ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

নিজস্ব কর্মকর্তাদের সব দায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা ইসির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৪ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৯
নিজস্ব কর্মকর্তাদের সব দায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা ইসির প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা/ফাইল ছবি

ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, এবারের উপজেলা নির্বাচনে আমরা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বেশি করে নিজস্ব কর্মকর্তাদের নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছি। এ দায়িত্ব সঠিক ও দৃঢ়তার সঙ্গে পালন করলে সামনে আমরা সব নির্বাচনের দায়িত্ব আপনাদের হাতে তুলে দেবো।

আগারগাঁওয়ের নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) ভবনে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে সোমবার (০৪ মার্চ) প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি এমন কথা বলেন।

সংসদ নির্বাচনসহ প্রায় সব নির্বাচনেই প্রশাসনের কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করে নির্বাচন শেষ করে কমিশন।

সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন মহলের দীর্ঘদিনের দাবি, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের হাতে দায়িত্ব দেওয়ার বিকল্প নেই। তবে নিজস্ব কর্মকর্তার ঘাটতিসহ নানা কারণ দেখিয়ে আগের সব নির্বাচন কমিশন প্রশাসনের বাইরে সম্পূর্ণভাবে চিন্তা করতে চাইনি। কে এম নূরুল হুদার কমিশনই প্রথম এমন পরিকল্পনা করছে।

সিইসি বলেন, 'নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য করতে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদেরই নির্বাচনের সামগ্রিক দায়িত্ব নিতে হবে। নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেজন্য ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের দৃঢ়তা, নিষ্ঠা, সাহসিকতার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। আজকের এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যারা উপস্থিত রয়েছেন তাদের বেশির ভাগের উপর তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব বর্তেছে। আপনারা এ দায়িত্ব সঠিক পালন করলে, প্রভাবমুক্ত নির্বাচন উপহার দিতে পারলে ভবিষ্যতে সব নির্বাচনের সামগ্রিক দায়িত্ব আপনাদের হাতেই ন্যস্ত হবে। '

কেএম নূরুল হুদা বলেন, আমরা যে রকম সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, অনেক ক্ষেত্রেই আমরা সেরকম নির্বাচন করতে পারিনি। ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের সঙ্গে নির্বাচনের আগে আমি ব্যক্তিগতভাবে আলাপ করেছি- নির্বাচনে কোনো থ্রেড আছে কিনা, নির্বাচন অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা কি- এসব প্রশ্নে অনেকেই আমাকে থ্রেড আছে কি নেই- তা স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। কেবল প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তবে সত্য হচ্ছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেরকম নির্বাচন হয়নি, যেরকম সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা চেয়েছি।

তিনি বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারা কেবল নির্বাচনের সময় কয়েক দিনের জন্য ইসির আওতাভুক্ত হয়। নির্বাচন শেষে তারা স্ব-স্ব দায়িত্বে ফিরে যান। এর ফলে নির্বাচন নিয়ে ইসির কোনো বোঝাপড়া করতে চাইলে প্রায়শই তা সঠিকভাবে করা সম্ভব হয় না। এমন অবস্থায় ইসির নিজস্ব কর্মকর্তারা নির্বাচনের সামগ্রিক দায়িত্বে থাকলে দায়বদ্ধতা অনেক বাড়বে। নির্বাচনও অনেক ভালো হবে। এ কারণে, এবারের উপজেলা নির্বাচনে আমরা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বেশি করে নিজস্ব কর্মকর্তাদের নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছি। এ দায়িত্ব সঠিক ও দৃঢ়তার সঙ্গে পালন করলে সামনে আমরা সব নির্বাচনের দায়িত্ব আপনাদের হাতে তুলে দেবে। আর এর উল্টোটা হলে, নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে আমাদের প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপরই নির্ভর করতে হবে। এরকম হলে দেখা যাবে, আপনারা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পেছন পেছন ফাইলপত্র বগলদাবা করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ফলে নিজেদের স্বার্থেই আপনাদের যোগ্যতা, দৃঢ়তা, সততা, সাহসিকতার সঙ্গে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করতে হবে। সবাই এখনও প্রস্তুত হতে পারেননি। উপজেলা নির্বাচনে পাওয়া সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেদের প্রস্তুত করে নিন। দল, ব্যক্তি, প্রভাবশালীদের থ্রেট উপেক্ষা করে নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করুন।

সিইসি বলেন, আমারা চাই না নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হোক। তাই কেউ দায়িত্ব পালনে কোনো ত্রুটি করবেন না। নির্বাচনের মাঠে, দায়িত্ব পালনে আইনের কঠোর প্রয়োগ যেন হয়।

ইটিআইয়ের মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৯
ইইউডি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।