ঢাকা: চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে হয়রানি কমাতে জন্ম ও মৃত্যুসনদ সরবরাহের জন্য জন্ম ও মৃত নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের রেজিষ্টার জেনারেলসহ জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ইসির উপসচিব মো. মাহবুব আলম শাহ্ নির্দেশনাটি পাঠিয়েছেন।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, দেশব্যাপী ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদের লক্ষ্যে ভোটারযোগ্য ব্যক্তিদের জন্মসনদ বাধ্যতামূলক। কিন্তু বর্তমানে জন্মসনদ ইস্যুকারী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জন্মসনদ পেতে জনগণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। হালনাগাদের আরেকটি বিষয় মৃত ভোটার কর্তন। মৃত ভোটার কর্তনের ক্ষেত্রে আগে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশদের সহায়তা নেওয়া হতো।
এই অবস্থায় জরুরিভিত্তিতে জন্ম ও মৃত্যুসনদ ইস্যু করার জন্য সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা প্রদান এবং মৃত ভোটার তথ্য গ্রাম পুলিশদের মাধ্যমে সংগ্রহপূর্বক তা ভোটার তথ্য সংগ্রহকারীদের কাছে হস্তান্তর করার নিমিত্ত সংশ্লিষ্ট সব ইউনিয়ন পরিষদকে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
ইসির নির্বাচন সহায়তা শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, ৩ ফেব্রুয়ারি তথ্য সংগ্রহের শেষ দিন। এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে ছবি তোলা, আঙুলে ছাপ ও চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি গ্রহণের কাজ, যা চলবে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত।
জানা গেছে, এই কাজে ৬৫ হাজার লোকবল নিয়োগ দিয়েছে সংস্থাটি। তারা ১ দশমিক ৫২ শতাংশ নাগরিককে ভোটার তালিকায় যুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করবেন।
অন্যদিকে ২০২২ সালে নেওয়া তিন বছরের তথ্যের শেষ ধাপের হালনাগাদ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এতে ১৮ লাখের মতো ভোটার আগামী মার্চে যোগ হতে পারে। সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন। বাড়ি বাড়ি হালনাগাদে ১৯ লাখ নতুন ভোটার তালিকায় যোগ হতে পারে।
২০০৭-২০০৮ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর এর আগে ভোটার তালিকা হালানাগাদ করা হয়েছে ছয়বার। ২০০৯-২০১০ সাল, ২০১২-২০১৩ সাল, ২০১৫-২০১৬ সাল, ২০১৭-২০১৮ সাল, ২০১৯-২০২০ ও ২০২২-২০২৩ সালে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ইসি।
ভোটার তালিকা হালানাগাদে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য যেসব কাগজপত্র তথ্য সংগ্রহকারীদের দিতে হবে:
* ১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্মসনদের কপি
* জাতীয়তা/নাগরিকত্ব সনদের কপি
* নিকটাত্মীয়ের এনআইডির ফটোকপি (পিতা-মাতা, ভাই-বোন প্রভৃতি)
* এসএসসি/দাখিল/সমমান, অষ্টম শ্রেণি পাসের সনদের কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
* ইউটিলিটি বিলের কপি (বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি/চৌকিদারি রশিদের ফটোকপি)
ভোটার হওয়ার সময় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে:
* নিজের নাম, পিতা-মাতার নাম, জন্ম নিবন্ধন বা শিক্ষা সনদের সঙ্গে হুবহু মিলিয়ে লিখতে হবে
* জন্ম তারিখ অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন বা শিক্ষা সনদ অনুযায়ী হতে হবে
* স্থায়ী ঠিকানা লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই ভোটারের প্রকৃত স্থায়ী ঠিকানা লিখতে হবে
* কোনো অবস্থাতেই দ্বৈত বা দুইবার ভোটার হওয়া যাবে না।
এক সতর্কবার্তায় ইসি জানিয়েছে, একাধিকবার ভোটার হওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ একাধিকবার ভোটার হলে আঙুলের ছাপ পরীক্ষার মাধ্যমে তা সহজেই শনাক্ত করা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৫
ইইউডি/এএটি