ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

নির্বাচন পর্যবেক্ষক হওয়ার সময় ১৫দিন

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৭
নির্বাচন পর্যবেক্ষক হওয়ার সময় ১৫দিন

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত পর্যবেক্ষকদের মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছর জুনে। তাই নতুন করে নিবন্ধনের সুযোগ দিচ্ছে সংস্থাটি। এক্ষেত্রে সোমবার (২৩ অক্টোবর) থেকেই আগ্রহীরা আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার সময় ১৫দিন।

জানা গেছে, ২০১১ সালের জানুয়ারিতে ১২০টি সংস্থাকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিবন্ধন দিয়েছিলেন এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন নির্বাচন কমিশন। যাদের মেয়াদ পূর্ণ হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে।

এরপর এক বছর মেয়াদ বাড়ানো ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করেন কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের কমিশন। সে মেয়াদ শেষ হলে গত এপ্রিলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ায় কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন। সে মেয়াদ শেষ হওয়ায় বর্তমানে নতুন করে নিবন্ধন নেওয়ার জন্য আবেদন করার সুযোগ দিচ্ছে সংস্থাটি।
 
সূত্রগুলো জানিয়েছে, এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন বিগত কমিশন ২০১১ সালে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য দেশের ১২০টি সংস্থাকে নিবন্ধন দিয়েছিলো। সম্প্রতি অবসরে যাওয়া কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের কমিশনও এই সংখ্যাকে সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। তবে কেএম নুরুল হুদার কমিশন এই সংখ্যাকে কমিয়ে এনে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা আরো কার্যকর করতে চাচ্ছেন।
 
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে এক বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, বর্তমান নির্বাচন কমিশন পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে কিছু পরিবর্তন আনতে ‍চান। একইসঙ্গে ১২০ থেকে অর্ধেকে নামিয়ে আনতে চান পর্যবেক্ষকদের সংখ্যা।
 
ওই বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘নিবন্ধিত পর্যবেক্ষক সংস্থার তালিকায় যাদের নাম আছে, তাদের অস্তিত্ব বাস্তবে আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। ঢালাওভাবে নিবন্ধন না দিয়ে নতুন করে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করা যেতে পারে। পর্যবেক্ষণ নীতিমালা নির্বাচন কমিশন সচিবালয় পরিবর্তন ও পরিমার্জন করে প্রস্তাবসহ কার্যপত্র তৈরি করে কমিশনে উপস্থাপন করতে হবে। ’
 
দেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়ে কোনো নীতিমালা নেই। এ বিষয়ে অবশ্যই নীতিমালা থাকতে হবে এবং তা অনুসরণ করে পর্যবেক্ষণ পাশ প্রদান করা উচিত-এমন মতামতও দেন এই নির্বাচন কমিশনার।
 
এদিকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘পর্যবেক্ষকরা অধিকারকে কাজে লাগিয়ে যেন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না করতে পারে তা নিশ্চিত করা দরকার। এছাড়া তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের প্রতিবেদন তাদের নিজস্ব সংস্থার কাছে জমা দেন। কিন্তু পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনেও যাতে জমা দেন তার ব্যবস্থাও থাকতে হবে। ’
 
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ১২০টি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে, যা অনেক বেশি মনে হয়। এটি কমিয়ে অর্ধেকে আনা উচিত। এছাড়া বৈঠকে তিনি নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলামের মতামতের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
 
নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম বলেন, ‘ইতিপূর্বে নিবন্ধিত ১২০টি সংস্থাকে রাখা যাবে কিনা, বা নতুনভাবে কাউকে নিবন্ধন দেওয়া যাবে কিনা এ বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। অবশ্যই নিরপেক্ষ ব্যক্তি বা সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়া যেতে পারে। নিবন্ধন ব্যক্তি বা সংস্থা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ৯১ (সি) অনুসরণ করছে কিনা এ বিষয়টি মনিটরিং করতে হবে। ’
 
বৈঠকে এসব আলোচনার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা পর্যবেক্ষক নীতিমালা পরিবর্তন পরিমার্জনের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। কার্যত, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই পর্যবেক্ষক সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে বলে জানা গেছে।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির উপ-সচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পর্যবেক্ষক সংখ্যা কমিয়ে অর্ধেকেই আনা হবে। কেননা ১২০টি সংস্থার মধ্যে ৪০ থেকে ৫০টির বেশি সংস্থা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে না। আবার করলেও ইসিতে কোনো প্রতিবেদন জমা দেয় না। এছাড়া অনেকের কোনো কার্যক্রম, অস্তিত্বও নেই।
 
এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসির জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, নীতিমালা পরিমার্জনের ওপর ভিত্তি করেই নিবন্ধন দেওয়া হবে। রোববার (২২ অক্টোবর) আমরা নিবন্ধনের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেবো। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আহ্বান করা হবে। আবার তাদের কার্যক্রমও খতিয়ে দেখা হবে। সবকিছু বিবেচনায় যারা যোগ্য হবে, তাদেরই নিবন্ধন দেওয়া হবে। পর্যবেক্ষক হতে ১৫ দিন আবেদন করার সময় দেওয়া হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৭
ইইউডি/বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।