মৌলভীবাজার থেকে: সারাদেশের মতো মৌলভীবাজার পৌরসভায়ও এবার প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দলীয় প্রতীকই এবার ভোটের ফলাফলে প্রধান নির্ধারকের ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন পৌরসভার ভোটাররা।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তার সমর্থকরা মনে করছেন, দলীয় প্রতীক যেমন ফলাফল নির্ধারণ করবে, তেমনি ব্যালটে সিল মারার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিও ভোটারের বিবেচনাবোধে কাজ করবে। আর বিএনপির প্রার্থী ও সমর্থকদের দাবি, মৌলভীবাজার পৌরসভায় যে কোনো নির্বাচনে বরাবরই ধানের শীষের পক্ষে থেকেছে মানুষ, এবারও ভোটারদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে এই প্রতীক।
নির্বাচনে এবার মেয়র পদে লড়ছেন পাঁচজন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. ফজলুর রহমান (নৌকা প্রতীক), বিএনপির অলিউর রহমান (ধানের শীষ), ওয়ার্কার্স পার্টির সৌমিত্র দেব (হাতুড়ি), ইসলামী আন্দোলনের মো. মোস্তফা কামাল (হাতপাখা) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) সৈয়দ সুজাত আলী (আম)। এছাড়া কাউন্সিলর পদে ৩২ এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে সাতজন লড়ছেন। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যেই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ফজলুর রহমানের সঙ্গে তার বরহাটের বাসায় আলাপ হচ্ছিলো। তিনি বলেন, আগে পৌরসভা নির্বাচনে অনেক প্রার্থী থাকতো। এবার দলীয় প্রতীক বরাদ্দ হওয়ায় একক প্রার্থী নির্বাচন করছে। দলীয় প্রতীক হওয়ায় মানুষ যেমন ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় ও স্থানীয় ইস্যু বিবেচনা করবে, তেমনি তাদের মাথায় থাকবে ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিও।
জেলা যুবলীগের এ সভাপতি বলেন, দলীয় প্রতীকের সুবিধা-অসুবিধা দু’টোই আছে। সুবিধা হলো যেমন, দলের নেতাকর্মীরা সবাই এক ছাতার নিচে আসবেন প্রতীকের জয়ে। তেমনি অসুবিধা হলো অনেক প্রার্থী যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও কেবল দলীয় প্রতীকের কারণেই সামনে চলে আসবেন। এই দলীয় প্রতীক বিবেচনায়ই অনেক যোগ্য প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে পেছনে চলে যেতে পারেন।
তিনি বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিটা ভোটারদের মনোজগতে বিবেচনাবোধ তৈরি করে। মৌলভীবাজারের মানুষ জানে, এক্ষেত্রে নৌকা এবার এগিয়ে থাকবে।
এসময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর তুলনায় নিজেকে যোগ্যতর প্রমাণে শ্রেষ্ঠ করদাতা পুরস্কার প্রাপ্তি, জনপরিচিতিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন ফজলুর রহমান। নির্বাচিত হলে মৌলভীবাজারকে পর্যটনের আরও আকর্ষণীয় স্পট হিসেবে গড়ে তোলাসহ যাবতীয় প্রতিশ্রুতির কথাও বলেন নৌকার এ প্রার্থী।
পরে শহরের গুলবাগের বাসায় আলাপ হয় বিএনপির প্রার্থী অলিউর রহমানের সঙ্গে। তিনি পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। দু’বার কাউন্সিলর পদে দায়িত্ব পালন করা এ মেয়র প্রার্থী বলেন, মানুষ অনেক দিন ভোট দিতে পারেনি। মৌলভীবাজার সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের এলাকা। তিনি এ এলাকার উন্নয়নের রূপকার ছিলেন। সে বিবেচনায় এবারও মৌলভীবাজার পৌরসভার মানুষ ধানের শীষকে পছন্দ করবে।
নিজের যোগ্যতার পক্ষে অলিউর রহমান বলেন, আমি দু’বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ছিলাম। এবার মেয়র পদে লড়ছি। দল আমাকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনের সুযোগ দিয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে যেভাবে দু’বার কাউন্সিলর হয়েছিলাম, সেভাবে মেয়রও নির্বাচিত হবো।
এসময় জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার, বিনোদনের ব্যবস্থাসহ মৌলভীবাজার পৌরসভার উন্নয়নে নিজের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন ধানের শীষ প্রতীকের এ প্রার্থী।
আলাপে জানা যায়, দুই প্রার্থীই দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) দু’জনেই গণসংযোগে নামছেন। ৩৪ হাজার ৯৯৯ ভোটারের এ পৌরসভার নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়লাভের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দুই প্রার্থীই।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
এইচএ/এএ
** নৌকায় ভাঙছে বিভেদের দেয়াল
** ‘রাজা’ ‘বখত’ নয়, এবার লড়াই দলীয়
** নৌকা-ধানের শীষ নয়, লড়াই কালাম-শামছুর
** ছাতকে ‘ফ্রি চা-পানি’, মিলছে ‘টেকা-টুকা’ও
** জকিগঞ্জবাসীর দুঃখগাঁথা
** ওপারে শীতের চাদর, এপারে নির্বাচনী উত্তাপ
** বছর ধইরা মাঠ ঠিক করছি, এখন সরতাম কিতার লাগি
** লাখ লাখ টেকার ভুট এক হাজারে বেচিয়া কতদিন খাইবা?
** এখানে কুনো ভুটো কারচুপি অইছে না
** ডিজিটাল রেল, সময়ানুবর্তী রেল