রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে ‘খেলোয়াড়দের ফাউল করার নিয়ত থেকে বিরত থাকতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সিইসি বলেন, রাজনৈতিক দল আমাদের মূল স্টেকহোল্ডার। খেলোয়াড়দের ফাউল করার নিয়ত থেকে বিরত থাকতে হবে। ফাউল যাতে না করতে পারে সব ব্যবস্থা নেব৷ যারা নির্বাচনী মাঠে নামবেন, ফাউল করার নিয়তে নামবে না। আমি ধরে নিচ্ছি তারা সুন্দরভাবে সহায়তা করবে।
এর আগে তিনি ভোট সিস্টেম নিয়ে নিজের কিছু অভিজ্ঞতা ও নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন। অভিজ্ঞতার ব্যাপারে সিইসি বলেন, কানাডা গিয়ে দেখলাম তাদের জানা-বোঝার মধ্যে অনেক গ্যাপ আছে। প্রবাসী ভোটের সিস্টেমটা মাত্র শুরু করলাম। ইসির প্রতি যে আস্থা, সেটা আগে রি-স্টোর করা দরকার। যে অনাস্থা আছে, সেটা ফিরিয়ে আনা দরকার। আমরা আমাদের কর্মযজ্ঞের কথা জানিয়েছি। তারা খুবই সন্তুষ্ট।
তিনি আরও বলেন, সিইসি কানাডায় যাওয়ায় তারা খুব উচ্ছ্বসিত। আমার উপস্থিতিতে তাদের হাই লেভেলের কনফিডেন্স দেখিয়েছে। আমরা তাদের বলেছি, শরিক হোন, অংশগ্রহণ করুন। একবারে সবকিছু পারফেকশন হয় না। ধীরে ধীরে হয়। বিভিন্ন পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে একটা সিস্টেম দাঁড় করিয়েছি। আইটি সাপোর্টের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমেই আমরা ভোট নেব।
মিডল ইস্টে ইসি যাচ্ছে না? এমন প্রশ্নের বিষয়ে এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, সৌদি, কাতার, গিয়ে প্রবাসীদের এক করে আলাপ করে পাওয়া যায় না। অ্যাম্বাসিতে তাদের ডেকে এনে কানাডার মতো সচেতনতা সৃষ্টি সহজ নয়। ওয়েস্টার্ন কান্ট্রিগুলোয় আমরা সফলতা অর্জন করবো। কাজটা সহজভাবে রেজিস্ট্রেশন করার বিষয়ে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেব।
তিনি আরও বলেন, পার্টি নিবন্ধন এ মাসেই দেব বলেছিলাম। এখন পত্র-পত্রিকায় নানা অভিযোগ আসছে। তাই আমাদের অতিরিক্ত ইনফরমেশন সংগ্রহ করতে হচ্ছে। তাই দুয়েকদিন দেরি হচ্ছে। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও আপত্তি চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। দলগুলোর নাম ও সংখ্যা বলা যাবে না। কারণ, এটার তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শাপলা প্রতীকের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, শাপলা চেয়েছিল মাহমুদুর রহমান মান্না দল, নাগরিক ঐক্য প্রথম চেয়েছিল। তখন আলোচনা হয়নি, এখন কেন হচ্ছে? ওদের তো দেয়নি৷ তখন তো আলোচনা হয়নি। এনসিপির শাপলা প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করতে বিধিমালা সংশোধনের চিঠি পেয়েছি৷ এখন কমিশনে আলাপ আলোচনা করে খুব শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেব।
বিধিমালা হওয়ার পর তাদের চিঠি যৌক্তিক কতটুকু, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেকোনো নাগরিক চিঠি দিতেই পারে। আর একটা দল, অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া দল, তারা চিঠি দিতেই পারে। নাগরিক ঐক্য নিবন্ধিত দল। তারা কেটলি প্রতীক পরিবর্তন করে শাপলা চেয়েছে। আমার সঙ্গে দেখাও করেছে। আমরা দিইনি। এরপর শাপলা চেয়েছে এনসিপি। কমিশন নানা বিবেচনায় শাপলা কাউকে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চিঠি দেওয়ার মাঝে উনাদের আইনের ব্যত্যয় হতে পারে।
‘শাপলা আদায় কীভাবে করতে হয় তা জানে এনসিপি’, এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সিইসি বলেন, রাজনৈতিক নেতারা অনেক কথা বলেন। বলার অধিকার আছে। আমরা শোনার ধৈর্য আছে। আমরা শুনেই যাবো। আমাদের কাজ আমরা করবো।
নির্বাচন হবে কিনা, অনেকের এমন প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে সিইসি বলেন, আমরা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের জন্য জোরেশোরে প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রধান উপদেষ্টার ঐতিহাসিক নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নের জন্যই কাজ করছি। কারও কথায় নয় বিবেকের তাড়নায় কাজ করতে চাই, সোজা পথে কারও পক্ষে কাজ করতে চাই না।
ইইউডি/এএটি/এমজে