ঢাকা: সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার নিয়ম-কানুন শিথিল করার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একইসঙ্গে শিল-পাটা, টিস্যু বক্স, মোড়ার মতো অবমাননাকর সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীকগুলোও তুলে দেওয়া হচ্ছে।
সূত্র জানিয়েছে, আগামী ডিসেম্বরে নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়েই বিধিমালা সংশোধনের কাজ হাত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
গত বছর দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন করার জন্য সংশ্লিষ্ট আইনে পরিবর্তন আনে সরকার। সংশোধিত আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখতে নির্বাচন কমিশনও সে সময় ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনের বিধিমালা সংশোধন করে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার সিটি নির্বাচন বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালা সংশোধন করছে।
দলীয়ভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে তাদের নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোটারের সমর্থন দেখাতে হয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন দেখাতে হয় স্বতন্ত্র প্রার্থীকে। তবে সিটি নির্বাচনে শতাংশের হিসাব না রেখে সমর্থনের হিসাব সীমিত করার কথা ভাবা হচ্ছে।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, রোববার (১৪ আগস্ট) নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালা নিয়ে আলোচনায় বসেছিল নির্বাচন কমিশন। তবে আচরণ বিধিমালা নিয়ে আলোচনা হয়নি। আর নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার ক্ষেত্রে কেবল স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রার্থিতা সহজীকরণ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীক সংশোধন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থিতা
জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের ভোটার সংখ্যা বেশি হয় বলে ইসি সচিবালয় ১ হাজার ভোটারের সমর্থন নির্দিষ্ট করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ ও আবদুল মোবারক সে প্রস্তাবের বিরোধিতা করে সমর্থনের বিষয়টিই না রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। আর অন্য দুই নির্বাচন কমিশনার সমর্থকের সংখ্যা নির্দিষ্ট (সীমিত) করে দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন।
এক্ষেত্রে মেয়র প্রার্থীর ক্ষেত্রে ২০০ ভোটারের সমর্থন এবং কাউন্সিলর প্রার্থীর ক্ষেত্রে ১০০ ভোটারের সমর্থনের প্রস্তাবও এসেছে।
কমিশনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্র্রক্রিয়া অনুযায়ী দুই ভাগে কমিশন ভাগ হয়ে গেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) যে অংশকে সায় দেন, সে অংশের প্রস্তাবই গ্রহণযোগ্য হয়। সে অনুযায়ী, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রার্থিতার বিষয়টি কতোটুকু শিথিল হচ্ছে তা সিইসি’র ওপর নির্ভর করছে। খুব শিগগিরই বিষয়টি চূড়ান্ত হচ্ছে।
নারী প্রার্থীদের অবমাননাকর প্রতীক
সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য অবমাননাকর প্রতীকগুলো তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
বর্তমান নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য ১০টি প্রতীক সংরক্ষণ করা আছে। সেগুলো হলো- কেটলি, খাঁচা (পাখির খাঁচা), গ্লাস, টিস্যু বক্স, পান পাতা, বোয়াম, মূলা, মোড়া, শিল-পাটা ও স্টিল আলমারি।
গত বছরের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত ঢাকার দুই সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের সময় এসব প্রতীক পেয়ে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ও নারীনেত্রীরা।
পরবর্তীতে ইসি’র সচিব সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, সময় খুব কম। তাই সেগুলো আপাতত পরিবর্তন করা যাবে না। তবে ভবিষ্যতে পরিবর্তন করা হবে।
সে অনুযায়ী, এবার নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনকে নির্বাচন সামনে রেখে এ প্রতীকগুলো তুলে দিচ্ছে ইসি।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৬
ইইউডি/এএসআর