‘অনেক সাধনার পরে আমি’, ‘কতদিন দেহি না মায়ের মুখ’, ‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে’- এমন অসংখ্য কালজয়ী গানের শিল্পী খালিদ হাসান মিলু। বুধবার (২৯ মার্চ) এই গায়কের ১৮তম প্রয়াণ দিবস।
সশরীরে খালিদ হাসান মিলু আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু গানের গানেই বেঁচে আছেন, থাকবেন আজীবন।
১৯৮০ সালে তার সঙ্গীত জীবন শুরু হয় খালিদ হাসান মিলুর। তিনি ১৯৯৪ সালে ‘হৃদয় থেকে হৃদয়’ চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী বিভাগে পুরস্কার লাভ করেন।
খালিদ হাসান মিলু ১৯৬২ সালে ৩ এপ্রিল পিরোজপুরের আদর্শপাড়াতে জন্মগ্রহণ করেন। মিলুর বাবা মোদাচ্ছের আলী মিয়া ছিলেন স্থানীয় ‘গুনাইবিবি’ পালা গানের সঙ্গে জড়িত। বাবা গানের মানুষ হিসেবে ছোট্ট মিলুরও ছিলো গানের প্রতি বিশেষ এক ঝোঁক। এ কারণে তার গানের প্রতিভাও বিকশিত হয় দ্রুত। বাবার হারমোনিয়াম দিয়েই মিলুর গানের সাধনা শুরু।
তিনি ওস্তাদ রবীন দাস, সুরেশ দাসসহ আরো কয়েকজনের কাছে সংগীত বিষয়ে তালিম নেন। তার তালিম নেওয়া পূর্ণতা পায় যখন তিনি ১৯৭৮ সালে খুলনা বেতারে তালিকাভুক্ত হন। খুলনায় তিনি ‘স্পার্টান’ একটি ব্যান্ডও গঠন করেন।
সংগীতে নিজেকে আরো বিকশিত করতে খালিদ হাসান মিলু ঢাকায় চলে আসেন। আকবর কবির পিন্টু পরিচালিত আলী হোসেনের সুরে ‘কালো গোলাপ’ সিনেমার মাধ্যমে প্রথম চলচ্চিত্রে গান করেন।
ক্যারিয়ারে তার ১২টি একক অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে ‘প্রতিশোধ নিও’, ‘নীলা’, ‘শেষ ভালোবাসা’, ‘আয়না’, ‘মানুষ’ ও ‘শেষ খেয়া’ অন্যতম। একক অ্যালবাম ছাড়াও খালিদ হাসান মিলু প্রায় ২৫০টি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।
লিভার সিরোসিসে ভুগে ২০০৫ সালের ২৯ মার্চ তিনি চলে যান না ফেরার দেশে। কালজয়ী এই কণ্ঠশিল্পীর দুই ছেলে প্রতীক হাসান ও প্রীতম হাসান সঙ্গীতকে ভালোবেসে এই জগতেই যুক্ত আছেন।
খালিদ হাসান মিলুর উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে- ‘অনেক সাধনার পরে আমি’, ‘কতদিন দেহি না মায়ের মুখ’, ‘নিশিতে যাইয়ো ফুলবনে’, ‘নীলা তুমি আবার এসো ফিরে’, ‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে’, ‘হৃদয় থেকে হৃদয়’, তুমি আমার হৃদয়ে যদি থাকো’, ‘পৃথিবীকে ভালোবেসে সুরে সুরে কাছে এসে’, ‘শোনো শোনো ও প্রিয়া প্রিয়া গো’, ‘যে নদী মরুর পথে পথটি হারাল’, ‘যতদূরে যাও মনে রেখো’, ‘মনের আকাশে কালো মেঘ’, ‘যদি পারো ভালোবেসে এসো’।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২৩
এনএটি