নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ থাকুক বা না থাকুক, দেশজুড়ে নির্বাচনের আমেজ বইতে শুরু করেছে। পাড়া-মহল্লায়, গ্রামগঞ্জে চলছে ভোট নিয়ে নানা রকম আলোচনা।
যাঁরা দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছেন, নির্বাচনের মাঠে তাঁরা যেমন প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তেমনি যাঁরা নির্বাচন পিছিয়ে আগে সংস্কার ও বিচারের দাবি করছেন তাঁরাও নির্বাচনের মাঠে তৎপর। রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন আসনে ভোটের হিসাব-নিকাশ এবং সম্ভাব্য প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের কাজ করছে। নির্বাচন কমিশন বলেছে, আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচনকে মাথায় রেখে তারা প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাও পরিষ্কারভাবে বলেছেন, ‘যদি রাজনৈতিক দলগুলো কম সংস্কার চায় তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন আর যদি বেশি সংস্কার চায়, তাহলে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।
এদিকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট একটি রোডম্যাপের লক্ষ্যে কাজ করছে বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের সূত্র ধরে বিএনপি সপ্তাহজুড়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে চুলচেরা আলোচনা করেছে। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় নিয়ে বর্তমানে রাজনীতির মাঠে চলছে নানা মেরুকরণ।
দেশের মানুষ ভোট দিতে চায়।
নির্বাচনে তারা তাদের অধিকার প্রয়োগ করতে চায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে ২০০৮ সালের পর এ দেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়। দীর্ঘ সময় সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেনি। একটি প্রজন্ম তৈরি হয়েছে, যারা বিগত তিনটি নির্বাচনে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। ফলে দেশের মানুষ নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য মুখিয়ে আছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এবং গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সদ্য গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, এবার নির্বাচনে এই দুটি রাজনৈতিক দলের মুখোমুখি শক্ত লড়াই হবে। তবে সাধারণ ভোটাররা মনে করছে, এবার ইসলামী দলগুলো ভোটের মাঠে বড় নিয়ামক শক্তি হিসেবে সামনে আসতে পারে। ভোটের মাঠে ‘এক্স ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠতে পারে ইসলামী দলগুলো। নির্বাচনে যারাই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাক না কেন, ইসলামী দলগুলোর সমর্থন লাগবে। ইসলামী দলগুলোর সমর্থন ছাড়া আগামী সরকার গঠন করা কঠিন হতে পারে বলেও মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। ইসলামী দলগুলোর সমর্থন দুইভাবে হতে পারে। প্রথমত, বিএনপি বা এনসিপি আসন ভাগাভাগির মাধ্যমে ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা করতে পারে। দ্বিতীয়ত, নির্বাচনে জয়লাভের পর সরকার গঠনে ইসলামী দলগুলোর সহায়তা লাগতে পারে সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দলের।
৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে ইসলামী দলগুলো একটি বড় শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। দেশের রাজনীতিতে এখন ইসলামী দলগুলো যে বড় ফ্যাক্টর, এ বাস্তবতা অস্বীকারের উপায় নেই। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট বিজয়ী হওয়ার পর ইসলামী দলগুলো নিঃশেষ করে দিতে এক সাঁড়াশি আক্রমণ পরিচালিত হয়েছিল। অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক চেতনার নামে সুপরিকল্পিতভাবে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নেমে আসে সীমাহীন দমন-পীড়ন-নিপীড়ন। শুরু হয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে জামায়াতকে নিঃশেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন। অন্য ইসলামী দলগুলোকেও চাপে রাখার কৌশল নিয়েছিল বিগত স্বৈরাচারী সরকার। কিন্তু এই চাপ ও নিপীড়নের পরও দেশের ইসলামী দলগুলো নিঃশেষ হয়ে যায়নি, বিলীন হয়ে যায়নি। বরং এই চাপ ও নিপীড়ন ইসলামী দলগুলোকে আরো শক্তিশালী করেছে, সুসংগঠিত করেছে।
বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে কয়েকটি ইসলামী দল বেশ প্রভাবশালী। জনগণের মধ্যেও তাদের বড় ধরনের অবস্থান লক্ষ করা যাচ্ছে। এই দলগুলোর মধ্যে অবশ্যই জামায়াতে ইসলামী শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর বাইরে হেফাজতে ইসলাম, এবি পার্টি, খেলাফত মজলিস, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন—এই দলগুলোর নির্দিষ্ট ভোটব্যাংক ও জনসমর্থন আছে। তবে এই দলগুলোর সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো তাদের সুশৃঙ্খল আদর্শিক, নিবেদিতপ্রাণ কর্মী বাহিনী; যারা দলের প্রয়োজনে যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।
নির্বাচনে কিভাবে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেওয়া যায় সে বিষয়ে ইসলামী দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করছে। শেষ পর্যন্ত যদি ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে তা হবে আগামী নির্বাচনের বড় চমক। আবার পাশাপাশি প্রধান দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও এনসিপিও ইসলামী দলগুলোকে তাদের কাছে পেতে চাইছে। দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন নিয়ে ১৯৯১ সালে সরকার গঠন করেছিল বিএনপি। ওই নির্বাচনের আগে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি বিভিন্ন আসনে সমঝোতা করেছিল। আবার ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনেও বিএনপি-জামায়াত জোটবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করেছিল এবং সরকার গঠন করেছিল। ২০০১ সালে যে চারদলীয় জোট গঠিত হয়েছিল, দীর্ঘদিন পর্যন্ত তা অটুট ছিল। ২০১৮ সাল পর্যন্ত জামায়াত ছিল বিএনপির সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক মিত্র। ২০ দলীয় জোটে বিএনপি ও জামায়াতই ছিল মূল শক্তি। তবে ২০১০ সাল থেকে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয় তখন থেকে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির একটা টানাপড়েন শুরু হয়, যদিও তা প্রকাশ্য হয়নি। খালেদা জিয়া যত দিন রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন, তত দিন জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে সম্পর্কের বন্ধন অটুট ছিল।
২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে। ঐক্যফ্রন্টে জামায়াতকে বাদ রাখা হয়। এরপর নির্বাচনের সময় নাটকীয়ভাবে জামায়াতকে বেশ কিছু আসন ছেড়ে দেয় বিএনপি। সে সময় নিবন্ধন হারানো জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। কিন্তু রাতের ভোটের ওই নির্বাচন ছিল প্রহসনের নির্বাচন। গণতন্ত্রের এক কলঙ্কিত অধ্যায়। রাতে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল সাজানো হয়েছিল। এর পর থেকে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির রাজনৈতিক সম্পর্কের দূরত্ব তৈরি হয়। একসময় বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয় যে ২০ দলীয় জোট আর নেই। তার পরও জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে এক ধরনের যোগাযোগ লক্ষ করা গেছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের আগে বিএনপি যে আন্দোলন শুরু করেছিল ওই আন্দোলনের সঙ্গে সমান্তরালভাবে জামায়াতে ইসলামীও আন্দোলন করে। তবে ওই আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি বা জামায়াত কেউই শেষ পর্যন্ত ওই প্রহসনের নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি।
এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরুণরা কোটাবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে জাতীয় জাগরণ সৃষ্টি করেন এবং গণতন্ত্রের বিজয় রচিত হয়। এই আন্দোলনে বিএনপি ও জামায়াত দুই দলই ছিল ছাত্রদের পার্শ্বশক্তি। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপির চেয়ে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ ছিল জামায়াতে ইসলামী। গত মার্চ মাসে প্রকাশিত আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ‘জুলাই মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ গ্রন্থে লিখেছেন, ছাত্রশিবিরের সঙ্গে তাঁরা আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য গভীরভাবে যোগাযোগ রেখেছিলেন এবং ছাত্রশিবির তাঁদের সহায়তা করেছিল।
৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর জামায়াতে ইসলামী বিপুল শক্তি নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। এ সময় দেখা যায়, ১৭ বছর ধরে নানা ধরনের নিপীড়ন-নিষ্পেষণের পরও জামায়াত একটি বড় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। রাজনীতির মাঠে তাদের উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। ৫ আগস্টের পর মৌলিক কিছু বিষয় নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের মতপার্থক্য দেখা যায়। দীর্ঘদিনের দুই মিত্র প্রকাশ্যে একে অন্যের সমালোচনা করে। এই প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি লন্ডনে বিএনপির চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে জামায়াতের আমিরের বৈঠক রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী কোন ভূমিকায় থাকবে তার ওপর অনেকখানি নির্ভর করছে নির্বাচনের গতি-প্রকৃতি।
অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম প্রচলিত ধারার কোনো রাজনৈতিক দল নয়। এটি মূলত মাদরাসাভিত্তিক একটি সংগঠন। হাটহাজারী মাদরাসার প্রয়াত অধ্যক্ষ আল্লামা শাহ আহমদ শফী হেফাজতে ইসলামের গোড়াপত্তন করেছিলেন। ২০১৩ সালে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হেফাজতে ইসলাম প্রথম জাতীয় রাজনীতিতে আলোচনায় আসে। ওই সময় ঢাকামুখী তাদের পদযাত্রা দেশজুড়ে তাদের শক্তির নতুন প্রকাশ ঘটায়।
২০১৩ সালের ১৩ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতের অবস্থানকে নির্মমভাবে দমন করা হয়। তাতে ওই সময় ঠিক কতজন মারা গিয়েছিল তা নিয়ে এখনো রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক আছে। এর মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের যে একটি শক্তিশালী জনভিত্তি রয়েছে তা প্রমাণিত হয়। বিশেষ করে দেশের মাদরাসাগুলো হেফাজতের শক্তির ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিতি পায়। ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার সরকারও হেফাজতের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে নানা রকম উদ্যোগ নিয়েছিল। একটা সময় হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের একটা সম্পর্কও গড়ে ওঠে। কিন্তু হেফাজতের নেতারা কখনো স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগকে মেনে নেননি। তাঁরা বাইরে থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলেও ভেতরে ভেতরে আওয়ামী লীগবিরোধী অবস্থান অটুট রাখেন।
২০২১ সালে যখন আওয়ামী লীগ তাদের মতো করে স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন শুরু করে, সে সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় আসেন। মোদির ওই আগমনের বিরোধিতা করে হেফাজতে ইসলাম দেশজুড়ে নানা ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। ওই সময় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার আবারও হেফাজতের ওপর দমন-পীড়ন শুরু করে। তখন মামুনুল হকসহ হেফাজতের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। ওই সময় রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে হেফাজতে ইসলাম তাদের কার্যক্রম গোপনীয়তার সঙ্গে পরিচালনা করে। কিন্তু তাদের সংগঠন আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে দেশের মাদরাসাগুলোর বড় ভূমিকা ছিল এবং হেফাজতে ইসলাম সেই ভূমিকায় নেতৃত্ব দেয়। এ কারণে ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর হেফাজতে ইসলাম দেশের রাজনীতিতে একটি বড় ফ্যাক্টর হিসেবে দেখা দেয়।
অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এবি পার্টি, খেলাফত ইসলাম ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মতো দলগুলোরও যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। মূলত গত ১৭ বছর রাজনীতিতে ইসলামী দলগুলোকে যেভাবে হেনস্তা ও অপমান করার চেষ্টা করা হয়েছিল, তার প্রতিবাদেই সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের আবেগ কাজ করে। ওই আবেগের কারণে ইসলামী দলগুলো এখন অনেক বেশি জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী।
এ কথা সত্য যে নির্বাচনে এককভাবে কোনো ইসলামী দলেরই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন সম্ভব নয়। সরকার গঠন করাও সম্ভব নয়। এটি ইসলামী দলগুলো জানে। কিন্তু এটাও সত্য যে ইসলামী দলগুলোকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কারো একক প্রভাব বিস্তার করা অসম্ভব। এ কারণে বিএনপি ও এনসিপি দুটি রাজনৈতিক দলই নতুন করে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করছে। দুটি দলই বুঝতে পেরেছে যে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইসলামী দলগুলো হবে বড় ফ্যাক্টর।
এখন প্রশ্ন হলো, আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোর ভূমিকা কী হবে? তারা কোন পক্ষে যাবে? ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা এখন পর্যন্ত তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।
ফলে এখানে তিনটি সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমত, ইসলামী দলগুলো নিজেদের মধ্যে বিভেদ ভুলে ঐক্যের মাধ্যমে নির্বাচনের মাঠে নামতে পারে এবং আগামী নির্বাচনে তারা তৃতীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। এতে নির্বাচনে যারাই জয়ী হোক না কেন ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা করে সরকার গঠন করতে হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, ইসলামী দলগুলো বিএনপি বা এনসিপি—যেকোনো একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে।
তৃতীয়ত, নির্বাচনে প্রতিটি দল এককভাবে অংশগ্রহণ করবে এবং অলিখিত সমঝোতার মাধ্যমে ভোটের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমঝোতা করতে পারে।
তবে যে পদ্ধতিতেই যাওয়া হোক না কেন, ইসলামী দলগুলো আগামী জাতীয় নির্বাচনে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর। আগামী নির্বাচনে যে দলই সরকার গঠন করুক না কেন তাদের ইসলামী দলগুলোর চাওয়া-পাওয়া মাথায় রাখতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৫
এসআই