ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

পরিবর্তন হচ্ছে না জেলাভিত্তিক আসন সংখ্যা 

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৭
পরিবর্তন হচ্ছে না জেলাভিত্তিক আসন সংখ্যা 

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সংসদীয় আসনগুলোর সীমানা পুনর্নির্ধারণ হবে। তবে জেলাভিত্তিক আসন সংখ্যায় কোনো পরিবর্তন আসছে না। কমিটির সুপারিশে উঠে এসেছে এমনটি। ইসির কয়েকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার কণ্ঠেও একই সুর।

সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত উপ-কমিটি এমন নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে। কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে- ‘জেলাভিত্তিক আসন সংখ্যা কমানোর জন্য বিদ্যমান আইনটি (The Delimitation of Constituencies Ordinance 1976) বাতিল করে নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে।

এক্ষেত্রে নতুন আইন চূড়ান্ত করে অনুমোদন পেতে যে সময় লাগবে, এরপর নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ কোনোভাবেই সম্পন্ন করা যাবে না। কেননা, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার অন্তত ছয় মাস আগে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে। তাই নতুন আইনের অপেক্ষায় থাকলে এটা সম্ভব হবে না এবং নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
 
এজন্য কমিটির সর্বসম্মতভাবে সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে জেলাভিত্তিক বরাদ্দ করা আসন অপরিবর্তিত রেখে বিদ্যমান আইনেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ করার সুপারিশ করেছে। এক্ষেত্রে একজন পরামর্শক ও জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেমের ফার্ম নিয়োগের মাধ্যমে এ কাজ সম্পন্ন করার কথাও বলেছে কমিটি।
 
সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটির করা সীমানা নির্ধারণের প্রস্তাবিত নীতিমালায় পাঁচটি নীতির কথা বলেছে। এগুলো হলো-
 
ক) ২০১১ সালে প্রকাশিত আদম শুমারির প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে নির্ধারিত জেলাভিত্তিক মোট আসন অপরিবর্তিত রাখা।
 
খ) সংসদীয় আসন জেলাভিত্তিক বণ্টান এবং এক জেলায় অবস্থিত সংসদীয় আসনের এলাকা অন্য জেলায় সম্প্রসারণ না করা।
 
গ) যেখানে সম্ভব উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনকে অবিভাজিত রাখা।
 
ঘ) ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌর এলাকার ওয়ার্ড একাধিক সংসদীয় আসনে বিভাজন না করা এবং ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিবেচনায় রেখে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করা।
 
এই নীতিমালা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়ন হলে সংসদীয় আসনের সীমানায় যে পরিবর্তন আসবে তাতে ২০০৮ সালের সীমানায় ফিরে যাবে অনেক আসন। কেননা, কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বিগত নির্বাচন কমিশন অনেক ইউনিয়ন পরিষদ বা স্থানীয় সরকারের এলাকাকে একাধিক আসনের মধ্যে বণ্টন করেছে ২০১৩ সালে। ফলে সীমানা নির্ধারণের শর্ত হিসেবে-ভৌগলিক অখণ্ডতাও সে সময় রক্ষা পায়নি।
 
বিদ্যমান আইনে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সীমানা নির্ধারণে প্রয়োজনীয়তার পেছনে সংশ্লিষ্ট কমিটি পাঁচটি কারণ খুঁজে পেয়েছে। এগুলো হলো-
 
ক) ২০১৩ সালে সীমানা নির্ধারণের পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়ের ফলে ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশি ছিটমহল ভারতের কাছে এবং বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতের ছিটমহল বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
 
খ) নতুন প্রশাসনিক ইউনিট সৃষ্টি, প্রশাসনিক ইউনিট সম্প্রসারণ ও প্রশাসনিক ইউনিট সম্প্রসারণের ফলে কোনো কোনো বিদ্যমান ইউনিট সংকোচন।
 
গ) নদী ও সমুদ্র ভাঙনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনিক ইউনিট সমগ্র বা আংশিকভাবে বিলুপ্তি।
 
ঘ) যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং
 
ঙ) প্রশাসনিক ইউনিটের যথাসম্ভব অখণ্ডতা বজায় রাখা এবং নির্বাচনী এলাকার ভোটার সংখ্যা ও জনসংখ্যার যতদূর সম্ভব সমতা বিধান।
 
এদিকে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সংলাপে এসে রাজনৈতিক দলগুলো ভিন্ন মতামত দিয়েছে। এক্ষেত্রে বিএনপি বলেছে ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের আগের সীমানায় ফিরে যেতে। আবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বলেছে, দশম সংসদ নির্বাচনের সীমানাতেই ভোটগ্রহণ করতে।
 
এ বিষয়ে ইসির সংশ্লিষ্ট কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, নতুন আইনে যেহেতু সীমানা নির্ধারণ হচ্ছে না, তাই একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো জেলায় আসন সংখ্যার পরিবর্তনও হচ্ছে না। আর যদি ভৌগোলিক অখণ্ডতা, প্রশাসনিক সুবিধা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জনসংখ্যাকে আমলে নিয়ে বিদ্যমান আইনে সীমানা নির্ধারণ করা হয়, তবে নবম সংসদের সীমানায় অনেক আসনে ভোট হবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৭
ইইউডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।