ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

সিলেটে ৯ উপজেলায় আ’লীগে একাধিক বিদ্রোহী, দলছুট বিএনপি

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯
সিলেটে ৯ উপজেলায় আ’লীগে একাধিক বিদ্রোহী, দলছুট বিএনপি

সিলেট: দলে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার খেসারত আগেও দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। গত উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে ৮টিতেই ধরাশায়ী হয় ক্ষমতাসীন দলটি। এবারও সিলেটের ১২টি উপজেলার ৯টিতেই চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। ফলে এবারের নির্বাচনেও পরাজয়ের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা করছেন দলের অনেক নেতাকর্মী।
 

আর সেই ‘সুযোগ’ বাগিয়ে নিতে হাই কমাণ্ডের নির্দেশ উপেক্ষা করে দলছুট হয়ে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির অনেক নেতা।
 
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাবো।

কথা না শুনলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা কেউ বিএনপির পদধারী না। তাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

প্রাপ্ত তথ্যে, স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জেলার ৫টি উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি নেতারা। কয়েকটি উপজেলায় বিএনপির একাধিক নেতাও প্রার্থী হয়েছেন।
 
সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও আঞ্চলিক নির্বাচনী কর্মকর্তার কার্যালয়ে তারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
 
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সন্দ্বিপন সিংহ ও জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা খোরশেদ আলম ১২ উপজেলায় তিন পদে ২০২ জনের মনোনয়নপত্র দাখিলের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৯০ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
 
সিলেট সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে ৭টি। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে আছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আশফাক আহমদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী নুরে আলম সিরাজী এবং বিএনপি থেকে শাহজামাল নুরুল হুদা ও মাজহারুল ইসলাম ডালিম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
 
বিশ্বনাথে চেয়ারম্যান পদে ৬টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী জেলা শাখার উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এস এম নুনু মিয়া। স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা বিএনপির সহ সভাপতি মোহাম্মদ সুহেল আহমদ চৌধুরী ও দলের উপজেলা সভাপতি জালাল উদ্দিন।

দক্ষিণ সুরমায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবু জাহিদের সঙ্গে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ময়নুল ইসলাম।
 
ফেঞ্চুগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে ৮টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাংবাদিক শাহ মুজিবুর রহমান জকনের সঙ্গে বিদ্রোহী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা নূরুল ইসলাম। বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ওহিদুজ্জামান ছুফি, প্রবাসী হারুনুর রশীদ চৌধুরী।
 
বালাগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে ৪টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। বিদ্রোহী না থাকলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান মফুরের সঙ্গে বিএনপির আবদাল মিয়া ও জাতীয় পার্টির আব্দুর রহিম মনোনয়নপত্র জমা দেন।

জৈন্তাপুরে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী লিয়াকত আলীর সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন দলের আরেক নেতা কামাল আহমদ।

গোয়াইনঘাটে চেয়ারম্যান পদে ৮ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া হেলালের সঙ্গে টেক্কা দিতে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা গোলাপ মিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ। বিএনপি থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন সিলেট জেলা বিএনপির সহ সভাপতি লুৎফুল হক খোকন ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম স্বপন।

কোম্পানীগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে ১০টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এখানে আওয়ামী লীগের উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল বাছির, সাধারণ সম্পাদক আফতাব আলী কালা মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াকুব আলী, ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম আহমদ, তার স্ত্রী জরিনা বেগম, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শামসুল হক, হাফিজ মাসুম।
 
জকিগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী দলের উপজেলা সভাপতি লোকমান উদ্দিন চৌধুরী, মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আরো ৩ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তবে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মর্তুজা আহমদ চৌধুরী।

কানাইঘাটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিলেট মহানগর কৃষকলীগের সভাপতি আব্দুল মোমিন চৌধুরী। বিদ্রোহী জেলা আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক মোস্তাক আহমদ পলাশ ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা আবুল খায়ের চৌধুরীসহ ৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
 
গোলাপগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে ৫টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এখানে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইকবাল আহমদ। বিদ্রোহী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল ওয়াহাব। এ উপজেলায় জেলা বিএনপির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মাওলানা রশিদ আহমদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

বিয়ানীবাজার উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৬টি মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়েছে। তর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান খান। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আবুল কাশেম পল্লব ও কার্যকরী কমিটির সদস্য যুক্তরাজ্য প্রবাসী শামীম আহমদ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯
এনইউ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।