চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে: দাড়িপাল্লা প্রতীক নেই কোথাও। প্রার্থীরাও নেই মাঠে।
ঘর থেকে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত। উচ্চ আদালতের নির্দেশে দলটির নিবন্ধন ও নির্বাচনে দলবদ্ধ অংশগ্রহণ বাতিল করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফলে পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে নেই তাদের প্রতীক দাড়িপাল্লাও। তারপরও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার চার পৌরসভায় স্বতন্ত্র পরিচয়ের আড়ালে লড়ছেন দলের মেয়র প্রার্থীরা।
ভোটে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিএনপির ঘাঁটি হলেও, দাঙ্গা হাঙ্গামায় এ জেলা জামায়াত-শিবিরের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। নিজেদের শক্তিমত্তাকে সংঘর্ষে-তাণ্ডবের লগিয়ে আসছে তারা। তবে ভোটের মাঠে প্রকাশ্যে লড়ার ক্ষমতা অবশিষ্ট না থাকায় যুদ্ধাপরাধীদের দলটি এখানে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে নীরবে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জেলার ৪টি পৌরসভার তিনটিতেই জগ প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে লড়ছে জামায়াত। একটিতে রয়েছে নারকেল প্রতীক।
নবাবগঞ্জ পৌরসভায় প্রার্থী নজরুল ইসলাম জেলা জামায়াতের আমির। তিনি জগ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। তবে তাকে এখন পর্যন্ত জনসমক্ষে দেখা যায়নি। দলের তৃতীয় শ্রেণীর নেতাকর্মীরা এখানে প্রচারণার কাজ করছেন।
শিবগঞ্জ পৌরসভার প্রার্থী জাফর আলী জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল। তিনিও জগ নিয়ে লড়ছেন। মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পৌর এলাকায় রিকশার মাইকে তার নির্বাচনী প্রচারণা শোনা যায়।
রিকশাওয়ালা মালেক জানান, এ প্রচারণার সঙ্গে তার নিজের কোনো সংযোগ নেই। প্রার্থীর লোকেরা রিকশায় সাউন্ড সিস্টেম উঠিয়ে দিয়েছেন। দুপুর আড়াইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত এ রিকশা চালান তিনি। যে দল টাকা দেবে, তার জন্যই কাজ করবেন তিনি।
একই মার্কা নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন নাচোলের ডা. রফিকুল ইসলাম। তিনি পৌর জামাতের আমির। তারও প্রচারণা চলছে ক্যাসেটে।
রোহনপুরে মিজানুর রহমানের প্রতীক নারকেল গাছ। জামায়াতের পৌর অামির তিনি।
ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জামায়াতের নারীরা পুরো জেলাতেই দলের প্রার্থীদের নির্বাচনে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন। যেহেতু জামায়াতের পুরুষ নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বা জেলে রয়েছেন, তাই বড় ভূমিকা রাখছেন নারী নেতাকর্মীরাই।
রিকশা, অটোতেই ক্যাসেট চালিয়ে বেশি চলছে জামায়াতের মেয়র ও কাউন্সিলর পদের প্রচারণা।
মেয়র পদে যেমন জগ মার্কা, তেমনি কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে জামায়াত কর্মীদের পাঞ্জাবি প্রতীকই বেশি।
শিবগঞ্জের ৪নং ওয়ার্ডের রুবেল আহমেদ পাঞ্জাবি মার্কায় কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। তার মামা কলিমুল্লাহ নিজেই বলেছেন, রুবেল জামায়াতের প্রার্থী।
নবাবগঞ্জ পৌরসভার ১৫নং ওয়ার্ডে জামায়াত কর্মী রেজাউল করিম পাঞ্জাবি প্রতীক নিয়ে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন। এছাড়াও প্রতিটি কাউন্সিলর পদেই রয়েছেন দলটির প্রার্থী এবং কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই।
সুসংগঠিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ময়দানে লড়ছেন তারা।
ভোটাররা বলছেন, জামায়াতের নারীরা রাত-দিন খাটছেন। ভোটরদের কাছে কয়েকবার করে যাওয়া হয়ে গিয়েছে তাদের। আর প্রার্থীরা হুটহাট করে প্রার্থীদের বাড়ি গিয়ে ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আবার দ্রুত স্থান ত্যাগ করছেন।
এদিকে এলাকাবাসীর আশঙ্কা, এবারের ভোটকে কেন্দ্র করে আবারও ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠতে পারে জামায়াত-শিবির।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
এমএন/এএসআর
** ইসরাইল মোড়ে ভোটযুদ্ধ
** ব্যবহার করা হচ্ছে শিশুদের
** আবেগী প্রার্থী জাপা'র লিটিলের কথা
** সাঁওতালদের বিশ্বাস করে না ধানের শীষ!
** মানুষ এখন সরকারি দলে...