ঢাকা : ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার পদ্ধতি শেখাতে এবার বিকল্প পথ অবলম্বন করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এ ভোট যন্ত্রের ওপর ভোটার শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইভিএম ব্যবহার এমন নির্বাচনের আগে মক ভোট গ্রহণ করা হয় প্রতিটি কেন্দ্রে। কিন্তু এতে ভোটারদের তেমন সাড়া মেলে না। ফলে ভোট দিতে গিয়ে তারা বিপাকে পড়েন। অনেকে ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ করেন ভোটাররা।
এতে ভোট কাস্ট করতে যেমন দেরি হয়, তেমনি নানা সামলোচনারও সৃষ্টি হয়। তাই সেই পথে না গিয়ে এবার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ভোটার শিক্ষা কার্যক্রম হাতে নেওয়া হচ্ছে। আসন্ন ২৭ জুলাই অনুষ্ঠেয় স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন সাধারণ ও উপ-নির্বাচনে এ কার্যক্রম শুরু করা হবে।
ইতোমধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. আবদুল বাতেনকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান নির্দেশনাটি মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) মো. আবদুল বাতেনকে পাঠিয়েছেন।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ২৭ জুলাই কয়েকটি পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই তারিখে শূন্য পদে উপনির্বাচন এবং স্থগিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণ ভোটারদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, জাতীয় সংসদের ক্ষেত্রে প্রতিটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মধ্যে এবং সিটি কর্পোরেশনের সকল সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে কোনো জনবহুল স্থানে ভোটার শিক্ষণ কার্যক্রম নিম্নরূপভাবে আয়োজনের জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
ভোট প্রদান প্রক্রিয়া সম্পর্কে ভোটারদের অবগত করা ও হাতে কলমে অনুশীলনের জন্য ভোটার শিক্ষণ কার্যক্রম কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। এতে ভোটাররা কোনো ধরনের ভয়-ভীতি ও অহেতুক সময়ক্ষেপণ ছাড়াই ইভিএম ব্যবহার করে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভোট প্রদান করতে পারবেন। এজন্য প্রতিটি ভোটারকে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, জাতীয় সংসদের ক্ষেত্রে প্রতিটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মধ্যে এবং সিটি কর্পোরেশনের সকল সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে কোনো জনসমাগম স্থানে ইভিএম ব্যবহার করে ভোট প্রদান পদ্ধতি হাতে কলমে প্রদর্শনের মাধ্যমে দুই দিন করে ভোটার শিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের আওতাধীন এলাকায় বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভোটার শিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ কার্যক্রমে কীভাবে ভোট দিতে হয় তা মেশিনের সাহায্যে হাতে-কলমে দেখানোসহ এ সংক্রান্ত ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শন ও লিফলেট বিতরণ করতে হবে।
সংরক্ষিত ওয়ার্ডভিত্তিক ভোটার শিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও মেশিন কাস্টমাইজেশন করা হবে কেন্দ্রভিত্তিক। এতে মেশিন প্রতি ভোটার শিক্ষণ পরিচালনাকারী হিসেবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা প্রয়োজনে অন্যান্য দপ্তরের তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন ইভিএম বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক/কর্মচারী এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডভিত্তিক একজন কর্মচারী বা প্রয়োজনে অন্যান্য দপ্তরের তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন ইভিএম বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক/কর্মচারী যারা ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাগণ হিসেবেও প্যানেল ভুক্ত তাদেরকে এ কাজের দায়িত্ব দিতে হবে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় পরিসরে ইভিএম ব্যবহার করার প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তবে সংলাপ শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২২
ইইউডি/এমজে