রাজশাহী: আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়াই পড়েছিলেন রোষানলে। কয়েকটি মামলায় গিয়েছিলেন জেলেও।
তিনি চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। সোমবার (১০ জানুয়ারি) রাজশাহীর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তার জামিন আবেদন মঞ্জুর হয়।
জামিনের কাগজপত্র কারাগারে আসার পর তা যাচাই-বাছাই শেষে এইদিন সন্ধ্যার পর নূর মোহাম্মদসহ আরও চারজনকে মুক্তি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। এরপর মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) এলাকায় বের হলে সবাই তাকে ফুলের মালা গলায় পরিয়ে উষ্ণ অভিবাদন জানান। এ সময় তিনি এলাকার উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করে দেবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এর আগে, ২৬ ডিসেম্বর তিনি উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মোটরসাইকেল প্রতীকে ৮ হাজার ১৬৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। বিজয়ী তুফানের পক্ষে শুধুমাত্র তার স্ত্রী রোজিনা আকতারি পলি প্রচারণা চালিয়েছেন।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক নির্বাচিত চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ তুফান বাউসা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে, এবার তাকে মনোনয়ন না দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিককে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। এটি মেনে নিতে পারেননি সাবেক চেয়ারম্যান তুফান। তাই বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন।
অভিযোগ আছে, বিদ্রোহী হিসেবেও প্রার্থিতা তুলে না নেওয়ায় গত ৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা তুফানের টলটলিপাড়ার বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় তার বাড়িতে। এলাকাবাসী ডাকাত সন্দেহে আওয়ামী লীগ নেতাদের ধরে গণপিটুনি দেয়। পরদিন ৫ ডিসেম্বর সকালে তুফান মামলা করতে বাঘা থানায় গেলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে পাঠানো হয় রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে।
আদালত কয়েক দফা তার জামিন নামঞ্জুর করেন। ভোটের আগে তুফানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় প্রতিনিয়ত বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রচারণার জন্য মাইকিং নিয়ে বের হলেই ভাঙচুর করা হয়। তবে, স্বামীর পক্ষে স্ত্রী রোজিনা একাই প্রচারণা চালিয়েছেন গ্রাম মহল্লা ঘুরে ঘুরে। শেষ পর্যন্ত এলাকার মানুষ বিপুল ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন তুফানকে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২২
এসএস/এএটি