তিনি বলেছেন, ঢাকায় তিন কারণে ভোটাররা ভোট দিতে যাননি। প্রথমত তিনদিনের টানা ছুটি, দ্বিতীয়ত ইভিএম নিয়ে বিএনপির নেতিবাচক প্রচারণা এবং তারা নির্বাচনকে তাদের আন্দোলনের অংশ হিসেবে নেওয়া।
রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচনোত্তর এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, এবারের নির্বাচন ঢাকার ইতিহাসে সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও একটি ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও এবং কোন কেন্দ্রে গোলযোগ ও বড় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
‘বাংলাদেশের ইতিহাসে ও ঢাকার প্রেক্ষাপটে গতকাল (শনিবার) শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা প্রতিবেশী দেশ ভারতের কলকাতার সিটি নির্বাচন ও পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন এবং উপমহাদেশের নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং ঢাকার ইতোমধ্যে অনুষ্ঠিত নির্বাচন বিবেচনা করলে গতকালের নির্বচান একটি ভালো নির্বাচন ছিল। ’
তিনি বলেন, গতকাল (শনিবার) কোনো ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, বড় গোলযোগ কোথায়ও হয়নি, ছোটখাটো ঘটনা ঘটেছে, কোনো লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এটি আমাদের দেশে অতীতে যেসব নির্বাচন হয়েছে সেসব নির্বাচনের তুলনায় অনেক শান্তিপূর্ণ ছিল। একই সঙ্গে উৎসবমুখর প্রচারণা ছিল।
‘সে বিবিচনায় এ নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ, সফল ও উৎসবমুখর এবং ভালো নির্বাচন হয়েছে। এজন্য ঢাকার সব ভোটার, জনগণ নির্বাচন কমিশনকে এবং সংশ্লিষ্টদের আমি অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই। ’
ভোটার উপস্থিতি কম প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, আমি হিসাব করে দেখেছি, মোটামুটিভাবে ২৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। তবে ভোটার উপস্থিতি আরো বেশি হতো। কম হওয়ার পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে।
‘প্রথমত- টানা তিনদিনের ছুটি ছিল, সে কারণে ঢাকার অনেক ভোটার গ্রামে চলে গেছেন। দ্বিতীয়ত- বিএনপি শুরু থেকেই ইভিএম নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়েছে। এতে মানুষের মধ্যে ইভিএম নিয়ে সংশয় তৈরি করেছে। ফলে ৭৫ শতাংশ ভোটার কম উপস্থিত হয়েছে। কারণ তারা এটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তৃতীয়ত- তারা (বিএনপি) প্রথম থেকে বলে আসছে, এই নির্বাচনকে আন্দোলনের মাধ্যম হিসেবে নিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে নির্বাচনের দুই দিন আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন আমরা একটি সফলতা পেয়েছি। নির্বাচনের কারণে আমরা ঘর থেকে বের হতে পারছি। ফলে জনগণের মধ্যে এই ধারণা জন্মেছে যে, তারা জয় লাভের জন্য নির্বাচন করছে না। নির্বাচনটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হচ্ছে না সেটা বিএনপি খোলাসা করেছে। তারা জয় লাভের লক্ষ্যে নয়, আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছে। সে কারণে অনেক ভোটার ভোট দিতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে। এসব কারণেই ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। ’
যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ টেনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে যারা ভোট দেওয়ার জন্য যোগ্য তার ৯৯.৮ শতাংশ লোক ভোটার হয়। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যারা ভোট দেওয়ার জন্য যোগ্য তাদের মধ্যে মাত্র ৬০ শতাংশ ভোটার হয়। আর সেই ৬০ শতাংশের মধ্যে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ ভোট পড়ে।
‘সে হিসেবে আমাদের এখানে ভোটারের উপস্থিতি ভোটদানের যোগ্য ভোটারের তুলনায় গতকাল যে নির্বচান হয়েছে সেখানে উপস্থিতি ভালো। ছিল,’ যোগ করেন আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২০/আপডেট: ১৩৪৬ ঘণ্টা
জিসিজি/এমএ/