেনি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আরো অভিযোগ করেন, বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের লোকজন আমার কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। আমরা আশঙ্কা করছি, কিছু কিছু কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। সেগুলো হলো- বালুঘাট কেন্দ্র, ভাষানটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গ্রিন হ্যাভেন স্কুল, আদমজি ক্যান্টনমেন্ট, গুলশান মডেল স্কুল, বনানী মডেল স্কুল, জামিয়া মাদরাসা। এর মধ্যে গুলশান মডেল স্কুলে আমাদের কর্মীদের মেরে বের করে দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের লোকজন এই কাজগুলো করছে বলে অভিযোগ হিরো আলমের।
এ প্রার্থী বলেন, আমি নির্বাচনে দাঁড়ানোর পর থেকে আওয়ামী লীগ আমার ওপর হামলা করছে। এভাবে এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার মানে হচ্ছে তারা (আওয়ামী লীগ) একাই নিজেরা ব্যালটে সিল মারবে৷
এর আগে সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনের ভোট গ্রহণ, যা চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
ঢাকা-১৭ আসনে মোট ৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- একতারা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম), নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির সিকদার আনিসুর রহমান, ডাব প্রতীকে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন, ছড়ি প্রতীকের বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট'র মো. আকতার হোসেন, সোনালী আঁশ প্রতীকে তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. তারেকুল ইসলাম ভুইয়া ও গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির প্রার্থী কাজী মো. রাশেদুল হাসান।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৩
এসসি/ইএসএস/এমএমআই/এসএএইচ