ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

সিলেটে আওয়ামী লীগের জয়রথ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৮
সিলেটে আওয়ামী লীগের জয়রথ ...

সিলেট: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচলিত মিথ ‘সিলেট-১ আসন যার, সরকার তার’। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচলিত এই মিথ আবারো সত্য প্রমাণিত হলো নৌকা প্রতীকে ড. এ কে আব্দুল মোমেনের বিজয়ের মধ্য দিয়ে। এ আসনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের এ প্রার্থী।

সেই সঙ্গে সিলেটের আরো চারটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। আর নৌকা ও ধানের শীষ বিহীন সিলেট-২ আসনে ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত উদীয়মান সূর্য প্রতীকে গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান বিজয়ী হয়েছেন।

রোববার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক এম. কাজি এমদাদুল ইসলাম।

ঘোষিত ফলাফলে সিলেট-১ আসনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন মহাজোট মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ড. মোমেন ২১৫টি কেন্দ্রে পেয়েছেন ২ লাখ ৯৮ হাজার ৬৯৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষে ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত বিএনপির খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির পেয়েছেন ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৫১ ভোট।

এ আসনে অন্যপ্রার্থীদের মধ্যে খেলাফত মজলিসের মাওলানা নাসির উদ্দিন (বটগাছ) ২২০, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) ইউসুফ আলী (আম) ১৫৫, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির উজ্জল রায় (কোদাল) ৪১৬, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ’র প্রথব জ্যোতি পাল (মই) ১৮৭, জাতীয় পার্টির মাহবুবুর রহমান (লাঙ্গল) ৫০২, ইসলামী ঐক্যজোট-আইওজে (মিনার)১৫৯, বাংলাদেশ মুসলীম লীগের মো. আনোয়ার উদ্দিন বুরহানাবাদী (হারিকেন) ২৯৯ এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (হাতপাখা) প্রতীকে ২০২৪ ভোট পেয়েছেন।

এ আসনে ৫ লাখ ৪৪ হাজার ২১৯ ভোটের মধ্যে প্রদত্ত ভোট ৪ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬১। এরমধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ৪ লাখ ২৬ হাজার ৫০৯ আর বাতিল হয় ৭ হাজার ৪৫২ ভোট।   

সিলেট-২ আসনে ১২৭টি কেন্দ্রে বেসরকারিভাবে গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। উদীয়মান সূর্য প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৪২০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান ‘ডাব’ প্রতীকে পেয়েছেন ৩০ হাজার ৪৪৯ ভোট।

এছাড়া আওয়ামী লীগ ঘরানার অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী সিংহ প্রতীকে ২০ হাজার ৭৪৫ ভোট এবং লাঙল প্রতীকে মহাজোট প্রার্থী ইয়াহহিয়া চৌধুরী ১৮ হাজার ৩২ ভোট পেয়েছেন। অপর প্রার্থীদের মধ্যে খেলাফত মজলিসের মুহাম্মদ মুনতাছির আলী (দেওয়াল ঘড়ি) ৫ হাজার ১৭১, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুর রব (কার) ১ হাজার ১৭০, ইসলামী আন্দোলনের মো. আমির উদ্দিন (হাতপাখা) ১ হাজার ৭৪০, এনপিপির মো. মনোয়ার হোসাইন (আম) ১ হাজার ১৫৬ এবং মো. মোশাহিদ খান (টেলিভিশন) প্রতীকে ৩০৫ ভোট পেয়েছেন।

এ আসনে ২ লাখ ৮৬ হাজার ৫৮৬ ভোটের মধ্যে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮৭৩। এরমধ্যে বাতিল হয় ১ হাজার ৬৮৫টি এবং বৈধ ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৪৮ হাজার ১৮৮।

সিলেট-৩ আসনে ১৪৮ কেন্দ্রের সব কটির ফলাফলে মহাজোট প্রার্থী মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ৭৬ হাজার ৫৮৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরী পেয়েছেন ৮৩ হাজার ২৮৮ ভোট।

এ আসনে অন্যপ্রার্থীদের মধ্যে লাঙল প্রতীকে উছমান আলী পেয়েছেন ২ হাজার ৯১৬ ভোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এম এ মতিন বাদশা (হাতপাখা) ৬৯৮, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আব্দুল ওদুদ (আপেল) ২২৮, খেলাফত মজলিসের মো. দিলওয়ার হোসাইন (দেওয়াল ঘড়ি) ২ হাজার ৯৮৬ এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের হাফিজ মাওলানা আতিকুর রহমান (রিক্সা) প্রতীকে ২৯২ ভোট পেয়েছেন।  

এ আসনে মোট ৩ লাখ ২৩ হাজার ৬৫৬ জন ভোটারের মধ্যে ভোট কাস্ট হয় ২ লাখ ৭০ হাজার ৩৫২ টি। এর মধ্যে বাতিল হয় ৩ হাজার ৩৫৭ টি এবং বৈধ ভোটের সংখ্যা ২ লাখ ৬৬ হাজার ৯৯৫।

সিলেট-৪ আসনে ১৫৩টি কেন্দ্রের ফলাফলে আওয়ামী লীগের ইমরান আহমদ চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ২ লাখ ২৩ হাজার ৬৭২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্র্রতীকে দিলদার হোসেন সেলিম পেয়েছেন ৯৩ হাজার ৪৪৮ ভোট। ১ লাখ ৩০ হাজার ২২৪ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন ইমরান।  

অন্য প্রার্থীদের মধ্যে জাতীয় পার্টির আহমেদ তাজ উদ্দিন তাজ রহমান লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৪২৩ ভোট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মনোজ কুমার সেন (কোদাল) ১৮০ ভোট এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জিল্লুর রহমান (হাতপাখা) ২ হাজার ৩৭০ ভোট পেয়েছেন।  
এ আসনে মোট ৩ লাখ ৮২ হাজার ২৩০ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয় ৩ লাখ ২৪ হাজার ৫৭৩ ভোট। এরমধ্যে বাতিল হয় ৪ হাজার ৪৮০ এবং বৈধ হয় ৩ লাখ ২০ হাজার ৯৩ টি।

সিলেট-৫ আসনে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাফিজ আহমদ মজুমদার। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৩৫ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের উবায়দুল্রাহ ফারুক (ধানের শীষ) পেয়েছেন ৮৬ হাজার ১৫১ ভোট।  

অন্য প্রার্থীদের মধ্যে ইসলামী ঐক্যজোট-আইওজে (মিনার) ২৮২, স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়জুল মুনীর (সিংহ) ৭১৮, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নুরুল আমিন (হাতপাখা) ৮৭৩, গণফোরামের বাহার উদ্দিন আল রাজি (উদীয়মান সূর্য) ২১৩, বাংলাদেশ মুসলীম লীগের মো. শহিদ আহমদ চৌধুরী (হারিকেন) ৮৩, জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিন (লাঙ্গল) ৮ হাজার ২৪২ ভোট পেয়েছেন।

এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৪ হাজার ৫০৮। এরমধ্যে কাস্ট হয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার ৭৫০ ভোট। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ৪ হাজার ৪৫৩ ভোট বাতিল হয় এবং বৈধ হয় ২ লাখ ৩৬ হাজার ২৯৭টি।  

সিলেট-৬ আসনে বেসরকারিভাবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। ১৯১টি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৯৬ হাজার ১৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত বিএনপির প্রার্থী ধানের শীষে ফয়সল আহমদ চৌধুরী পেয়েছেন ১ লাখ ৮ হাজার ৮৯ ভোট।

অপর প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আজমল হোসেন হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৪২ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়া (কার) ৮৪১ ও শমসের এম চৌধুরী (কুলা) প্রতীকে ৮১ ভোট পেয়েছেন।

এ আসনে মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ১১৫ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয়েছে ৩ লাখ ৯ হাজার ৫৫৫ জন, বাতিল হয় ৩ হাজার ৪৮৭ ভোট এবং বৈধ হয় ৩ লাখ ৬ হাজার ৬৮ ভোট।

রিটানিং কর্মকর্তা এম. কাজি এমদাদুল হক নির্বাচনী পরিবেশকে সুষ্ঠু, সুন্দর রাখতে সকলের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশ সময়: ০২০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৮
এনইউ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।