সোমবার (২ মার্চ) ভোটার দিবসের র্যালিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি নূরুল হুদা বলেন, ভোটার কেন্দ্রে উপস্থিত না থাকার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের ও ভোটারদের আস্থা ফেরাতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘ইসির ওপরে মানুষের আস্থা নেই বা আছে, এটা নির্ধারিত করে বলার কোনো সুযোগ নেই। ভোটার ভোট দিতে যাবেন, ইসি ভোটের ব্যবস্থাপনা করবেন। ব্যবস্থাপনার দিক থেকে যা যা করণীয়, আমরা সব করেছি, করে থাকি বা থাকবো। রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগ, এগুলো করে থাকি। ’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশনে এত বড় একটা নির্বাচন হয়ে গেল, শান্তি-শৃঙ্খলা একেবারেই নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই ছিল। এত বড় জায়গায় সামান্য একটু ধাক্কাধাক্কি ছাড়া সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছিল। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি আমরা। ’
কে এম নূরুল হুদা বলেন, ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো ইসির কাজ নয়। সুষ্ঠু ভোটের আয়োজন করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। কেন্দ্রে ভোটার আসা কিংবা না আসা পুরোটা নির্ভর করে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর। তবে ভোটাররা যেনো সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিতে পারে সেটার নিশ্চয়তা ও ভোটারদের নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে সজাগ করার জন্য ভোটার দিবস।
প্রতিবেশ দূষণ কমানোর জন্য নির্বাচনের প্রচার নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল বলেন, ‘পরীক্ষামূলকভাবে আমরা শুরু করেছি। ২১টি জায়গায় পোস্টার লাগানোর জন্য জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছি। আমরা বলেছি যে, পাড়ায় পাড়ায় মাইক ব্যবহার করা যাবে না। আমরা বলেছি যে, পথসভাও সংকোচিত করতে হবে। এতে কাজ হলে বিধি পরিবর্তন করে এটা প্রয়োগ করবো। ’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশনের আগের নির্বাচনে দেখেছি যে, পোস্টারে সয়লাভ হয়ে যায়। অন্যান্য জায়গায়ও একই অবস্থা। মাইক ব্যবহার করায় শব্দ দূষণ হয়। এগুলো আমরা প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা আমাদের সমর্থন দিয়েছেন। এটা ইতিবাচক বিষয়। তারা নির্ধিদ্বায় সম্মত হয়েছেন যে, যেভাবে মাইকিং ও পোস্টারিং হলো বিশেষ করে গত সিটি নির্বাচনে, এটা কাম্য নয়। ’
এর আগে সকাল ৯টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে ভোটার দিবস উদযাপন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। পরে সংসদ ভবনের সামনে একটি র্যালি বের করা হয় যা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এতে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, কবিতা খানম, নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীরসহ ইসির সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, এবারের প্রতিপাদ্য ‘ভোটার হয়ে ভোট দেব, দেশ গড়ায় অংশ নেব’। ভোটার হওয়াটাই সবচেয়ে বড় কথা নয়। আর ভোটাররা তো সব দেশ গড়ায় অংশ নেন না। যারা দেশ গড়ায় অংশ নিতে পারেন, এরকম যোগ্য লোককে ভোটাররা ভোট দেবেন, এটাই আশা করা যায়।
নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ভোটার হয়েছেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিন। দেশটা গড়ে তোলার জন্য অংশগ্রহণ করুন।
নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, ভোটার হয়ে ভোট দেব, দেশ গড়ায় অংশ নেব-এই প্রতিপাদ্যের মধ্যে একটা স্পিরিট আছে, ফোর্স আছে। নিজের অধিকারকে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে হয়। অন্য কেউ এসে আপনার অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করে দেবে না। শুধু এটুকু বললেই হবে না যে, আমি ভোট দিতে গিয়ে দিতে পারিনি, এটা আপনার (ভোটার) ব্যর্থতা। ভোটার হবেন, ভোট কেন্দ্রে যাবেন এবং নিজের অধিকার স্বাধীনভাবে প্রতিষ্ঠা করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।
নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, স্কুল, কলেজের ছাত্র-ছাত্রী যারা এখনও ভোটার হয়নি ভবিষ্যতে ভোটার হবে, যারা এ বছর নতুন ভোটার হয়েছেন এবং যারা ইতোমধ্যে ভোটার আছেন, তাদের সবার প্রতি আমাদের আবেদন রইল ভোটার হয়ে ভোট দেবেন, দেশ গড়ায় অংশ নেবেন।
প্রথমবার ভোটার দিবস পালিত হয় ২০১৯ সালের ১ মার্চ। এখন থেকে প্রতিবছর ২ মার্চ দিবসটি উদযাপন হবে। গতবারের মতো এবারও দেশব্যাপী নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২০
ইইউডি/আরআইএস/