ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

ইসির ফাঁদে কোরেশীর ‘বাঘ’

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
ইসির ফাঁদে কোরেশীর ‘বাঘ’

ঢাকা: সঠিক তথ্য সরবরাহ না করায় রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইনের ফাঁদে পড়েছে ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশীর দল প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি-পিডিপি। দলটির প্রতীক ‘বাঘ’। এক-এগারো সরকারের সময় যা পরিচিত ছিল ‘কিংস পার্টি’ নামে।

২০০৭-২০০৮ সালে ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ বাস্তবায়নের জন্য ‘কিংস পার্টি’ নামের দলটিই দেশব্যাপী আলোচিত হয়েছিল।

২০০৮ সালের ১৩ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনে ২৬ নম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পায় প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি।

পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলোতেও অংশগ্রহণ করে। তবে কোনো নির্বাচনেই তেমন সুবিধা করতে পারেনি।

২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পর দলগুলোকে কেন্দ্রীয় কমিটিসহ কেন্দ্রীয় দফতর ও সব দফতরের তথ্য চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সে অনুযায়ী সময়মতো তথ্য দিতে ব্যর্থ হয় পিডিপি। এরপর দফায় দফায় সময় বাড়ানো হলে যে তথ্য দেয় দলটি, তাও কোনো ভিত্তি খুঁজে পায়নি নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। তাই দলটির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

ইসির নির্বাচন সহায়তা শাখার উপ-সচিব মো. আব্দুল হালিম খান সংস্থাটির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে যে পত্র পিডিপি সভাপতি/মহাসচিবকে পাঠিয়েছেন, তাতে বলা হয়েছে-ইসিতে দাখিলকৃত তথ্য অসম্পূর্ণ বিধায় পূর্ণাঙ্গ তথ্য জমা দেওয়ার জন্য ১০ দিন সময় দিয়ে ২০১৯ সালের ২০ আগস্ট চিঠি দেওয়া হয়। ২৯ আগস্ট আরও দুই মাস সময় চেয়ে আবেদন করে পিডিপি। সে আবেদন আমলে নিয়ে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ও বাড়ায় কমিশন।

প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি ২৯ অক্টোবর পূর্ণাঙ্গ তথ্য জমা দেয়। কিন্তু জমা দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় কমিটিসহ কেন্দ্রীয় দফতর এবং জেলা ও উপজেলা দফতরের অস্তিত্ব ও কার্যকারিতা যাচাই করে দেখা যায় যে, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা-২০০৮ এর বিধি ৯ অনুযায়ী এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ এর ৯০বি(১)(৩) এর শর্তানুযায়ী কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সক্রিয় কেন্দ্রীয় দফতর এবং জেলা ও উপজেলা দফতরের কার্যকারিতা ও অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা-২০০৮ এর বিধি ৯ অনুযায়ী এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ এর ৯০বি(১)(৩) এর শর্ত প্রতিপালনে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি নামীয় রাজনৈতিক দলটি ব্যর্থ হওয়ায় রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা বিধি-১০ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এই অবস্থায় নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে ওই চিঠিতে দলটির সভাপতি/মহাসচিবকে শুনানি দিতে ইচ্ছুক কিনা তা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে জানানোর জন্য বলা হয়েছে।

ইসিতে জমা দেওয়া দলটির তথ্যে সভাপতি হিসেবে দেখানো হয়েছে ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশীকে। আর মহাসচিব প্রিন্সিপাল এম এ হোসেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা ৮/৪এ, তোপখান রোড, সেগুনবাগিচা, ঢাকা-১০০০।

গণপ্রনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পাওয়ার অন্যতম শর্ত হলো- দলটির সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকতে হবে, তিনের এক ভাগ জেলায় এবং ন্যূনতম ১০০টি উপজেলা, থানা বা মেট্রোপলিটনে কার্যালয় থাকতে হবে। প্রতিটি অফিসে ২০০ ভোটার সদস্য থাকতে হবে।

এসব দাখিল করে কোনো দল নিবন্ধন পেলে কমিটি সময় সময় পরিবর্তিত তথ্য চাইলে তা দলগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে জমা দিতে হয়। তা না দিলে কিংবা অসত্য তথ্য দিলেও নিবন্ধন বাতিলের ক্ষমতা রাখে নির্বাচন কমিশন। পিডিপি’র ক্ষেত্রে এই ক্ষমতাই প্রয়োগ করছে সংস্থাটি।

বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪১টি। পিডিপি বাতিল হলে সে সংখ্যা ৪০-এ নেমে আসবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।