ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

জেলা পরিষদ নির্বাচন: মন্ত্রণালয়ের চিঠির অপেক্ষায় ইসি

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
জেলা পরিষদ নির্বাচন: মন্ত্রণালয়ের চিঠির অপেক্ষায় ইসি

ঢাকা: সম্প্রতি জেলা পরিষদ আইন সংশোধন করেছে সরকার। সংশোধিত আইন অনুযায়ী, নির্বাচিত পরিষদগুলো বিলুপ্ত করে সেখানে প্রশাসকও বসানো হচ্ছে।

এবার নির্বাচনের পালা। এ জন্য মন্ত্রণালয়ের চিঠির অপেক্ষায় রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, জেলা পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার একেবারে শেষ দিকে এসে সরকার আইন পরিবর্তনে সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে নির্বাচনী কোনো কার্যক্রম হাতে নেয়নি ইসি। কেননা, নতুন আইনে কী ধরনের পরিবর্তন আসছে তার ওপর নির্ভর করে নির্বাচনী কার্যক্রম। এছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকেও এখন পর্যন্ত নির্বাচনের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

ইতোমধ্যে নতুন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করে বিভিন্ন নির্বাচনের বিষয়গুলোও দেখছে। শিগগিরিই স্থানীয় সরকারের কিছু নির্বাচনের তফসিল দেওয়া হবে। জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়েও কমিশন যদি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে, তবে সে উদ্যোগও নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

স্থানীয় এই সরকারের আইনটি সংশোধনের পর ১৭ এপ্রিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ তানভীর আজম ছিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রশাসক বসানোর কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, দেশের ৬১টি জেলা পরিষদের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ায় নির্বাচিত পরিষদগুলো বিলুপ্ত করা হলো।

এ অবস্থায় জেলা পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের আগে প্রত্যেক জেলা পরিষদের প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা পরিচালনার জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অর্পণ করা হলো। জেলা পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি যোগ করে জেলা পরিষদ আইনের সংশোধনী গত ৬ এপ্রিল সংসদে পাস হয়। এরপর সংশোধনীর গেজেট প্রকাশ হয় ১৩ এপ্রিল।

২০০০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নতুন করে জেলা পরিষদ আইন প্রণয়ন করে। এরপর জোট সরকারের আমলে এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে জেলা পরিষদ পরিচালনা করে। এরপর প্রথমবারের মতো স্থানীয় এই সরকারে নির্বাচন হয় ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর। সে সময় ৬১টি জেলায় (তিন পার্বত্য জেলা বাদে) নির্বাচন হয়েছিল। এরমধ্যে ১৯টি জেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।

জেলা পরিষদ নির্বাচন আইন অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট জেলার অধীনে যতগুলো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোর সদস্যরাই জেলা পরিষদ সদস্যদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন। অর্থাৎ সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেয়র এবং কাউন্সিলররা বা সদস্যরা ভোট দিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও পাঁচজন সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত করতেন। কিন্তু সংশোধিত আইনে জেলা পরিষদের সদস্য সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলার উপজেলার সংখ্যার সমান। আর নারী সদস্য সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলার উপজেলা চেয়ারম্যানদের মোট সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। অর্থাৎ একেক জেলা পরিষদের সদস্যের সংখ্যা হবে একেক রকম, সংশোধনের আগে যেটা ২১ জন নিদির্ষ্ট করে দেওয়া ছিল।

আগে জেলা পরিষদের মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত পূর্বের পরিষদকেই দায়িত্ব পালন করার কথা বলা ছিল আইনে। কিন্তু সংশোধনীতে সেটির পরিবর্তে প্রশাসক বসানোর বিধান আনা হয়েছে। সেই ক্ষমতা বলেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রশাসক বসানোর আদেশ জারি করেছে।

এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে আমরা এখনো নির্বাচন নিয়ে কোনো চিঠি পাইনি। তারা নির্বাচন করার জন্য চিঠি না দিলে তো নির্বাচন আমরা করতে পারি না। কাজেই তারা বললে আমরা পরবর্তী উদ্যোগ নেবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
ইইউডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।