ঢাকা, বুধবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২৩
সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি, নাশকতা ও সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ১২ জন কাউন্সিলরের অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় ‘মেয়র পদ’ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-১ শাখার ৪৬.০০.০০০০.০৬৩.২৭.০০৪.২২ (অংশ-১)-১৭৩৫ স্মারকের পত্রে ‘মেয়র পদ’ শূন্য ঘোষণা করা হয়।

 

বরখাস্ত হওয়ায় মেয়র তাজকিন আহমেদ সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পৌর বিএনপির সদস্য সচিব। এর আগেও স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে তাকে তিনবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এদিকে, একই সঙ্গে আরও দুটি পত্রে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের শূন্য পদে ৯০ দিনের মধ্যে উপ-নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবকে বলা হয়েছে। এছাড়া নতুন মেয়র কার্যভার বুঝে না নেওয়া পর্যন্ত পৌরসভার প্যানেল মেয়র (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত মেয়র) কাজী ফিরোজ হাসানকে প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতাসহ মেয়রের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়া এবং বিধিবহির্ভূত ভাবে পৌরসভার ভাগ্যকূল মিষ্টান্ন ভাণ্ডার সংলগ্ন জমিতে মার্কেট নির্মাণের দরপত্র আহ্বানসহ ১০ দফা অভিযোগ উল্লেখ করে পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদের বিরুদ্ধে ১২ কাউন্সিলর গত আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর লিখিত অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেন।  

সাতক্ষীরা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ শফিক উদ দৌলা; ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর নূরজাহান এবং ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর রাবেয়া পারভীন অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ও বিপক্ষে কোনো ধরনের প্রশাসনিক কিংবা রাজনৈতিক চাপ ছিল না বলে উল্লেখ করেছেন।

তারা জানিয়েছেন, মেয়র তাজকিন আহমেদ তাদের কোনো কথা শুনতেন না। তাদের মূল্যায়ন করতেন না। তিনি কাউন্সিলরদের কোনো মতামত না নিয়ে একক সিদ্ধান্তে পরিষদ চালাতেন।  

ডিসি বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত ৩ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিষ্ণুপদ পালকে নির্দেশ দেন। নির্দেশ মতো তিনি তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদকে ‘অনাস্থা প্রস্তাব’-এর পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় কার্যধারা কেন নেওয়া হবে না মর্মে এই চিঠি পাওয়ার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তাজকিন আহমেদ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের চিঠির জবাব নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না দেওয়ায় কাউন্সিলর ফিরোজ হাসানকে (ভারপ্রাপ্ত মেয়র) অনাস্থা প্রস্তাব সম্পর্কিত সভা ডাকার আহ্বান জানান।  

গত ১৮ অক্টোবর বিকেল ৩টার দিকে সাতক্ষীরা পৌরসভা পরিষদকক্ষে ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসানের সভাপতিত্বে সভায় ১২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১১ জন উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত ১১ জনই অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। তবে ওই সভায় পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন না।

এদিকে, অনাস্থা প্রস্তাবটি পৌরসভার মোট সদস্য সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন-২০০৯ এর ধারা ৩৮ (১২) অনুযায়ী গত ২৩ নভেম্বর সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের আসনটি শূন্য ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

সাতক্ষীরার ডিসি মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের তিনটি চিঠি পেয়েছি। প্রথম চিঠিতে মেয়রের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। দ্বিতীয় চিঠিতে প্যানেল মেয়র-১ কে প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা দেওয়া হয় এবং তৃতীয় চিঠিতে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন-২০০৯ এর ৩৩(২) ধারা অনুসারে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার জন্য সচিব নির্বাচন কমিশন সচিবালয় বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখন, আইন ও বিধি অনুসারে ৯০ দিনের মধ্যে মেয়র পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।