ঢাকা: দুজন সংসদ সদস্যের (এমপি) মৃত্যুর ঘটনায় বাহ্মণবাড়িয়া-২ ও লক্ষ্মীপুর-৩ শূন্য আসনের উপ-নির্বাচনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে মঙ্গলবার (০৩ অক্টোবর)।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংসদ সচিবালয় আসন শূন্য ঘোষণার বিজ্ঞপ্তি নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছে।
সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কেএম আব্দুস সালামের ১ অক্টোবর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে দুই সংসদ সদস্য গত ৩০ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করায় ওই দিন আসন দুটি শূন্য হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ব্রাহ্মবাড়িয়া-২ আসনে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত এমপি আব্দুস সাত্তার ভূঞা এবং লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত এমপি এ কে এম শাহজাহান কামাল রাজধানীর একটি হাসপাতালে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভোরে মৃত্যুবরণ করেন।
সংবিধান অনুযায়ী, জাতীয় সংসদের কোনো আসন শূন্য হওয়ার পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে উপ-নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর আসন শূন্য হওয়ার তারিখ হিসেবে এই দুই আসনে উপ-নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হবে আগামী ২ নভেম্বর। এদিন আসন ভিত্তিক ৩০০ সংসদীয় আসনগুলোর ভোটার তালিকাও প্রকাশ করা হবে। আর এর পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যেই ঘোষণা করা হতে পারে নির্বাচনের তফসিল।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, একটি উপ-নির্বাচন সম্পন্ন করতে ৪০ দিনের মতো সময়ের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা পূর্বে ৪০ দিন সময় হাতে পাওয়া নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে।
আবার স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন অনুযায়ী, কোনো নির্বাচিত স্থানীয় সরকারের কোনো পদ শূন্য হলে সেই স্থানীয় সরকারের মেয়াদ পূর্তির আগের নব্বই দিনের মধ্যে উপ-নির্বাচন করা যায় না। তবে সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে এমন কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। অর্থাৎ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হওয়ার পরে বা সময় গণনার পরেও ভোটের তারিখ রাখতে না পারার বিষয়ে আইনে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই।
এ নিয়ে ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, ইসি সচিবালয় থেকে নির্বাচনের সকল বিষয় উল্লেখ করে কমিশন সভায় নথি উত্থাপন করা হবে। কমিশন বৈঠকে বিস্তর আলোচনার পর নির্বাচন হবে কি হবে না, সে সিদ্ধান্ত হবে।
উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা ১৯৭৯ সালে তৎকালীন কুমিল্লা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ও জুনের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন ৪ দলীয় জোট সরকার থেকে টেকনোক্রেট হিসেবে আবদুস সাত্তার আইন, মৎস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন পান। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে তিনি নিষ্ক্রিয় ছিলেন। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন। ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হলে উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র থেকে জয়লাভ করে ফের সংসদে আসেন তিনি।
অন্যদিকে বীর মুক্তযোদ্ধা এ কে এম শাহজাহান কামাল ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০২৩
ইইউডি/এমজেএফ