ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

২০ বিঘা জমি ২ হাজার টাকায় কিনেছেন, হলফনামায় লিখলেন নৌকার প্রার্থী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২৩
২০ বিঘা জমি ২ হাজার টাকায় কিনেছেন, হলফনামায় লিখলেন নৌকার প্রার্থী পাবনার এমপি মো. মকবুল হোসেন

পাবনা: পাবনা-৩ (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুর) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মো. মকবুল হোসেন ২০ বিঘা জমি কিনেছেন মাত্র দুই হাজার টাকায়। সে হিসেবে প্রতি বিঘা জমির মূল্য দাঁড়ায় মাত্র ১০০ টাকা করে।

অবিশ্বাস্য হলেও সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় স্থাবর সম্পত্তির ঘরে এ তথ্য দিয়েছেন এমপি মকবুল। টানা তিনবারের সংসদ সদস্য তিনি।

মকবুল তার হলফনামায় সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন ৩ কোটি ১৭ লাখ ৬৭ হাজার ৭১০ টাকা। এর মধ্যে আয় দেখিয়েছেন ৩২ লাখ ৭ হাজার ৫১০ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ২ কোটি ৭২ লাখ ৩৮ হাজার টাকা এবং স্থাবর সম্পত্তির মূল্য ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ২২ হাজার ২০০ টাকা।

তার স্ত্রীর নামে স্থাবর সম্পত্তি এক লাখ টাকা মূল্যের দশমিক ৯০ একর জমি, অকৃষি জমির মূল্য বাবদ ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৬০০ টাকা এবং একটি বাড়ির দাম বাবদ ৫ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ টাকা দেখিয়েছেন। একইসঙ্গে স্ত্রীর নামে ১৫ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে বলেও হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।

হলফনামায় অস্থাবর সম্পত্তির ঘরে মকবুল হোসেন উল্লেখ করেছেন, কৃষিখাত থেকে প্রতি বছর তার আয় ১ লাখ ১৬ হাজার টাকা, প্রতি বছর বাড়ি ভাড়া থেকে আয় ৫ লাখ ৬১ হাজার ৫১০ টাকা, জমি ইজারা থেকে প্রতি বছর পান দেড় লাখ টাকা, সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী পেয়েছেন ২৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

এমপি মকবুলের নামে ব্যাংকে নগদ আছে ১ কোটি ৬৭ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা, নিজের প্রাইভেটকারসহ অন্য যানবাহনের মূল্য ধরেছেন ৭১ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য সম্পদ আছে ২ লাখ ৩ হাজার টাকার। এছাড়া তার স্ত্রীর নামে ব্যাংকে আছে ২১ লাখ ১০ হাজার টাকা, সঞ্চয়পত্র ১০ লাখ টাকার, ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী, ৭৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে।

তিনি হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাশ এবং পেশা হিসেবে জোতদার উল্লেখ করেছেন। তার নামে কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা নেই। প্রতিশ্রুতির বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেছেন, বিগত নির্বাচনে দলীয় সভানেত্রীর দেওয়া সকল প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন।

এতো কম দামে জমি কেনার বিষয়ে এমপি মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমি ১৯৭২ সালে এই ২০ বিঘা জমি কিনেছিলাম। সেই সময়ে জমির দাম ১০০ টাকা বিঘা ছিল। সেই সময় থেকে আয়কর ফাইলে এই জমির মূল্য যেভাবে ধরা হয়েছে, আমি সেভাবেই তথ্য দিয়েছি। আমি যখন জমি কিনেছি তখন পানির মধ্যে জমি ছিল। আমার হলফনামাতে যা তথ্য দেওয়া আছে সেটা পূর্বেও দিয়েছি। যখন যে মূল্যে যা কিনেছি সেটিই উল্লেখ করেছি আমি। একটি চক্র ষড়যন্ত্র করছে। তবে লাভ হবে না। নৌকার বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না এখানে। সাধারণ মানুষ আমাকে জানে ও চেনে।  
 
এ বিষয়ে পাবনা জেলা সিনিয়র নির্বাচনী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, আয়কর ফাইলে যেভাবে মূল্য ধরা আছে, হয়তো সেভাবেই তিনি দিয়েছেন।  

বর্তমান মূল্য হিসেবে জমির দাম না ধরার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি সম্পর্কে তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।