সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) আমলে নেওয়ার বাধ্যবাকতা চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর পেছনে আটটি কারণ বা জটিলতা যুক্তি হিসেবে খুঁজে পেয়েছে সংস্থাটি।
সোমবার (০২ জুন) নির্বাচন ভবনের আযোজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে যুক্তিগুলো উপস্থাপন করে ইসি।
যুক্তিগুলো হলো:
(১) চাকরি প্রাপ্তির পর বেতন নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রে লিপিবদ্ধ তথ্য (বিশেষ করে জন্ম তারিখ ও নিজ নাম) এর সাথে নিয়োগপত্র/সার্ভিস বহিতে লিপিবদ্ধ তথ্যের তারতম্য হওয়ার কারণে pay Fixation সম্ভব হয় না;
(২) পরবর্তীতে ভুক্তভোগীরা জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের দ্বারস্থ হলে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়;
(৩) সরকারি চাকরির বয়সসীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পরও ভিন্ন ভিন্ন ডকুমেন্টে বয়স কম দেখিয়ে চাকরিতে আবেদনের সুযোগ পেলেও পরবর্তীতে pay Fixation না হওয়ায় ওই সকল ব্যক্তি আর্থিক ক্ষতিসহ মারাত্মক ভোগান্তি ও হয়রানির সম্মুখীন হয়;
(৪) ভোটার তথা পরিচয় নিবন্ধনকালে একটি জন্ম সনদ ব্যবহার করে। পরবর্তীতে ভিন্ন আরেকটি জন্ম সনদ ব্যবহার করে চাকরি লাভ করে। ORG (Office of the Registrar General এর ওয়েবসাইটে জন্ম নিবন্ধন নম্বর দুটিই সক্রিয়;
(৫) কতিপয় ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চাকরিজীবী কর্তৃক চাহিত জন্ম তারিখ সংশোধন করা হলে তার বয়স ভোটার নিবন্ধনকালে ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়সের নিচে চলে আসে, সেক্ষেত্রে ওই ভোটারের ভোটার হওয়ায় অযোগ্যতার প্রশ্ন সামনে চলে আসে, যা এক ধরনের আইনি জটিলতা সৃষ্টি করে;
(৬) চাকরি প্রাপ্তির পর চাহিত জন্ম তারিখ অনুসারে এনআইডি কার্ড সংশোধন করা হলে আবেদনকারীর পিকা/মাতার বয়সের সাথে তার নিজের বয়সের অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে সহোদর ভাই-বোনের বয়সের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় থাকে না;
(৭) ১৬-২০তম গ্রেডভুক্ত (৪র্থ শ্রেণি) চাকরির ক্ষেত্রে ব্যক্তির প্রকৃত শিক্ষাগত যোগ্যতা ও জন্ম তারিখ গোপন করে চাকরিতে যোগদানের ফলে যোগ্য ব্যক্তি চাকরি হতে বঞ্চিত হয়;
(৮) সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি কর্তৃক নিয়োগ বাতিল চেয়ে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বরাবর এবং এনআইডি কার্ডের তথ্য গোপন করার জন্য নির্বাচন কমিশন বরাবর অভিযোগ ও মামলা দায়ের করাসহ নানারকম জটিলতার উদ্ভব হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসনসহ ২৭ মন্ত্রণালয়, বিভাগের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ। সভায় আলোচনার পর চুড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আরও বৈঠকের প্রয়োজন বলে সিদ্ধান্ত হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি চাকরিতে নিয়োগের সময় এনআইডি আমলে নিলে পরবর্তীতে কোনো জটিলতা থাকে না। এ ছাড়া বেতন ফিক্সেশনের জন্য এনআইডি আমলে নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে অর্থ মন্ত্রণালযের। কাজেই শুরুতেই কাজটি সম্পন্ন হলে দুর্নীতির সুযোগ কমে যায়।
ইইউডি/এমজেএফ