নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন বাহিনী বৃহস্পতিবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল থেকেই ভোটের দায়িত্বে নিজ নিজ সদস্যদের নির্দিষ্ট জায়গায় মোতায়েন করেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র থেকে জানাগেছে, কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য ভোটকেন্দ্রে সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ১৮ জন করে বিভিন্ন বাহিনীর ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
সাধারণ কেন্দ্রে একজন এসআই অথবা এএসআই’র নেতৃত্বে চারজন পুলিশ সদস্য, অস্ত্রসহ আনসার দু'জন ও ১০ জন অঙ্গীভূত আনসার মোতায়েন থাকছে। আর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে পুলিশের সংখ্যা দুইজন বেশি রয়েছে।
দুই সিটিতে দুই হাজার ৪৬৮ কেন্দ্রের মধ্যে এক হাজার ৫৯৭টি কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ। আর সাধারণ কেন্দ্র রয়েছে ৮৭১টি। এই হিসেবে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়োজিত থাকবে আনসার ও পুলিশের ৪২ হাজার ৬৮২ জন সদস্য।
আর ভোটের এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য ৭৫ প্লাটুন বিজিবির দুই হাজার ২৫০ জন জোয়ান নিয়োজিত রয়েছে।
এছাড়া পুলিশ ও এপিবিএন সমন্বয়ে ১২৪টি ভ্রাম্যমাণ ও ৪৩টি স্ট্রাইটিং টিম, র্যাবের ১২৯ টিম নিয়োজিত রয়েছে। অর্থাৎ র্যাব, পুলিশ, এপিবিএন স্ট্রাইকিং ও ভ্রাম্যমাণ টিম মিলিয়ে প্রায় চার হাজারের মতো ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। সব মিলিয়ে এ নির্বাচনে ৫০ হাজারের মতো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন বলে ইসি কর্মকর্তারা বলছেন।
এছাড়াও প্রয়োজনে মাঠ প্রশাসন তাৎক্ষণিক যেখানে যেমন দরকার, সে অনুযায়ী যেকোনো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োজিত করার নির্দেশনা দিয়ে রেখেছেন নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনী আচরণ বিধি প্রতিপালন ও অপরাধের বিচার কাজের জন্য দুই সিটিতে ১২৯ জন নির্বাহী হাকিম ও ৬৪ জন বিচারিক হাকিম নিয়োগ করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটেতে ৫৪ জন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৭৫ জন নির্বাহী হাকিম আগামী ৩০ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকবেন।
এছাড়া উত্তর সিটিতে ২৭ জন ও দক্ষিণে ৩৭ জন বিচারিক হাকিম দায়িত্ব পালন করবেন ৩০ জানুয়ারি থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত।
এবারের নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পেছনে নির্বাচনী ব্যয় বরাদ্দ রেখেছে ২০ কোটি টাকা। আর নির্বাচন পরিচালনা ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ কোটি টাকা।
নির্বাচন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে হচ্ছে। যেখানে নিয়োজিত থাকবেন সশস্ত্র বাহিনীর ৫ হাজারের বেশি নিরস্ত্র সদস্য। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। এছাড়া ভোটার এলাকায় যে ধরনের মহড়া, বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকবিলা, ভোটারদের নির্বিঘ্নে যাতায়াত নিশ্চিত করবে ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স।
অন্যদিকে নিরস্ত্র সেনারা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন।
ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, পুলিশ ও আনসার ছাড়া অন্য কোনো বাহিনীর সদস্যরা কেন্দ্রে অবস্থান করবে না। তারা কেবল ভোটের এলাকাতে অবস্থান করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দায়িত্ব পালন করবে।
২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিলের বিভক্ত ঢাকার প্রথম নির্বাচনে ৫০ হাজারের বেশি ফোর্স নিয়োজিত করা হয়েছিল। সে সময় ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট ও ডেমরায় তিন ব্যাটেলিয়ন সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। তারা ভোটের মাঠে বিচরণ না করলেও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) ঢাকার দুই সিটিতে ভোটগ্রহণ করবে ইসি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২০
ইইউডি/জেডএস