ঢাকা: ভোট কারচুপি ঠেকাতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনকে (ইভিএম) আরও আধুনিক করার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে ইভিএমের সঙ্গে সেন্সর লাগিয়ে তাতে আঙুলের ছাপ নিয়ে ভোটারকে নিশ্চিত করা হবে।
এমনই প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধনের জন্য সোমবার (২৫ জুলাই) একটি বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে ওই ভোট যন্ত্রটি উন্নয়নের প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন।
২০১৩ সালের ১৫ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৮ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের ‘সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ’ কেন্দ্রে একটি ইভিএম মেশিনে ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে সে ইভিএম থেকে আর ভোটগণনা করা যায়নি। এ নিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা উত্তেজনাপূর্ব পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে সে নির্বাচনে ভোটগ্রহণ বাতিল করে কিছুদিন পর আবার ব্যালট পেপারেই ভোটগ্রহণ করতে হয়। এরপর সেই মেশিনটি বিকল হওয়ার কারণ জানতে না পারায় এবং তা সারাতে না পারা পর্যন্ত সব ধরনের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার থেকে সরে আসে ইসি।
এদিকে, তিন বছরে ইভিএমের ত্রুটি সারাতে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বুয়েটের (বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) কাছে কয়েক দফা চিঠি দেয় ইসি। কিন্তু এতে বুয়েট কোনো দায়িত্ব নেয়নি। অবশেষে নিজেরাই এই যন্ত্রটি উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছে সংস্থাটি।
জানা যায়, বর্তমানে যে ইভিএমটি রয়েছে এতে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা অনুসারে বোতামে টিপ দিয়ে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু ভোটারের পরিচয় শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই ইভিএমের সঙ্গে এমন একটি সেন্সর লাগানোর কথা ভাবা হচ্ছে, যাতে ভোটারের আঙুলের ছাপও সংরক্ষণে থাকবে। যা ইসির এনআইডি শাখায় সংরক্ষিত রয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো ভোটার ভোট দিতে এলে প্রথমেই তার আঙুলের ছাপ নিয়ে মিলিয়ে দেখা হবে, সে সত্যিকারের ভোটার কিনা। এরপর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে গেলে তাকে ভোট দেওয়ার অনুমিত দেবেন প্রিজাইডিং অফিসার। তখন বোতামে চাপ দিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন তিনি।
ইভিএম নিয়ে অনুষ্ঠিত ইসির বৈঠকে উপস্থিত সূত্র জানা যায়, পুরো প্রস্তাবনাটিই এনআইডি শাখার। তাদের প্রস্তাবটির সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এতে কমিশন একমত হলেও বিষয়টি আরও পর্যালোচনার জন্য রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে সুপারিশ করলে এবং ভোট কারচুপির কোনো সুযোগ না থাকলেই তবে অনুমোদন দেবে ইসি। এরপর সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ইভিএমের কারিগরি উন্নয়ন করা হবে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, কেউ যদি ইভিএমের কারিগরি উন্নয়ন ঘটাতে পারেন অবশ্যই আমরা স্বাগত জানাবো।
২০১০ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন বিগত নির্বাচন কমিশন ভোটদান পদ্ধতিতে অধিকতর স্বচ্ছতা আনতে ইভিএমের প্রচলন ঘটনায়।
** ইভিএম নিয়ে নড়েচড়ে বসছে ইসি
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৬
ইইউডি/আইএ