ফরিদপুর: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ তার প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী শামীম হক ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেছেন, নৌকার প্রার্থীর লোকজন নিজেরা তাদের নির্বাচনী ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ করে থানায় আমার নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও মামলা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এছাড়া বেছে বেছে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ওয়ার্ড সভাপতি ও সেক্রেটারিসহ আমার নির্বাচনী এজেন্টের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী মহল্লায় এ কে আজাদের বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলানিউজের সাংবাদিকের করা এক প্রশ্নের জবাবে এসব অভিযোগ করেন এ কে আজাদ।
সংবাদ সম্মেলনে এ কে আজাদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী জাহিদ।
তিনি বলেন, গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে নৌকার প্রার্থী শামীম হকের লোকজন ফরিদপুর জুড়ে ত্রাসের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) অগণতান্ত্রিক ও নিয়মবহির্ভূতভাবে এ কে আজাদসহ জেলা আওয়ামী লীগের দশজন নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করেছেন। যেখানে পূর্বে কাউকেই কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) কিংবা সতর্ক না করেই বহিষ্কার করা হয়। যেটা তারা পারেন না। তারা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে বহিষ্কারের সুপারিশ করতে পারতেন। কিন্তু, তারা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ছাড়াই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সেক্রেটারি মিলে ওই দশ নেতাদের বহিষ্কার করেন। সেটা সম্পূর্ণই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ অভিযোগ করে বলেন, জেলার অন্য উপজেলার একাধিক নেতা-কর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করলেও তাদের বহিষ্কার না করে শুধু জেলা আওয়ামী লীগের যেসব নেতা-কর্মী এ কে আজাদের পক্ষে কাজ করছেন, শুধু তাদেরই বহিষ্কার করা হয়েছে। যেটা পুরোটাই যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা তা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বিপুল ঘোষ বলেন, শামীম হকের আশেপাশে সব সন্ত্রাসীরা ঘোরাফেরা করেন। তিনি (শামীম হক) সন্ত্রাসীদের নিয়ে দল গড়ে তুলেছে। সেখানে প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের পাওয়া যায় না। এছাড়া এদের নেতৃত্বে জেলা শহরের হাজী শরীয়াতুল্লাহ মার্কেটে নীরব চাঁদাবাজি চলছে।
এ সময় উপস্থিত থাকা সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ড. যশোদা জীবন দেবনাথ অভিযোগ করে বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতি করি। তবুও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আমাদের ধর্মের লোকদের ওপর টর্চার করা হয়। অনেকেই চায় আমরা দেশ ছেড়ে চলে যাই। তাই নেত্রীর কাছে এ বিষয়ে সুরক্ষা চাই।
এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হওয়া সত্ত্বেও আমাকে কোনো দলীয় প্রোগ্রামে ডাকা হয় না। একই সঙ্গে আমাকে মূল্যায়ন করা হয় না বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন ড. যশোদা জীবন দেবনাথ।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য বিপুল ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ফারুক হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা খলিফা কামাল, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা নুসরাত রাসুল তানিয়াসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২৪
এসআরএস