মাদারীপুর: ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে গ্রামীণ বাজারগুলো জমজমাট হয়ে উঠেছে। বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এসব বাজার লোকে লোকারণ্য থাকছে গত কয়েকদিন ধরে।
সারাদিনে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বিকেল হলেই ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ কোনো বাজারে প্রার্থীদের নিজ নির্বাচনী ক্যাম্পে অবস্থান, নির্বাচনী আলোচনা আর ভোটারদের নানান প্রতিশ্রুতি নিয়ে সরগরম থাকে গ্রামীণ বাজার। আর নির্বাচনকে ঘিরেই বাজারের দোকানগুলোর বেচাকেনা বেড়েছে। বিশেষ করে চায়ের দোকানে বিক্রি বেড়েছে কমপক্ষে তিনগুণ। নির্বাচন ঘিরে চায়ের দোকানগুলোতে যেন বইছে উৎসবের আমেজ। বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি পরিশ্রমেও সর্বদা হাসিমুখ দোকানিদের।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলার রাজৈর উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র।
পাইকপাড়া ইউনিয়নের দামেরচর বাজারের চায়ের দোকানি মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, নির্বাচনের শুরু থেকেই দোকানে বিক্রি বেড়ে গেছে। এই বাজারে সব প্রার্থীদের নির্বাচনী ক্যাম্প রয়েছে। বিকেল ৩টা থেকে প্রার্থী, কর্মী ও সমর্থকদের ভিড় বাড়তে থাকে। আগে দৈনিক ৫ হাজার টাকা বিক্রি হতো। এখন বিক্রি হচ্ছে দৈনিক ১৫ হাজার টাকা। চা, বিস্কুট আর কোমলপানীয় বেশি বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে রাজৈর ঘুরে দেখা গেছে, নির্বাচনী এলাকাগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। স্থানীয় বাজারের চায়ের দোকানে নির্বাচনী চা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন দোকানিরা। সিঙ্গারা, পুরির দোকানেও ভিড় ক্রেতাদের। এছাড়া রাস্তার পাশের চটপটি-ফুচকার দোকানেও বইছে নির্বাচনী হাওয়া।
চটপটি বিক্রেতারা জানান, বাজারঘাট জমজমাট থাকে নির্বাচন ঘিরে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চটপটি ভালো বিক্রি হয়। শিশু-কিশোররাই মূল ক্রেতা।
সিঙ্গারা বিক্রেতারা জানান, শীতের সময় তেলে ভাজা এসব খাবারের চাহিদা এমনিতেই বেড়ে যায়। তারপর আবার নির্বাচন সামনে। সব সময় লোকজনের ভিড় থাকে। বিক্রিও বাড়তি।
রাজৈর উপজেলার কবিরাজপুর বাজারের চায়ের দোকানিরা জানান, বিকেল থেকে চা বিক্রি বেশি হয়। সব প্রার্থী এসময় বাজারে আসে। কর্মী-সমর্থকদেরও ভিড় বাড়ে। শীতের সময় আদা চা ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এখন বিক্রি বেশি হচ্ছে।
রাজৈর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চতুর্থ ধাপে আগামী ২৬ ডিসেম্বর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এসব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪০ জন প্রার্থী পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
পাইকপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. শাহজাহান মোল্লা বলেন, নির্বাচন ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি এখানে। ভোটারদের মধ্যেও উৎসাহ-উদ্দীপনা রয়েছে। বাজারগুলোতে লোকজনের সমাগম বেশি থাকায় দোকানদের ব্যবসা ভালো হচ্ছে। তারাও আনন্দিত। আর এই নির্বাচনে জয় নিয়ে আমি আশাবাদী। জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। '
কবিরাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী টিপু সুলতান বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে বাজার-ঘাটে উৎসব বইছে। ২৬ তারিখের নির্বাচনেও জনগণ আমাকে নির্বাচিত করে আবারও এলাকার উন্নয়নের সুযোগ করে দেবে বলে আমি আশা করি।
চতুর্থ ধাপে আগামী ২৬ ডিসেম্বর রাজৈর উপজেলার কবিরাজপুর, কদমবাড়ী, ইশিবপুর, পাইকপাড়া, হরিদাসদী মহেন্দ্রদী ও বাজিতপুর ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২১
আরএ