ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ ভাদ্র ১৪৩২, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

নির্বাচন ও ইসি

সাংবাদিকবান্ধব নীতিমালার আশ্বাস ইসির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৫৭, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫
সাংবাদিকবান্ধব নীতিমালার আশ্বাস ইসির অনুষ্ঠানে অতিথিরা।

সম্প্রতি জারি করা ‘সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী-২০২৫ নীতিমালায়’ নতুন কিছু না থাকায় গণমাধ্যমকর্মীদের দেওয়া প্রস্তাব পর্যালোচনা করে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নের আশ্বাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)-এর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের মতবিনিময় সভায় এমন আশ্বাস দিয়েছে কমিশন।

সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, আরএফইডির সদস্য সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, আপনারা লিখিত সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছেন। লিখিত দিলে ভালো-মন্দ বোঝা যায়। আপনাদের লিখিত প্রস্তাবনা আমরা দেখবো, পর্যালোচনা করবো। দুপক্ষের জন্যই ভালো হয়, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য, যা কিছু করা যায় আমরা করবো। আপনাদের এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করতে পারি। আপনাদের যাতে কাজ করা সহজ হয়, তথ্যের প্রবাহ অবাধ হয়, সেটা আমরাও চাই।

তিনি বলেন, আপনাদের প্রস্তাবিত নীতিমালা পর্যালোচনা করে আপনাদের জন্য সহজ হয়, যেটা উভয় পক্ষের জন্য, মানুষের জন্য, স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য, ফেয়ার নির্বাচনের জন্য যেটা ভালো হয়, সেটা ইনশাল্লাহ করবো। এ ব্যাপারে আর কোনো কথা নেই।

নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, আপনাদের বক্তব্য থেকে আসছে সাংবাদিক নীতিমালার মধ্যে নতুন কিছু নেই। আপনাদের যেই ‘প্রস্তাবিত নীতিমালা’ এখানে অনেক সুন্দর বিষয় এনেছেন। এটা ঠিক যে নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে পূর্বেকার ট্রাডিশনে যদি এমন হতো যে, কোনো নীতিমালা করতে গেলে আপনাদের প্রতিনিধি থাকার প্রভিশন থাকতো, তাহলে হয়তোবা কমিটি ফরমেশনটাই ওভাবে হওয়া উচিত ছিল। আপনাদের যে প্রস্তাব, এটা নির্বাচন কমিশন ওয়েলকাম করে। যেহেতু আমরা আমাদের সবার উদ্দেশ্য একটাই, যে একটা ভালো নির্বাচনের জন্য সবাই একসঙ্গে কাজ করব। সেই দিক থেকে কিন্তু আমরা ছোট কাজ, ভালো কাজ, মন্দ কাজ যেটাই করি এটা কিন্তু একবার আয়নার মতো তুলে ধরার দায়িত্বটা হলো আপনাদের। আপনারা এই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, সবচেয়ে মুশকিল হয়ে গেল কি, আমি আপনি আপনারা, সবাই মিলে কেউ কিন্তু আস্থার জায়গায় নেই। আমি আস্থার জায়গায় আছি আমি দাবি করি না। এই যে আস্থার সংকট এটা আমাদের জাতীয় সংকট। আমি বিচ্ছিন্নভাবে বলতে পারবো না যে অমুকে খারাপ, আমি ভালো। আর আপনিও বলতে পারবেন না, যে আমি খারাপ আপনি ভালো। বাস্তবতার নিরীক্ষে যার যার অবস্থান থেকে যাতে আমরা একটা ভালো নির্বাচন করতে পারি, সেজন্য পরস্পরকে সহযোগিতা করবো। আমার মনে হয় যে গণমাধ্যম নীতিমালা নিয়ে আরো আলোচনা, পর্যালোচনা, বিশ্লেষণ, আপনাদের অভিজ্ঞতা, আমাদের অভিজ্ঞতা, ফিল্ডের অভিজ্ঞতা সবাই মিলে আরো মনে হয় যে চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। মূল উদ্দেশ্য যেহেতু আমাদের সবার একটাই আমার মনে হয় যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এগুলো পরে সমাধান করা যায়।

ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, আপনাদেরই মতামতের জন্য আমি আন্তরিকভাবে কমিশনের পক্ষ থেকে এবং সচিবালয়ের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এবং এই তথ্য প্রবাহ আমাদের দিক থেকে থাকবে। আমাদের সম্মানিত কমিশনার এটা অলরেডি বলেছেন। কাজেই আমরা এই জিনিসটাকে দ্রুত নিষ্পত্তি ও একটা গ্রহণযোগ্য সম্মানজনক এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার জায়গাটা আবারো পুনঃস্থাপন করব। আপনারা আমাদের যেভাবে কভারেজটা দিচ্ছেন আমি মনে করি এই কভারেজটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আরএফইডির সভাপতি কাজী এমাদ উদ্দীন (জেবেল) বলেন, প্রার্থীরা যেদিন মনোনয়নপত্র জমা দেবেন ওইদিনই হলফনামার তথ্য স্থানীয়/কেন্দ্রেীয়ভাবে গণমাধ্যমকে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচনে প্রার্থী ও রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনী খরচের যেই বিবরণ জমা দেন, সেগুলো গণমাধ্যমের জন্য দ্রুতই উন্মুক্ত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। ভোটের দিন বেসরকারি ফলাফলের চূড়ান্ত বার্তা সিট এবং যতদ্রুত সম্ভব কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল স্থানীয়/ কেন্দ্রীয়ভাবে গণমাধ্যমকে দিতে হবে। প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকার জন্য একজন সহকারী রিটার্নিং অফিসার/উপজেলা নির্বাচন অফিসারের নেতৃত্বে একটি করে মিডিয়া সেল গঠন করা হবে। এ ছাড়া আমাদের প্রস্তাবিত নীতিমালা অনুযায়ী ইসির প্রণীত নীতিমালা সংশোধন করতে হবে। অন্যথায় ইসির সব ধরনের উদ্যোগ ধ্বংস হয়ে যাবে।

আরএফইডির লিখিত প্রস্তাবনা এ সময় তিনি তুলে ধরেন।

গণমাধ্যম নীতিমালা সংশোধনে আরএফইডির প্রস্তাবনা

* কার্ডধারী গণমাধ্যমকর্মীদের ভোটকক্ষে প্রবেশে প্রিজাইডিং অফিসারকে অবহিত করার বিধান বাতিল

* ভোটকক্ষে ১০ মিনিটের বেশি থাকা না যাওয়ার বিধান বাতিল 

* গণমাধ্যমকর্মীদের কাজে বাধা দিলে সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনতে হবে

* গোপন কক্ষে অনিয়ম হলে ছবি তোলার বিধান যুক্ত করা

* মনোনয়ন দাখিল থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত তথ্য উন্মুক্ত রাখার বিধান

ইইউডি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।