ভোলা: আসন্ন পৌর নির্বাচনে ভোলায় ৩টি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রচার-প্রচারণা, উঠান বৈঠক ও গণ সংযোগ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা।
মেয়র ও কাউন্সিলর পদে আ’লীগ ঘর গুছিয়ে নিলেও বিএনপি সবে মাত্র প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে, তবে তারা এখনও নির্বাচনী প্রচারণায় নামেনি। দিন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে সরগরম হয়ে উঠছে ভোলার নির্বাচনী মাঠ। অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীকে দেখতে চান সাধারণ ভোটাররা।
সূত্র জানায়, প্রথম ধাপে ভোলা সদর, দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন পৌরসভার নির্বাচন। আর এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এখন সরগরম নির্বাচনী এলাকাগুলো। আ’লীগের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা রাত-দিন আগাম প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। তারা ভোটারদের দিয়ে যাচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। কে হচ্ছেন পৌর পিতা এ নিয়ে পাড়া-মহল্লায় চায়ের কাপে আলোচনার ঝড়। যে কারণে দিন দিন নির্বাচনী উৎসব আর উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে। অন্যদিকে বিএনপিও সংবাদ সম্মেলন করে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। তবে এলাকার উন্নয়ন আর সমস্যা সমাধানে যিনি কার্যত ভূমিকা রাখবেন তাকেই ভোট দেয়ার কথা জানান সাধারণ ভোটাররা।
ভোলা পৌরসভার মোট ভোটার ৩১হাজার ৩৬০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৬ হাজার ২৫৩ জন ও নারী ভোটার ১৫ হাজার ১০৭জন। এ পৌরসভা থেকে আ’লীগের মেয়র প্রার্থী হিসাবে লড়ছেন মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির। তিনি গত নির্বাচনেও মেয়র ছিলেন। অন্যদিকে সদ্য ঘোষিত বিএনপি’র প্রার্থী হিসাবে লড়ছেন হারুন অর রশিদ ট্রুম্যান। প্রথম বারের মত তিনি প্রার্থী হয়েছে।
দৌলতখান পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ৬৬৫জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫হাজার ৭৩৬জন ও নারী ভোটার ৪ হাজার ৯২৯জন। এ পৌরসভায় আ’লীগের প্রার্থী হচ্ছেন খায়রুল হাসান খোকন। তিনি প্রথম বারের মত নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপি’র হয়ে লড়বেন আনোয়ার হোসেন কাকন। তিনিও প্রথম বারের মত প্রার্থী হচ্ছেন।
বোরহানউদ্দিন উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৮হাজার ৪১০জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৪ হাজার ৩৬০ জন ও নারী ভোটার ৪ হাজার ৫০জন। এ পৌরসভা থেকে আ’লীগের হয়ে লড়ছেন রফিকুল ইসলাম। তিনি গত নির্বাচনে মেয়র ছিলেন। অন্যদিকে বিএনপি’র হয়ে প্রথম বারের মত লড়ছেন মনিরুজ্জামান কবির।
এদিকে, পৌর নির্বাচনে সরকার দলীয় বর্তমান মেয়রগণ তাদের অসমাপ্ত কাজ করাসহ নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন ভোটারদের, অন্যদিকে বিএনপিও ঘর গোছাতে ব্যস্ত, তারাও জানাচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতির কথা।
ভোলা পৌরসভার আ’লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ভোলা পৌরবাসীর জন্য যেসব উন্নয়নমূলক কাজ করেছি তার প্রতিদান হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর ভোটাররা আমাকে ও আমার পরিষদকে জয়যুক্ত করবে। জয়লাভ করতে পারলেই নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি ও পর্যটন এলাকা হিসাবে তৈরি করার জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর সহযোগিতায় ভোলা পৌরসভাকে দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ পর্যটন নগরী হিসাবে গড়ে তুলতে পারবো বলে আশা রাখছি।
বিএনপি প্রার্থী হারুন অর রশিদ ট্রুম্যান বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হলে ভোলা পৌরসভাকে সার্বজনীন পৌরসভা হিসাবে গ্রহণযোগ্যতার মধ্যে আনবো।
তবে ভোটাররা বলছেন, যিনি পৌরবাসীর সার্বিক সেবা, নারীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি, পৌরসভার উন্নয়ন এবং মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত এলাকা প্রতিষ্ঠিত করবেন তাকেই মেয়র ও কাউন্সিলর হিসাবে দেখতে চান তারা। একই সাথে নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের নিরাপত্তা চেয়েছেন তারা।
শুধু ভোলা পৌরসভাই নয় নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন পৌরসভাতেও। সেখানে প্রার্থীরা আগাম প্রচারণা, গণ সংযোগ শুরু করে দিয়েছেন। পছন্দের প্রার্থীকেই নির্বাচিত করার কথা ভাবছেন সাধারণ ভোটাররা।
এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন অফিসার মো. হেলাল উদ্দিন খান বলেন, মনোনয়ন সংগ্রহ চলছে। প্রার্থীদের মধ্যে একটা নির্বাচনী আমেজ পরিলক্ষিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত নির্বাচনে সার্বিক পরিস্থিতি ভালো। নির্বাচনী আচরণ বিধিও প্রার্থীরা মেনে চলছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৫
আরআই