ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

নির্বাচনী পরিস্থিতি 'ভয়াবহ', অভিযোগ ঐক্যফ্রন্টের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮
নির্বাচনী পরিস্থিতি 'ভয়াবহ', অভিযোগ ঐক্যফ্রন্টের সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের উপর ক্ষমতাসীন দলের ব্যাপক তাণ্ডবে নির্বাচনী পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’ বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বুধবার (২৬ ডিসেম্বর)  সন্ধ্যায়  সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনী প্রচারণার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু এ অভিযোগ করেন।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘আজও আমার নির্বাচনী এলাকায় (ঢাকা-৭) প্রচারণার সময় কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সারাদেশে এরকম অবস্থা।

ধানের শীষের প্রার্থী ফজলুর রহমান আমাকে জানিয়েছেন, পুলিশ বলে দিয়েছে আপনারা এলাকা থেকে বেরিয়ে যান। না হলে পরিণতি ভালো হবে না। এই যদি অবস্থা হয় তাহলে আপনারা বোঝেন কি অবস্থা? আসলে পরিস্থিতি এতো ভয়াবহ যে ভাষায় বোঝাতে পারবো না। মিডিয়ার ভাইরা আপনারা সহকর্মীদের মাধ্যমে সব কিছু জানতে পারছেন। আমরা বলে বোঝাতে পারবো না কী অবস্থায় আমরা আছি। ’

এই পর্যায়ে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে হামলা-মামলা তো আছেই, পুরো বাংলাদেশকে একটা কারাগারে পরিণত করেছে সরকার। এই কারাগারের মধ্যে সব বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী। গত কয়েক সপ্তাহে আমার নির্বাচনী এলাকা ঢাকা-৬ আসন থেকে তিনশ’ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিলো না। নতুন নতুন মামলা দিয়ে তাদের জামিনও বন্ধ করে রেখেছে। ’

তিনি বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত আমাদের কর্মীরা মাঠে নামতে পারেনি। যখনই নামে ধরে নিয়ে যায়। ঢাকাসহ সারাদেশের অবস্থা দেখে আমাদের মনে হচ্ছে একটা রক্তক্ষয়ী নির্বাচনের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। সরকার ও নির্বাচন কমিশন কেনো এই অবস্থা সৃষ্টি করলো আমাদের কাছে আজকে বড় প্রশ্ন। ’

সেনা মোতায়েন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জনগণ আশা করেছিলো সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরে পরিবেশ উন্নত হবে, বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরা মাঠে নামবে এবং তারা প্রচার-প্রচারণা করতে পারবেন। সেটাও আমরা দেখছি যে, আমাদের সেই আশা হতাশায় পরিণত করেছে। সেনাবাহিনীর প্রতি আমাদের আবেদন এখন পর্যন্ত যেসব ঘটনা ঘটেছে ভবিষ্যতে যেন না ঘটে আপনারা একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। জনগণের আস্থা আপনাদের সঙ্গে আছে এবং সেই আস্থায় আপনারা আগামী কয়েকদিন মাঠে থেকে কার্য্করী ব্যবস্থা নেবেন। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। দেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য অপেক্ষায় আছে। ’

সুব্রত দাবি করেন, দেশের ৯০ ভাগ ভোটার আজ ধানের শীষে ভোট দেওয়ার জন্য উতলা হয়ে আছে। ৩০ তারিখ যদি তারা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে বাংলাদেশে একটা নিরব ভোট বিপ্লব হয়ে যাবে।  

তিনি বলেন, আমি সরকারকে বলবো, মাথা ঠাণ্ডা রেখে ভবিষ্যত বাংলাদেশ যাতে তার স্বাধীনতা, গণতন্ত্র রক্ষা হয় সেজন্য কাজ করবেন। শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য জনগণকে আর প্রতারিত করবেন না।

পুরানা পল্টনে জামান টাওয়ারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এ সংবাদ সম্মেলনে সারাদেশে ধানের শীষের প্রার্থীদের ওপর ক্ষমতাসীন দল ও পুলিশি হামলা, মামলা, নির্বাচনী প্রচারের বাঁধা প্রদানসহ সহিংস ঘটনার চিত্র তুলে ধরেন ফ্রন্টের সমন্বয়ক কমিটির প্রধান গণফোরাম নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক।

সংবাদ সম্মেলনে বিকল্পধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী, শাহ আহমেদ বাদল, বিএনপির সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অর্পনা রায়, গণফোরামের মোশতাক আহমেদ, রফিকুল ইসলাম পথিক, গণদলের গোলাম মওলা চৌধুরী, মানবাধিকার সংস্থার অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহজাহান, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নুরুল হুদা মিলু চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৮
টিএম/আরআর   

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।