ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

এনআইডি বিড়ম্বনা: একজনের আঙুলের ছাপ মিলে যাচ্ছে অন্যজনের সঙ্গে

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪
এনআইডি বিড়ম্বনা: একজনের আঙুলের ছাপ মিলে যাচ্ছে অন্যজনের সঙ্গে

ঢাকা: মোবাইল ফোনের সিম কিনতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন মহসীন আলী। আঙুলের ছাপ দিতে গিয়ে দেখেন হাতে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সঙ্গে মিলছে না।

অগত্যা নির্বাচন অফিসে দৌড়াদৌড়ি। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন তার আঙুলের ছাপ আরো চার ব্যক্তির সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।

মহসীন আলী নামটি এখানে ছদ্ম নাম হিসেবে সংগত কারণেই ব্যবহার করা হলেও ঘটনাটি হুবহু এক। এই প্রতিবেদককে সঙ্গে সম্প্রতি কথা হলে তিনি জানান, আগে তো কাজ করেছি আঙুলের ছাপ দিয়েই। এখন কেন মিলছে না! চোখে মুখে বিস্ময় আর হতাশার ছাপ। কেননা, নিজ জেলা নির্বাচন অফিসে ঘোরাঘুরির পর তিনি ঢাকায় নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এসেও সুরাহা করতে পারেননি।  

বলেন, আরো কিছু তথ্য প্রমাণ দিয়ে বিষয়টির সুরাহা করতে হবে। এতে ভোগান্তিও হচ্ছে, সময়ের সঙ্গে অর্থের অপচয়ও হচ্ছে।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, এমন ঘটনা কয়েক লাখ। এগুলো নিষ্পত্তি করতে অতিরিক্ত তথ্য প্রমাণ দিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে নাগরিকের চেয়ে সংশ্লিষ্ট ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের দায় বেশি। কেননা, ভোটার হওয়ার সময় আঙুলের ছাপ ভালো করে না নেওয়ার কারণেই পরবর্তীতে এমন হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনআইডি’র এক পরিচালক বলেন, বাড়ি বাড়ি ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় যারা ডাটা এন্ট্রি করেন, তারা বেশি ইনপুট দিলে বেশি টাকা পাবেন- এই সু‌বিধার কারণে তাড়াহুড়ো করেন। ইসির নির্দেশনা হচ্ছে আঙুলের ছাপ যেন কমপক্ষে ৬০ শতাংশ নেওয়া হয়। কিন্তু তাড়াহুড়োর কারণে অনেকেরই ৬০ শতাংশের কম ছাপ নেওয়া হয়ে যায়। পরবর্তীতে এই ধরনের নাগরিকের আঙুলের ছাপ অন্যদের সঙ্গে মিলে যায়। ফলে বিভিন্ন সেবা পেতে বিড়ম্বনায় পড়েন তারা। আবার চর্মরোগ, বেশি কাজ করার কারণে অনেকের আঙুলের ছাপ পাওয়া যায় না, তাদেরও একই সমস্যায় পড়তে হয়।

বিষয়গুলো নিয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইসির এক সমন্বয় সভাতেও আলোচনা হয়।

জানা গেছে, বর্তমানে ‘ম্যাচ ফাউন্ড’ এনআইডির সংখ্যা ৫ লাখ ২৫ হাজার ৪৩টি। আর এগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সিস্টেম ম্যানেজারসহ মাঠ কর্মকর্তাদের লিখিত নির্দেশনা দিয়েছেন ইসি সচিব শফিউল আজিম।

নির্দেশনায় তিনি বলেন, ম্যাচ ফাউন্ডের ক্ষেত্রে ব্যক্তি যদি দ্বিতীয়বার ভোটার না হয়ে থাকেন (False ম্যাচ) সেসব আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ব্যবস্থা নেবেন। কারিগরি অধিশাখা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।

কর্মকর্তারা বলছেন, ম্যাচ ফাউন্ডের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সরাসরি উপস্থিত হয়ে ফের আঙুলের ছাপ দিতে হবে। এক্ষেত্রে যে এনআইডির সঙ্গে তার আঙুলের ছাপের শতকরা হার বেশি হবে, সেটিই তার এনআইডি হিসেবে প্রমাণিত ধরা হয়।

এনআইডি সেবা নিয়ে ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেন, এখন আমরা এই সেবাটি শতভাগ নির্ভুল করার চেষ্টা করছি। এজন্য মাঠ কর্মকর্তাদের মনিটরিং করারও সিদ্ধান্তও হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪
ইইউডি/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।