সিলেট: ঘনিয়ে এসেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচন। আর মাত্র ৭ দিন পর (২১ জুন) ভোটগ্রহণ।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বাসার সামনে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়ার ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হলেও সেই অস্ত্রও উদ্ধার হয়নি আজও। গ্রেপ্তার হয়নি অস্ত্রধারী ক্যাডাররা। অস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়টি ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ালেও, এ বিষয়ে অনেকটা উদাসীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ভোটারদের ভীতি দূর করতে ভোটের আগেই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন সচেতন মহল।
যদিও সিলেট মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলছেন, নির্বাচনে রক্তপাত ঠেকাতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার নিয়মিত অভিযানের অংশ। কিন্তু সোমবার (১২ জুন) রাত পর্যন্ত অস্ত্র উদ্ধারের কোনো তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। প্রায় পাঁচলাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এই সিটিতে ভোটগ্রহণে সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। প্রথমবারের মতো সবগুলো ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হচ্ছে, কেউ কোনো কেন্দ্রে জোর করে ভোট নিতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে। এমন পরিস্থিতিতে ভোটে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুরোপুরি নিরপেক্ষ থাকার বিষয়ে নির্দেশ জারি করল নির্বাচন কমিশন।
ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া ভোটারদের আতঙ্কিত করেছে বলে অভিযোগ করে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল বলেন, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত করতে পারে। নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে এখনই অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালাতে তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি আহ্বান জানান।
ইসলামী আন্দোলনের মেয়রপ্রার্থী হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসানও ভোটের পরিবেশ ভালো রাখতে অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া শুরু হয়েছে। ভোটের আগে অস্ত্রের ব্যবহারে ভোটাররাও অনেক ভয়ে আছে। ভোটারদের এ ভয় বা ভীতি দূর করতে এখনই অস্ত্র উদ্ধারে নজর দেওয়া দরকার। যদিও সোমবার রাতে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে ভোটবর্জনের ঘোষণা দেন ইসলামী আন্দোলনের এই মেয়র প্রার্থী।
সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার ইলিয়াছ শরীফ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার নিয়মিত কাজের অংশ। আর বৈধ অস্ত্র থাকলেও সেটি প্রদর্শন করা নিষিদ্ধ অথবা জমা দিতে হবে।
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত আছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার ফয়সাল কাদের বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সুদীপ দেব বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কোনো নির্দেশনা প্রয়োজন হয় না। এটি নিয়মিত কাজের অংশ। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০১ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২৩
এনইউ/এসআইএ