ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

নির্বাচনী এজেন্ট নিয়োগ ও কর্তব্য নিয়ে ইসির চার নির্দেশনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩
নির্বাচনী এজেন্ট নিয়োগ ও কর্তব্য নিয়ে ইসির চার নির্দেশনা

ঢাকা: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনি এজেন্ট ও পোলিং এজেন্ট নিয়োগ, তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে চারটি নির্দেশনা দিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান নির্দেশনাটি সকল রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন।

১) নির্বাচনী এজেন্ট নিয়োগ:

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ২১ এর দফা (১) অনুসারে একজন প্রার্থী জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য কোনো ব্যক্তিকে তার নির্বাচনি এজেন্ট নিয়োগ করতে পারবেন। তবে তাকে নিয়োগ সংক্রান্ত লিখিত নোটিশ রিটার্নিং অফিসারের নিকট প্রেরণ করতে হবে। ওই নোটিশে নির্বাচনী এজেন্টের নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা উল্লেখ থাকতে হবে। নির্বাচনী এজেন্টের নিয়োগপত্র প্রার্থী যে কোনো সময়ে লিখিতভাবে বাতিল অথবা প্রত্যাহার করতে পারবেন এবং তদস্থলে অন্য একজনকে নিয়োগ করতে পারবেন। যদি কোনো নির্বাচনী এজেন্টের মৃত্যু হয় তা হলেও তদস্থলে প্রার্থী অন্য একজনকে নির্বাচনী এজেন্ট নিয়োগ করতে পারবেন। তবে ওই ব্যক্তিকেও জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হবে। যে ক্ষেত্রে প্রার্থী কোনো নির্বাচনী এজেন্ট নিয়োগ করবেন না, সেক্ষেত্রে তিনি নিজেই তার নির্বাচনী এজেন্ট বলে আইনগতভাবে গণ্য হবেন।

২) পোলিং এজেন্ট নিয়োগ:

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ২২ এর দফা (১) বিধান অনুসারে প্রত্যেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অথবা তার নির্বাচনী এজেন্ট ভোটগ্রহণের পূর্বে প্রতিটি ভোটকক্ষের জন্য পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করতে পারবেন। এজেন্ট নিয়োগ সংক্রান্ত লিখিত নোটিশ তাকে প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে পাঠাতে হবে। প্রিজাইডিং অফিসারকে কোনো পোলিং এজেন্টকে গ্রহণ করবেন না যদি না তিনি তাকে নিযুক্তকারী ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত তার নাম ও যে প্রার্থীর জন্য তিনি পোলিং এজেন্ট নিযুক্ত হন তার নাম সম্বলিত একটি পরিচয়পত্র দেখান। একটি ভোটকক্ষের জন্য একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ একজন পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করতে পারবেন।

৩) নির্বাচনী এজেন্ট ও পোলিং এজেন্টদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য:

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ২৮, ২৯, ৩১, ৩৩ ও ৩৬ অনুচ্ছেদে যথাক্রমে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, নির্বাচনী এজেন্ট এবং পোলিং এজেন্টদের ভোটগ্রহণের শুরু হতে ভোটকক্ষে ব্যালট বাক্সের ব্যবহার পদ্ধতি, ভোটকেন্দ্রে অবস্থান, ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণ এবং প্রকৃত ভোটারদের শনাক্তকরণ, কোনো কোনো ভোটারের ভোটদানে আপত্তি উত্থাপন, ভোটগণনাসহ ফলাফলের বিবরণী ও অন্যান্য প্যাকেট প্রস্তুত, ওই বিবরণী ও প্যাকেটে স্বাক্ষর দান, বিধি মোতাবেক কেন্দ্র হতে ভোটগণনার বিবরণী সত্যায়িত অনুলিপি গ্রহণ সংক্রান্ত তাদের দায়িত্ব ও ভূমিকা গুরত্বপূর্ণ।

রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ফলাফল একত্রীকরণের সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও নির্বাচনি এজেন্টগণ উপস্থিত থাকতে পারেন এবং উপস্থিতকালে তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রয়েছে। এই দায়িত্ব পালনে তাদের করণীয় ও অনুসরণীয় বিধানাবলি বিশেষ করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৩৬ এর দফা (১১) ও (১৩) এর বিধান প্রিজাইডিং অফিসারদের অবহিত করা একান্ত আবশ্যক।  

অনুচ্ছেদ ৩৬-এর দফা (১১) এর বিধান মতে যদি কোনো নির্বাচনী এজেন্ট অথবা পোলিং এজেন্ট ভোট গণনার বিবরণী ও ব্যালট পেপারের হিসাবের সত্যায়িত অনুলিপির জন্য আবেদন করেন তবে প্রিজাইডিং অফিসার নির্বাচনি/পোলিং এজেন্টকে সত্যায়িত অনুলিপি প্রদান করবেন। এবং এই অনুলিপি প্রাপ্তির রশিদ/প্রাপ্তি স্বীকার গ্রহণ করবেন। যদি নির্বাচনী/পোলিং এজেন্ট প্রাপ্তি রশিদ প্রদান/প্রাপ্তি স্বীকার করতে অস্বীকার করেন, তবে তা লিপিবদ্ধ করে রাখতে হবে।

অনুচ্ছেদ ৩৬ এর দফা (১৩) এর বিধান মতে নির্বাচনী এজেন্ট অথবা পোলিং এজেন্ট যদি ভোটগণনার সময় উপস্থিত থাকেন, তবে প্রিজাইডিং অফিসার প্রতিটি বিবরণী ও প্যাকেটের উপর তাদের স্বাক্ষর নিবেন এবং নির্বাচনি/পোলিং এজেন্টগণ স্বাক্ষর দিতে অস্বীকার করলে প্রিজাইডিং অফিসার বিষয়টি লিপিবদ্ধ করে রাখবেন।  

ভোটগ্রহণের সময় প্রত্যেক প্রার্থী প্রতি ভোটকক্ষে একজন পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করতে পারলেও ভোটগণনার সময় কাজের সুবিধার্থে একজন পোলিং এজেন্ট উপস্থিত থাকতে পারবেন।  

এ প্রসঙ্গে নির্বাচনী এজেন্ট এবং পোলিং এজেন্টদের জন্য প্রস্তুতকৃত নির্দেশাবলিতে উল্লিখিত নির্বাচনী এজেন্ট এবং পোলিং এজেন্টদের কর্তব্য ও দায়িত্বাবলি উপস্থিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অবহিত করতে হবে।

৪) নির্বাচনী এজেন্ট বা পোলিং এজেন্টের অনুপস্থিতি:

নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো কোনো কাজ রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসার কর্তৃক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অথবা তার নির্বাচনি এজেন্ট অথবা পোলিং এজেন্টের উপস্থিতিতে সম্পন্ন করার বিধান রয়েছে। বিশেষ করে ভোটগণনা এবং নির্বাচনি ফলাফল একত্রীকরণের সময় প্রার্থী অথবা তাদের এজেন্টদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।  

যদি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কিংবা নির্বাচনি এজেন্ট কিংবা পোলিং এজেন্ট ভোটগণনার সময় অথবা ফলাফল একত্রীকরণের সময় উপস্থিত না থাকেন অথবা কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উক্ত প্রক্রিয়ায় কোনো এজেন্ট নিয়োজিত না করেন, তবে ওইরূপ অনুপস্থিতির কথা লিখিতভাবে রেকর্ড করার ব্যবস্থা করতে হবে।  

এক্ষেত্রে আদেশের অনুচ্ছেদ ২৩ এর বিধান অনুসারে যদি কোনো প্রার্থী অথবা তার নির্বাচনী এজেন্ট অথবা পোলিং এজেন্ট রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসার কর্তৃক কোনো কাজ সম্পাদনের সময় ধার্যকৃত সময় এবং স্থানে উপস্থিত থাকতে ব্যর্থ হন, তাহলে তাদের অনুপস্থিতি ওই কর্মকর্তা কর্তৃক বৈধভাবে সম্পাদিত ওই সকল কাজ আইনসিদ্ধ বলে গণ্য হবে।

এই অবস্থায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদেরকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া যেতে পারে যে, আইন অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসার এবং প্রিজাইডিং অফিসারদের জন্য অর্পিত কতিপয় নির্বাচনি কার্যাদি সম্পাদনের সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কিংবা নির্বাচনী এজেন্ট কিংবা পোলিং এজেন্ট উপস্থিত থাকতে ব্যর্থ হলে রিটার্নিং অফিসার বা প্রিজাইডিং অফিসার কর্তৃক সম্পাদিত কার্যাদি বৈধভাবে সম্পাদিত হয়েছে বলে গণ্য হবে। সুতরাং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কিংবা পোলিং এজেন্টকে প্রার্থীর স্বার্থেই বিধিসম্মতভাবে উপস্থিত থেকে উল্লিখিত নির্বাচনি কার্যাদি পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩
ইইউডি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।