কুমিল্লা: সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১৫ জুন। এবারের নির্বাচনে ছয়জন মেয়র প্রার্থী তাদের মনোনয়ন দাখিল করেছেন।
এবার আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত। রিফাতের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। তিনি ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে জিএস পদে নির্বাচন করেন। কুমিল্লা ক্লাবের দুইবারের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি ও জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। তিনি কুমিল্লা জেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ছিলেন। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েও পাননি। এবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতা এর আগে কোনো ধরনের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এবারই প্রথম মাঠের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন তিনি।
আরফানুল হক রিফাত জানান, আমি খেলার মাঠ থেকে রাজনীতিতে এসেছি। এবারের আওয়ামী লীগ অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। এ নির্বাচনে আমরাই জিতব।
এবারের প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনে সবচেয়ে অভিজ্ঞ কুমিল্লা সিটির গত দুইবারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর। তিনি ২০১৩ সালে ও ২০১৮ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন। প্রথমবার তিনি দল থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্রের ব্যানারে নির্বাচন করেন। পরেরবার বিএনপি থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। এবার তিনি স্বতন্ত্রের ব্যানারে নির্বাচন করছেন। ২০০৫ সালের একটি উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভোটের রাজনীতিতে প্রবেশ করেন সাক্কু। সেবার তিনি বিজয়ী হন। এক-এগারোর সময় তাকে পৌর চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন সাক্কু। সুপ্রিম তাকে পদ ফিরিয়ে দেন। এরপর ২০০৯ সাল থেকে ২০১১সাল পর্যন্ত আদর্শ সদর পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মনিরুল হক সাক্কু বলেন, কুমিল্লার জনগণ আমাকে ভালোবাসেন। তারা বারবার আমাকে নির্বাচিত করেছেন। এবারও তারা আমাকে বেছে নেবেন।
সাক্কু বলেন, আমি দোষে-গুণেই মানুষ। সব কাজ শেষ করতে পারিনি, তবে চেষ্টা করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুমিল্লা সিটির জন্য এবার বড় বরাদ্দ দিয়েছেন। কামিয়াবি (বিজয়ী) হলে অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করবো। নগরীর চেহারাও বদলে যাবে।
২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কুমিল্লা-৬ আসনে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আফজল খানের ছেলে কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মাসুদ পারভেজ খান ইমরান। ওই নির্বাচনে পরাজিত হন তিনি। স্বতন্ত্রের ব্যানারে এটি তার দ্বিতীয় নির্বাচন।
মাসুদ পারভেজ খান ইমরান বলেন, আমি কোনো দলের বিরুদ্ধে নির্বাচন করছি না। আমি ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্বাচন করছি। আমার সঙ্গে জনগণের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। নগরীর মানুষের চাওয়ার কারণেই আমি নির্বাচন করছি। কুমিল্লার মানুষ সবাই জানে মেয়র সাক্কু ও আওয়ামী লীগ নেতার ৬০-৪০ ভাগাভাগির কথা। তাছাড়া সাক্কু-রিফাত একই। কুমিল্লাবাসী হতাশ। আমি দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছি। পরিবর্তনের আশা নিয়েই এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি।
১৯৯৮ সালে ছাত্রসংসদ নির্বাচনে জিএস নির্বাচিত হন নিজাম উদ্দিন কায়সার। তিনি মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি। রোটারি-রেডক্রিসেন্টসহ নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও নির্বাচনে একেবারেই নতুন কায়সার। এবার স্বতন্ত্রের ব্যানারে নির্বাচন করবেন তিনি।
নিজাম উদ্দিন কায়সার জানান, কুমিল্লা বিএনপির উর্বর ঘাঁটি। মানুষ পরিবর্তনে বিশ্বাসী। কুমিল্লার বিএনপিও পরিবর্তন চায়। নির্বাচনের মাঠে নতুন হলেও কুমিল্লা নগরীর মানুষের পূর্ণ সমর্থন আছে আমার ওপর। জনগণের সমর্থন নিয়েই এবার সিটি নির্বাচন বিজয়ী হবো।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাশেদুল ইসলাম জানান, তিনি একাদশ সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। যদিও তিনি জয়ী হতে পারেননি। এবার তিনি মানুষের মূল্যায়ন পাবেন বলে আশা করেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান বাবুল বলেন, তিনি এবারই প্রথম নির্বাচন করছেন। তার পরিকল্পনা নিয়ে মানুষের কাছে যাবেন। মানুষ তাকে ভোট দেবেন বলে তার বিশ্বাস।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৪ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২২
এসআইএস