নির্বাচন ভবনে খাগড়াছড়ির বাঘাইছড়ির ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিকেলে এসব কথা বলেন তিনি।
কেএম নূরুল হুদা বলেন, রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে ফলাফলসহ ফেরার পথে পাহাড়ের উপর থেকে দুষ্কৃতিকারীদের অতর্কিত গুলিবর্ষণে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ সাতজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
সিইসি বলেন, কমিশন আহতদের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। জীবনের মূল্য আর্থিক ক্ষতিপূরণে হয় না। কমিশনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারের জন্য সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হবে এবং আহতদের অবস্থা অনুযায়ী আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। কমিশন সব সময় তাদের পাশে থাকবে। পার্বত্য এলাকায় ভোটের সময় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। ভোটের সময় দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় যাতায়াত ব্যবস্থাও ভালো থাকে না। সারাদেশে উপজেলা ভোটে পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পার্বত্য এলাকায় স্বাভাবিক অবস্থা থাকলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেওয়া হয়। যাতায়াত ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পার্বত্য এলাকায় ভোটে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনী মোতায়েন করা হয়। হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হচ্ছে। কমিশন সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর রাখছে। ঘটনার দিন বিমানবাহিনী এবং সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে। সামরিক ও বিমানবাহিনীর সবাইকে এজন্য ধন্যবাদ জানাই।
তিনি জানান, ঘটনার সময়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সশস্ত্রভাবে দায়িত্বে ছিল। এগুলো চোরাগোপ্তা হামলা, এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক হিসেবের মধ্যে থাকে না। সতর্কতামূলক ব্যবস্থার জন্য সেনাবহিনী মোতায়েন করা হয়। সারাদিন ভোটে কোনো বিশঙ্খলা করতে পারেনি। সার্বক্ষণিক টহলের কারণে তারা নির্বাচন ব্যাহত করতে পারেনি। রাতের অন্ধকারে পাহাড়ি অঞ্চলে কোথায় কোনো ঘটনা ঘটলে তা নির্ণয় করা সম্ভব হয় না। আর ঘটনার সময় বিজিবি ছিল, পেছনের গাড়িতে সশস্ত্র পুলিশ ছিল। সেখানে তারা আক্রমন করে। বিজিবির গাড়ি চলন্ত অবস্থায় ছিল, ফলে একটু দূরে ছিল। পাহাড়ি অঞ্চলের সরু রাস্তায় ঘুরে আসাও সম্ভব নয়। তারপরেও এগুলো অতর্কিত হামলা। পরিকল্পিত এসব হামলা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। ফলে এই সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নিয়ে কাউন্টার হামলা করা সম্ভব না। তবে পরে সামগ্রিক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি ছিল না।
তিনি আরও বলেন, পাহাড়ে কোথায় কি হবে তা হিসাব করা যায় না। বিজিবিই নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট ছিল। সবসময়ই নির্বাচনের সময় গণতান্ত্রিক পন্থায় ভোট বর্জন করতেই পারে। কিন্তু বর্জনের পর এমন অবস্থা সৃষ্টি হবে, তা ধারণা করা যায় না। তবে এই দায় কার সেটি বলা যায় না। ইতোপূর্বে কোন্দলের কারণে অনেক খুনাখুনি হয়েছে, অনেকের জীবন গেছে। একটা সময় দিনেদুপুরে মানুষ হত্যা করা হতো। এটি তেমনই একটি অঞ্চল।
ইসি সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ এ সময় বলেন, পাহাড়ে কয়েকটি গ্রুপ আছে। তারা সবাই এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। সংস্কার বাহিনীসহ তিনটি গ্রুপ খুব একটিভ আছে। চার দশক ধরেই সেখানে আঞ্চলিক বিভাজন রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৯
ইইউডি/আরআর