ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

রাজশাহীতে বিএনপি প্রার্থীর ভোট বর্জন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২১
রাজশাহীতে বিএনপি প্রার্থীর ভোট বর্জন

রাজশাহী: চতুর্থ ধাপে রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহীর চারটি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে দুইটি পৌরসভায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ দুইটি পৌরসভায় স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা।

তবে নওহাটা পৌর এলাকায় ভোটকেন্দ্র দখল এবং ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আর তাহেরপুর পৌরসভায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভোট বর্জন করেছেন বিএনপির পৌর মেয়র প্রার্থী।

রোববার রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌরসভা, তানোর পৌরসভা, নওহাটা পৌরসভা এবং তাহেরপুর পৌরসভায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু গোদাগাড়ীতে ভোট হয়েছে ইভিএমে। বাকি তিনটিতে ব্যালটে।

নওহাটা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন তিনজন। এছাড়া গোদাগাড়ীতে চারজন, তানোরে তিনজন এবং তাহেরপুরে দুইজন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সকাল থেকেই চার পৌরসভার প্রতিটিতেই ভোটকেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সকালে নারীদের উপস্থিতি বেশি থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষ ভোটারের উপস্থিতি বাড়তে থাকে।

তাহেরপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আবুল কালাম আজাদ কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের হাতে হাতে ফুল তুলে দিয়েছেন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে তিনি এ ফুল দেন। তাহেরপুরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই ভোট গ্রহণ হয়েছে।

তবে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা আগে সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকার অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছেন তাহেরপুর পৌরসভার বিএনপির মেয়র প্রার্থী আবু নঈম শামসুর রহমান ওরফে মিন্টু। এর আগে তিনি দলবল নিয়ে ভোট দিয়েছেন এবং কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

এরপর বিকেল পৌনে তিনটায় নির্বাচন পরিচালনার প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মিন্টু ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।  

তিনি বলেন, পৌরসভার সব কেন্দ্র থেকে তার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সাতটি কেন্দ্র দখল করা ছাড়াও নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে সিল মারা হয়েছে। নৌকায় সিল মারতে ভোটারদের বাধ্য করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন মিন্টু।

তবে তিনি নির্দিষ্ট করে কোনো তথ্য দিতে পারেননি। নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় তিনি ভোট বর্জন করলেন বলে জানিয়েছেন।

তবে তাহেরপুরের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি বা অন্য প্রার্থীর পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বাক্কার মৃধা বলেন, নিজের ভরাডুবি নিশ্চিত জেনেই শেষ সময়ে ভোট বর্জন করলেন বিএনপি প্রার্থী মিন্টু।

এদিকে রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভায় বেশিরভাগ ভোটকেন্দ্র দখলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বেলা ১১টার দিকে বাগধানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল করতে যান ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় অন্য প্রার্থীর সমর্থক এবং স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া করেন। এ সময় ইটের আঘাতে আহত হন বাংলাভিশনের রাজশাহীর ক্যামেরাপারসন জসিম উদ্দিন। এছাড়া দু’পক্ষের আরও বেশ কয়েকজন আহত হন। বাধ্য হয়ে ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে আধাঘণ্টা পর ভোটগ্রহণ শুরু হয়।

এ কেন্দ্র থেকে অন্তত ১১ জনকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে। দুপুরের পর নওহাটা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার সেজে জাল ভোট দিতে যান ছাত্রলীগের কর্মীরা। ওই কেন্দ্র থেকে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে তিনজনকে আটক করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা।

নওহাটার আরেকটি কেন্দ্রে ভোট শেষ হওয়ার আগেই স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল বারী খানের এজেন্টের স্বাক্ষর নিয়ে নেন প্রিজাইডিং অফিসার। এ সময় তাকে হাতে-নাতে আটক করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

রাজশাহী জেলা সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, চারটি পৌরসভার মধ্যে তিনটিতে সুন্দর পরিবেশে ভোটগ্রহণ হয়েছে। সেখানে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে নওহাটা পৌরসভায় বিচ্ছিন্ন দু’একটি ঘটনা ঘটেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। ফলে ভোটাররা তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২১
এসএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।