ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

বিপুল ভোটে লাঙ্গলের জয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৭
বিপুল ভোটে লাঙ্গলের জয় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা। ছবি:বাংলানিউজ

রংপুর থেকে: দিনভর শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে হওয়া রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমানমোস্তফা ।গণনা শেষে সবগুলো কেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফলে লাঙ্গল প্রতীকে মোস্তফা ৯৮ হাজার ৮৯ ভোটের এক বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। এ এক বিপুল, নিরঙ্কুশ বিজয়।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার পর প্রাপ্ত চূড়ান্ত ফলাফলে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৬০ হাজার ৪৮৯ ভোট পেয়ে জয়ী হন জাপার এই প্রার্থী।

 তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু পেয়েছেন ৬২ হাজার ৪০০ ভোট।

আর ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা পেয়েছেন ৩৫ হাজার ১৩৬ ভোট।

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত ফলাফল বেসরকারিভাবে ঘোষণা করেন। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা উপলক্ষে পুলিশ লাইনের পুলিশ হলে স্থাপিত ফলাফল সংগ্রহ  করে পরিবেশনকেন্দ্র থেকে তা ঘোষণা করা হয়।

 বিজয়ের পর নেতাকর্মীদের সান্নিধ্যে রসিক মেয়র।  ছবি: বাংলানিউজজয় পেয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রংপুরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মোস্তফা বলেন, তারা যে প্রত্যাশা নিয়ে আমাকে ভোট দিয়েছেন তা পূরণ করবো। প্রত্যাশা পূরণ করার জন্য সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। আমার অপজিশন (বিরোধী পক্ষ)-সহ সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই, সবার সহযোগিতা চাই।

এই  জয় রংপুরবাসীকে উৎসর্গ করে মোস্তফা বলেন, যতো দিন এরশাদ বেঁচে থাকবেন, জাতীয় পার্টিকে দমানোর মতো দল আছে বলে আমার মনে হয় না।

নিজ দলের প্রার্থীকে জয় এনে দিতে গত কয়েক দিন ধরেই রংপুরে অবস্থান করছেন এরশাদ। প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাও ছিলেন সরব।

সুষ্ঠুভাবে ভোট হলে জয়ে আশা করে সকালেই বক্তব্য দিয়েছিলেন সাবেক মেয়র ঝণ্টু। তবে মাত্র একটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া আর কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।  

বিজয়ের পর পরিবারের সদস্যদের সান্নিধ্যে রসিক মেয়র।  মাঝখানে এলজিইডি প্রতিমন্ত্রী রাঙ্গা।  ছবি: বাংলানিউজআর ফলাফলে তৃতীয় স্থানে থাকা বিএনপির বাবলা কারচুপির অভিযোগ রাত সাড়ে নয়টার দিকে শহরের গ্রান্ড হোটেল মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফল বর্জন করেন। তার অভিযোগ, ষড়যন্ত্র করে তাকে হারানো হয়েছে।

মেয়র পরে সাত প্রার্থীর অন্যদের মধ্যে এটিএম গোলাম মোস্তফা পাখা প্রতীকে ২৪ হাজার ৬ ভোট, এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার হাতি প্রতীকে ২ হাজার ৩১৯ ভোট, আব্দুল কুদ্দুস মই প্রতীকে ১ হাজার ২৬২ ভোট এবং মো. সেলিম আখতার আম প্রতীকে পেয়েছেন ৮১১ ভোট।

সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজে ইভিএম পদ্ধতিতে ২ হাজার ৫৯ ভোটের মধ্যে মোস্তফা পেয়েছেন ৬৭৪ ভোট, ঝন্টু ৩৩৪ এবং বাবলা ১১৭ ভোট পেয়েছেন। ইভিএমে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন কর্মকর্তারা।

ফল ঘোষণার সময় নির্বাচনী কর্মকর্তারা উত্তীর্ণ এবং অনুত্তীর্ণ প্রর্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি যথাযথভাবে মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।  

বৃহস্পতিবার  সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। দিনভর বেশ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেন সিটি করপোরেশন এলাকার ভোটাররা। এবারই প্রথম রসিক নির্বাচনে একটি কেন্দ্রে ইলেক্টনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হয়েছে।

নির্বাচনে এবার মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত প্রার্থী। তাদের সঙ্গে ৩৩ ওয়ার্ডে লড়ছেন ২৭৬ কাউন্সিলর।

সিটি করপোরেশন এলাকার ১৯৩ কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৮৯৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৯৬ হাজার ২৫৬ জন। আর নারী ভোটার রয়েছেন এক লাখ ৯৭ হাজার ৬৩৮ জন।  এরমধ্যে ২ লাখ ৯২ হাজার ৭২৩টি ভোট কাস্ট হয়েছে, যা শতকরা হিসেবে ৭৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।

রংপুর পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করার পর এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচন হয়েছে। তবে দলীয় প্রতীকে ভোটগ্রহণ হচ্ছে এই প্রথম। এর আগে, ২০১২ সালের ২৮ জুন রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৭/আপডেট ০২১১ ঘণ্টা

এমআইএইচ/আইএ/এমএ/এসএইচ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।