লক্ষ্মীপুর: মেঘনাপাড়ে রামগতি পৌরসভা। ভাঙনে ৭ নম্বর ওর্য়াডের প্রায় অর্ধেক নদী গর্ভে।
গত নির্বাচনে এ পৌরসভা থেকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু পৌরবাসীর প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। যে কারণে এবার ধানে চিটা ধরেছে বলে মন্তব্য অনেকের।
এদিকে, আজাদ উদ্দিন চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে জাতীয় পার্টিতে (জাপা-এরশাদ) যোগ দেওয়ার পর ভোতা লাঙ্গলে ধার উঠেছে।
সরেজমিনে লক্ষ্মীপুরের রামগতি পৌর নির্বাচনী এলাকায় ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
রামগতি পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে তিনজন লড়ছেন। আওয়ামী লীগ থেকে মেজবাহ উদ্দিন মেজু (নৌকা), বিএনপি থেকে বর্তমান মেয়র শাহেদ আলী পটু (ধানের শীষ) ও জাতীয় পার্টি থেকে আজাদ উদ্দিন চৌধুরী (লাঙ্গল)। এ তিন প্রার্থীকে নিয়েই ভোটের মাঠে নানা আলোচনা। এখন চায়ের আড্ডায়, চলার পথে, কাজের ফাঁকে কিংবা অবসরে ভোটের জয়-পরাজয়ের হিসাব চলছে।
পৌরবাসী জানান, বিগত সময় নদী ভাঙন রোধের কথা বলে ভোট আদায় করে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেউ কথা রাখেনি। অবেশেষে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল্লা আল মামুন কথা দিয়ে কথা রেখেছেন। নদী ভাঙন রোধে কাজ করেছেন। এ সাফল্যই এখন আওয়ামী লীগ প্রার্থী মেজবাহ উদ্দিন মেজুর পুঁজি, নৌকা মার্কাই তার ভরসা।
আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে জাতীয় পার্টি থেকে লাঙ্গল প্রতীকে ভোটের মাঠে আছে আজাদ চৌধুরী। এখানে জাতীয় পার্টি নয়, ব্যক্তি আজাদ জনপ্রিয়। যে কারণে আজাদ চৌধুরীকে এখন আওয়ামী লীগের ভয়।
রামগতি বিএনপি’র ঘাঁটি, এখানে বর্তমান মেয়র বিএনপি’র। তাকে ফের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। দৌঁড়-ঝাঁপ না দিয়ে একটু কৌশল করেই ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এগোচ্ছেন পটু। ভোটের মাঠে বিএনপি পক্ষে কেউ মুখ খুলছে না। তবে, সাধারণ ভোটাররা সুষ্ঠু নির্বাচন ও কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে চান।
বিএনপি’র বর্তমান মেয়র উন্নয়ন করতে করেনি এমন অভিযোগ রয়েছে, তবে দলীয় নেতাকর্মীরা বলেন দল ক্ষমতায় না থাকলে উন্নয়ন করা যায় না।
পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাহফুজ, জামাল, শামছুল বাহার, ২ নম্বর ওর্য়াডের বাসিন্দা মো. নিজাম ও কামাল বলেন, মেঘনা নদী থেকে পৌর এলাকা রক্ষা করায় এ সরকার জনপ্রিয় হয়েছে। এতে নৌকার ভোট বেড়েছে। যে দল ক্ষমতায় সে দলের প্রার্থীকে ভোট দিলে এলাকায় উন্নয়ন হয়।
পৌর ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদুল ওদুদ মনে করেন, সাধারণ মানুষ দল ও মার্কা বিবেচনা করবে না, ভালো মানুষ দেখে ভোট দেবে। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িতরা দলের প্রার্থীকে-দলীয় প্রতীকেই ভোট দেবেন।
সেচেতন মহল মনে করেন-এখানে বিএনপি’র ভোট আছে, আওয়ামী লীগের ভোট বেড়েছে এবং জাতীয় পার্টি নয়, ব্যক্তি আজাদকে সাধারণ মানুষ ভালোবাসে। সব মিলিয়ে এখানে ত্রিমুখী লড়াই হবে।
রামগতি উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, পৌর নির্বাচনে রামগতি থেকে ৩ জন মেয়র, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী ১০ জন ও ৩২ জন সাধারণ কাউন্সিলরসহ মোট ৪৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ পৌর সভায় ভোটার ১৭ হাজার ৩৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮ হাজার ৯০৯ জন। মহিলা ভোটার ৮ হাজার ৪৬৭ জন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
পিসি/