‘নির্বাচনী তদন্ত কমিটি’ গঠনের পর একটি পরিপত্র জারি করে এমন নির্দেশনা দিয়েছে ভোট আয়োজনকারী আধাবিচারিক সংস্থাটি।
ইসির আইন শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আবু ইব্রাহিম স্বাসই করা এক পরিপত্রে বলা হয়েছে-কোনো প্রার্থীকে অন্য কোনো প্রার্থী বা ব্যক্তি ভয়ভীতি প্রদর্শন করলে, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে, বল প্রয়োগ প্রয়োগ করলে অথবা মিথ্য বিবৃতি প্রচার করলে তা তদন্ত করে ইসির অনুমোদন সাপেক্ষে শাস্তি নিশ্চিত করবে নির্বাচনী তদন্ত কমিটি।
ইতোমধ্যে বগুড়ার যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং সহকারী জজ মো. শাহরিয়ার শামসকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে বগুড়া-১ আসনের উপ-নির্বাচনের 'নির্বাচনী তদন্ত কমিটি'।
আর যশোর-৬ আসনের নির্বাচনের জন্য যশোরের যুগ্ম জেলা জজ (ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল) নুর নবী এবং সহকারী জজ রেজাউল করিম বাঁধনকে নিয়ে নির্বাচনী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই কমিটি প্রতি ঘটনার তদন্ত করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিয়ে আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে অনুরোধ করবে। কমিশন সে মোতাবেক সিদ্ধান্ত দেবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা দলকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিপালন করতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারবে কমিটি। আর নির্দেশনা অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও দলকে সর্বনিন্ম ২০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে।
নির্বাচনী তদন্ত কমিটির যেকোনো কার্যক্রম দণ্ডিবিধির ১৯৩ ও ২২৮ ধারার বিধান অনুযায়ী, বিচার বিভাগীয় কার্যক্রম হিসেবে গণ্য হবে। আর দেওয়ানী কার্যবিধির অধীনে মামলা পরিচলনার ক্ষেত্রে দেওয়ানী আদালতের যেকোনো ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ ও শপথপূর্বক তাকে পরীক্ষাকরণ এবং দলিল দস্তাবেজ উপস্থাপনের নির্দেশও দিতে পারবে তদন্ত কমিটি।
এছাড়াও তদন্ত পরিচালনার ক্ষেত্রে কমিটি যেকোনো ব্যক্তিকে তার সম্মুখে উপস্থিত থেকে এবং শপথ করে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য নির্দেশ করতে পারবে।
তদন্ত কমিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ পর্যন্ত সময়ে যেকোনো অপরাধ আমলে নেবে।
আগামী ১৪ জুলাই আসন দু’টির উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করবে ইসি। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
বগুড়া-১ আসনঃ
মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর আসনটির উপ-নির্বাচনের বৈধ ছয় প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ করেছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। প্রার্থীরা হলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মান্নানের সহধর্মিণী সাহাদারা মান্নান (নৌকা), বিএনপির একেএম আহসানুল তৈয়ব জাকির (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির মোকছেদুল আলম (লাঙ্গল), প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) মো. রনি (বাঘ), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নজরুল ইসলাম (বটগাছ) ও স্বতন্ত্র ইয়াসির রহমতুল্লাহ ইন্তাজ (ট্রাক)।
এ নির্বাচনে মোট ৩ লাখ ৩০ হাজার ৮৯৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।
গত ১৮ জানুয়ারি সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান মারা গেলে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। এরপর শূন্য আসনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
যশোর-৬ আসনঃ
এ আসনে বৈধ তিন প্রার্থী প্রতীক পেয়েছিলেন। তারা হলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহীন চাকলাদার (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ (ধানের শীষ) ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব (লাঙল)।
এ আসনে ২ লাখ ৩ হাজার ১৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইসমাত আরা সাদেক জয়ী হন। চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি তিনি মারা যান। এর শুন্য আসনে নির্বাচনের তফসিল দেয় ইসি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২০
ইইউডি/আরএ