ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন

বাগমারার গোয়ালকান্দিতে নির্বাচন স্থগিতের পর সহিংসতা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫০ ঘণ্টা, মে ৬, ২০১৬
বাগমারার গোয়ালকান্দিতে নির্বাচন স্থগিতের পর সহিংসতা

রাজশাহী: বৃহস্পতিবার (৫ মে) রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন পরিষদে চতুর্থ দফার নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকে উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

নির্বাচন স্থগিতের পর বিদ্রোহী প্রার্থী আলমগীর সরকারের সমর্থকরা বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ কর্মীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প। ছিড়ে ফেলা হয়েছে নৌকা প্রতীকের পোস্টার ও ব্যানার। মারধর করা হয়েছে অন্তত ৩০ জন আওয়ামী লীগ কর্মীকে।

এদের মধ্যে কয়েক জনকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৫ মে) রাত থেকে শুক্রবার (০৬ মে) দুপুর পর্যন্ত এসব হামলা, ভাঙচুর ও মরধরের ঘটনা ঘটে।

বাগমারা উপজেলার এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুস সালাম এবং দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়নের সভাপতি আলমগীর সরকার।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ইউনিয়নের রামরামা গ্রামের হ্যাচারি মোড়ে হাটে যাওয়ার সময় নৌকার পক্ষে ভোট করায় ২০ থেকে ২৫ জন আওয়ামী লীগ কর্মীকে মারধর করে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা।

এদের মধ্যে হমলার শিকার হন- চেউখালি গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী মুকুল সরদার, আবু বক্কর, কালাম, আলাউদ্দিন, সবুজ শাহ, হোসেন বাঘ, কামারখালি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, সোহাগ, জুয়েল, মাহাবুর রহমান সরকার, আলম মামুন, মামুন খা, রামরামা গ্রামের রহিদুল, কনোপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম।

এরা সবাই নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। এদের মধ্যে পাঁচজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাহেরপুর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ও পরে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তারা হলেন- শহিদুল ইসলাম, জুয়েল, মাহাবুর, রহিদুল ও মুকুল সরদার।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে নির্বাচন স্থগিতের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলমগীর সরকারের সমর্থকরা তেলিপুকুর বাজারে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করে। আওয়ামী লীগ কর্মী মজনুর রহমান, এশাদুল হক ও খোদা বক্সের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ সময় তারা বাড়িতে ছিলেন না। এরপর পার্শ্ববর্তী গ্রাম দুলালীপাড়ায় আওয়ামী লীগ কর্মী নিজাম উদ্দিনের বাড়িতে হামলা চালায় তারা। নিজামউদ্দিন বাড়িতে থাকলেও তিনি পালিয়ে গিয়ে নিজেকে রক্ষা করেন।

অপর দিকে, রাত ১১টার দিকে রামরামা গ্রামে মারধর করে জখম করা হয় আওয়ামী লীগ কর্মী হাবিব খরাদিকে। রাতেই তাকে উদ্ধার করে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
 
এ ব্যাপারে প্রার্থী আব্দুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা বর্তমানে তার কর্মীদের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালাচ্ছে। এছাড়া কর্মীদের রাস্তায় পেলে মারধর করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

তবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলমগীর সরকার এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে নিজেদের কর্মীরাই এসব ঘটনা ঘটিয়ে আমার ঘাড়ে অহেতুক দোষ চাপাচ্ছে। তবে এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনায় আমি এবং আমার কর্মীরা কোনোভাবেই জড়িত না।

রাজশাহীর বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, কিছু বিছিন্ন ঘটনার অভিযোগ মৌখিকভাবে পাওয়া গেছে। লিখিত অভিযোগ পেলেই দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৬
এসএস/জিসিপি/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।