ঢাকা: নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেছেন, রাজনৈতিক সমঝোতা বড় কথা নয়। যে দলগুলো আসবে আমরা তাদের নিয়ে নির্বাচন করব।
রোববার (০৮ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
রাশেদা সুলতানা বলেন, সংলাপের কোনো উদ্যোগ হয়নি। কখন কীভাবে সংলাপ করব তখন দেখা যাবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করব। রাজনীতিতে সমঝোতা আমাদের কাজ না। সংবিধান অনুযায়ী আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। রাজনৈতিক সমঝোতা বড় কথা নয়। যে দলগুলো আসবে আমরা তাদের নিয়ে নির্বাচন করব। আমাদের উদ্যোগ, আস্থার জায়গায় আমরা কাজ করছি। নিরপেক্ষতা... আমরা এই বিষয়ে পিছপা হব না। ওনাদের (রাজনৈতিক দলগুলোর) আস্থা ও মানসিকতার উন্নয়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, মাঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নতুন করে কিছু নেই। ভোট কীভাবে সুষ্ঠু করা যায়, এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা চ্যালেঞ্জের বিষয়ে কিছু বলেননি। আমরা নির্বাচন করতে পারব না, এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে তারা কিছু বলেননি। আমাদের দুর্গম অঞ্চলে কীভাবে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠাবো, তাদের কিছু দাবি দাওয়া ছিল। মিক্সড (ডিসিদের সঙ্গে তারাও) করে রিটার্নিং কর্মকর্তা হতে চায়। এটা সত্যি কথা রিটার্নিং কর্মকর্তা অ্যাডমিন ক্যাডার থেকে দেওয়া হয়। ওদের দাবি চাইলে সব। দেওয়ার মতো অ্যাবিলিটি নেই, তবে বাছাই করে কিছু দেওয়া যায়, ওরা ওইরকম কিছু চাচ্ছে। আমাদের কিছু দিলে সম্মানিত বোধ করি।
রাশেদা সুলতানা আরও বলেন, সব দল অংশ নেওয়া না নেওয়া প্রশ্ন নয়; প্রশ্ন হলো ভোটের সময় ২০১৪ সালে কিছু জায়গায় আক্রমণ হয়েছিল, এই উদাহরণ দিয়ে বলেছিল, যদি সব দল না আসে তবে যেন সেফটি মেজারমেন্ট রাখা হয়। সিকিউরিটি মানে অফিসের সিকিউরিটি, তবে ২০১৪ সালে কী হয়েছিল আমি জানি না। যদি আগুন দিয়ে দিল, লুটপাট করে ফেলল। এই অফিস যেন নিরাপদ থাকে। তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে বসব। তবে এখনও কংক্রিট সিদ্ধান্ত হয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়হীনতার কথা বলেনি। তাদের প্রমোশন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অনেক অফিসে জনবল নেই। সুনির্দিষ্ট ফোর্স বলেনি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি দল আসবে। তবে আমাদের সঙ্গে বসবে, এই বিষয়ে এখনও কিছু হয়নি। ওনারা বাজেট সমস্যার কথা বলেছেন। ওনারা বেশি করে পাঠালে পাঠাক। ওনারা আসুক আরও বসব। তবে ওনাদের বাজেটের কিছু সমস্যা আছে। ওনারা বেশি করে পাঠান, এটা আমরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। যেদিন বসব সেই দিন জানাব, তবে অগ্রিম কিছু বলতে চাচ্ছি না।
সাবেক এই জেলা জজ বলেন, আমাদের একটা অবস্থান আছে আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটা নির্বাচন করব। এটা আমাদের অঙ্গীকার, একটা প্রত্যয়, যেহেতু আমরা শপথ নিয়েছি ভালো নির্বাচনই করব। আমরা অত্যন্ত নিষ্ঠাবান যে, একটা ভালো নির্বাচন করব। এটা বিশ্বাস করা না করা তাদের ব্যাপার। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। এ পর্যন্ত আমরা যতগুলো নির্বাচন করেছি কোথাও কোনো ব্যত্যয় করেছি, কোনো আইন ভঙ্গ করছি? আমরা ভালো নির্বাচন করার চেষ্টায় আছি। আমরা চাই একটা ভালো নির্বাচন হোক, সেই নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের আন্তরিকতার কোনো কমতি নেই।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকারের সহায়তা নিতেই হবে। তারা সহায়তা না দিলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। সরকারও চায় একটা ভালো নির্বাচন হোক, এটা আমরা বিশ্বাস রাখি। আমরা আশাবাদী সরকারও চায় একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। তবে পাব কি পাব না, এটা এখন বলা যাবে না। যখন পাব না, তখন ঘটে গেলে বলা যাবে। ভবিষ্যৎ কী হবে, এটা বলা যাবে না। আমরা আমাদের মতো করে চেষ্টা করে যাচ্ছি একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের। আমাদের চাওয়া ও লক্ষ্য একটাই সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন। ভোটার আসবে ভোট দেবে এটাই চাওয়া। কী ঘটে যাবে, কী ঘটবে না এটা বলা কঠিন।
পর্যবেক্ষক না এলে নির্বাচনের গ্রণযোগ্যতা হারাবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পর্যবেক্ষক আসলেও গুরুত্বপূর্ণ না আসলেও গুরুত্বপূর্ণ। পর্যবেক্ষক যদি কেউ না পাঠান তাহলে আমাদের দেশে কী পর্যবেক্ষক নেই? আমাদের কি জনগণ নেই, আমাদের বড় পর্যবেক্ষক আমাদের জনগণ। আমাদের মিডিয়া আছে, মিডিয়াও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২৩
ইইউডি/এমজেএফ