ঢাকা: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) খন্দকার গোলাম ফারুকের বক্তব্যকে দুঃখজনক ও লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা-১৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম।
রোববার (২৩ জুলাই) নির্বাচন ভবনে ফলাফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানানোর পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
হিরো আলম বলেন, ‘ডিএমপি কমিশনার ফারুক যে কথাটা বলেছেন তা খুবই দুঃখজনক, লজ্জাজনক। তার লজ্জা থাকলে এ কথা বলতেন না। কারণ একটাই, উনি বলেছেন আমি নাকি একই কেন্দ্রে দুইবার গেছি। দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, ভিডিও ফুটেজগুলো দেখবেন? আমি ওই কেন্দ্রে দুইবার গেছি কিনা। একবারই গিয়েছিলাম। ’
শনিবার (২২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর পল্টনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেছিলেন, প্রার্থীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের এবং আমরা সক্ষম ছিলাম। হিরো আলম যখন সকালে ওই কেন্দ্রে ঘুরে গেছেন তখন তাকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরে তিনি ওই কেন্দ্রে এসেছেন পুলিশকে না জানিয়ে।
হিরো আলম বলেন, উনারা বলেছেন নিরাপত্তা ভেতরে দেবে, বাইরে দেবেন না-এটা ভুল ধারণা। কারণ পুলিশ সারাদেশে নিরাপত্তা দেবে এটাই পুলিশের কর্তব্য। পুলিশের দায়িত্ব ঢাকা-১৭ আসনের পুরো এলাকার নিরাপত্তা দেওয়া। অথচ দেখলাম আমাকে যারা মারধর করছেন পুলিশ তাদের বের করে দিচ্ছে, আমাকে বের করে না দিয়ে। তাদের উচিত ছিল আমাকে সসম্মানে কেন্দ্রের ভেতর থেকে বাসা পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। কেন্দ্রের বাইরে কি পুলিশের দায়িত্ব নেই?
তিনি বলেন, যখন আমাকে তারা বেধড়ক মারধর করছিলেন, তখন পুলিশের কর্তব্য ছিল আমাকে রক্ষা করা। তারা বিজিবি মোতায়েন করেছে তারা আমাকে মারতে মারতে যখন বিজিবির গাড়ির কাছে নিয়ে গেল, তখন বিজিবির গাড়ি থেকে একটা লোকও নামলো না। তারা আমাকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। পুলিশ আমাকে কোনো দিনই নিরাপত্তা দিতে পারেনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, ইসির কোনো সাড়া না পেলে হাইকোর্টে রিট করবো। ডিবি ও পুলিশের ওপর আস্থা রাখছি। ১৯ জন ধরা পড়েছে। মূল আসামি দু’জন এখনও ধরা পড়েনি।
ঢাকা-১৭ উপ-নির্বাচন বাতিল ও পুর্ননির্বাচনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে আবেদন করেন স্বতন্ত্র এই প্রার্থী।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে আমার তালিকাভুক্ত মনোনীত প্রায় ৮৮ জন এজেন্টকে ১৯টি ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে ব্যাপক জাল ভোট দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের দিন বিকেল ৩টায় বনানী বিদ্যানিকেতন ভোটকেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে ভোট গ্রহণ পরিদর্শনে গেলে সরকার দলীয় ক্যাডাররা আমাকে মারধর করে, যা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ঘটনা। দেশ ও বিদেশের কোটি কোটি মানুষ ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার মাধ্যমে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছে, ওই ঘটনার পর বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের জোরপূর্বক বের করে ভোট গণনা করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ নির্বাচনবিধি পরিপন্থি। আমার ওপরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা ব্যাপক জাল ভোট ও ভোট গণনার অনিয়ম নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
তাই এ নির্বাচন বিধিসম্মত হয়নি। এ প্রহসনের নির্বাচনকে সম্পূর্ণরূপে বাতিল ঘোষণা করে পুনর্নির্বাচনের দাবি করছি। সেই সঙ্গে আমার প্রতিপক্ষকে নির্বাচন বিধি লঙ্ঘনের দায়ে নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে তার বিরুদ্ধে যথাবিহিত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি বলেও আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২৩
ইইউডি/আরআইএস