বুধবার (০১ জুলিাই) বিকেলে নির্বাচন কমিশন সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল সাংবাদিক এ কথা বলেন।
০১ জুলাই পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে খসড়া আইনটির ওপর মতামত জানানোর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানিয়েছিল নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, করোনা মহামারির এই সময়ে সমস্ত মানুষ যখন জীবন-জীবিকা রক্ষায় নিবদ্ধ, তখন কমিশনের এ উদ্যোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কেননা, খসড়া আইনে বলা হয়েছে- পরপর দুই বছর নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে নিবন্ধন বাতিল হবে। বিএনপি একবার নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তাই বিএনপিকে রাজনীতির মাঠ থেকে দূরে রাখার একটা কৌশল এটা।
তিনি বলেন, খসড়া আইনে বেশকিছু অসঙ্গতি রয়েছে। আমরা এগুলো ইসি সচিব মো. আলমগীরের কাছে তুলে ধরেছি। একইসঙ্গে যেহেতু আইন প্রণয়নের এটি সময় নয়, তাই কার্যক্রমটি স্থগিত রাখার দাবি তুলেছি। সচিব জানিয়েছেন, কমিশনের কাছে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরে আলোচনা করবেন। তারপর যে সিদ্ধান্ত আসে, তা আমাদের জানিয়ে দেবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা মতামত দিইনি। যেহেতু আমরা প্রক্রিয়াটিই স্থগিতের দাবি জানিয়েছি। তাই কমিশনের পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলের বৈঠকে আলোচনা করে আমাদের করণীয় ঠিক করব।
এ সময় দলটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ ও মোশারফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাতে ইসি সচিবকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের লিখিত দাবি হস্তান্তর করেন মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
এর আগে বুধবার বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন ভবনে যায়। চার সদস্য বিশিষ্ট ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের আগে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন কমিশন দল নিবন্ধনের জন্য বিধানযুক্ত করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে। এতে নিবন্ধন পেতে তিনটি প্রধান শর্ত জুড়ে দিয়ে যে কোনো একটি পূরণ করতে বলা হয়। বর্তমান কেএম নূরুল হুদার কমিশন সেই তিনটি শর্তের মধ্যে অন্তত দুটি পূরণ করার জন্য বিধান রেখে নতুন আইন প্রণয়নে হাত দিয়েছে।
এছাড়া ২০২০ সালের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে সব পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারীপদ পূরণের যে বিধান ছিল, তা তুলে দিয়ে তা নারীপদ পূরণের বিষয়টি দলের মর্জির ওপর ছেড়ে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে বলা হচ্ছে- দল তার গণঠতন্ত্রে উল্লেখ করবে, কতদিনের মধ্যে সকল পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারীপদ পূরণ করবে এবং প্রতিবছর সেই সিদ্ধান্তের অগ্রগতি সম্পর্কে ইসিকে অবহিত করবে।
এছাড়াও দল নিবন্ধনের জন্য একগুচ্ছ শর্ত রাখা হচ্ছে প্রস্তাবিত নতুন আইনে। নির্বাচন কমিশন আইনের খসড়াটি নিবন্ধিত দলগুলোর কাছে মতামত দেওয়ার জন্য পাঠায়। এছাড়া আগামী ৭ জুলাইয়ের মধ্যে নাগরিক সমাজকে মতামত দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে ৪১টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে। নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে অবশ্যই ইসিতে দল হিসেবে নিবন্ধন নিতে হয়। এজন্য প্রতি সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন নেওয়ার জন্য আবেদনের আহ্বান জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে কমিশন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২০
ইইউডি/টিএ