সিলেট: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেটে চলছে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ।
রোববার (০৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে সিলেটের ৬টি আসনের ১ হাজার ১৩টি কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
যদিও শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে ভোটারদের উপস্থিতি কম ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারের উপস্থিতি ক্রমশ বাড়ছে।
সিলেটের ১৯টি আসনে সংসদ সদস্য হতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১০৫ জন প্রার্থী। আর সিলেট জেলার ছয়টি আসনে ৩৫ জন।
এবার বিএনপি বিহীন নির্বাচনে সিলেটের বেশিরভাগ আসনে নৌকার প্রার্থী জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কয়েকটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে লড়াই হবে নৌকার। তবে এসব প্রার্থীও বেশিরভাগ আওয়ামী লীগ নেতা, ভোটে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্রের ব্যানারে।
সিলেটে ভোটগ্রহণ নির্বিঘ্ন ও সুষ্ঠু করতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৭ হাজারের বেশি জনবল মাঠে দায়িত্ব পালন করছেন। সেই সঙ্গে বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে স্ট্রাইকিং টিমও মাঠ চষে বেড়াচ্ছে।
এবারের সংসদ নির্বাচনে সিলেটের ছয়টি আসনে মোট ২৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৩১ ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ লাখ ৯২ হাজার ৩৯৫ ও মহিলা ভোটার রয়েছেন ১৩ লাখ ২২ হাজার ৯২৬ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১০ জন। ভোটকেন্দ্র রয়েছে এক হাজার ১৩টি ও ভোট কক্ষ রয়েছে ছয় হাজার ছয়টি।
গত ১৫ নভেম্বর ঘোষিত হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল। সিলেট জেলার ৬টি আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৫৮ জন। পরে জমা দেন ৪৭ জন। যাচাই-বাছাই শেষে ৩৩ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে উচ্চ আদালতে আপিল করে আরও দুজন প্রার্থিতা ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। এ দুজনসহ সিলেটের ৬টি আসনে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫ জনে। তবে ৩ জানুয়ারি সিলেট-৫ আসনের জাতীয় পার্টিার প্রার্থী সাব্বির আহমদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো এবং সিলেট-৩ আসনের ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত প্রার্থী ক্বারি মাওলানা মইনুল ইসলাম আশরাফী ওই আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ায় লড়াইয়ের তালিকায় নাম অবশিষ্ট থাকলেন ৩৩ জন।
তারা হলেন- সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন (নৌকা), সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের প্রার্থী আব্দুল বাসিত (ছড়ি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি)-এর প্রার্থী ইউসুফ আহমদ (আম), ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী ফয়জুল হক (মিনার) এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. সোহেল আহমদ চৌধুরী (প্রতীক)।
সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী (নৌকা), গণফোরামের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য), বিশ্বনাথ পৌরমেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান (ট্রাক), জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুর রব (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী মো. জহির (ডাব) এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী মো. মনোয়ার হোসাইন (আম)।
সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান (লাঙল), বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)-এর মহাসচিব- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল (ট্রাক), বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী শেখ জাহেদুর রহমান মাসুম (মোমবাতি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী আনোয়ার হোসেন আফরোজ (আম) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম (ঈগল)।
সিলেট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি ইমরান আহমদ (নৌকা), ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মো. নাজিম উদ্দিন কামরান (মিনার) এবং তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল হোসেন (সোনালী আঁশ)।
সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ (নৌকা), বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী (কেতলি), স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আহমদ আল কবির (ট্রাক), তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী কুতুব উদ্দীন আহমদ শিকদার (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. বদরুল আলম (ডাব) এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) প্রার্থী মো. খায়রুল ইসলাম (হাত-পাঞ্জা)।
সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ নুরুল ইসলাম নাহিদ (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন (ঈগল), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের প্রার্থী আতাউর রহমান আতা (ছড়ি), জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম উদ্দিন (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী শমসের মবিন চৌধুরী (সোনালী আঁশ) এবং ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী সাদিকুর রহমান (মিনার)।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, সিলেট জেলার ছয়টি সংসদীয় এলাকায় মোতায়েন রয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর ২৭ প্লাটুন সদস্য। এর বাইরে বিজিবি সদস্য ১ হাজার ৪০০ জন, ৬ হাজার ২১৯ জন পুলিশ সদস্য, র্যাব সদস্য ১১৪ জন ও ১২ হাজার ২৮৬ জন আনসার সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোট ১৭ সহস্রাধিক সদস্য সার্বক্ষণিক মাঠে দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২৪
এনইউ/এসআইএস