দুই বছরেরও বেশি সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এক সময়ের জনপ্রিয় নায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক।
সোমবার (১৫ মে) সকালে সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ঢাকাই সিনেমার এই ‘মিয়াভাই’।
তার সময়ে গ্রামবাংলার নায়ক বলতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ফারুক। বলতে গেলে, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি যাদের হাত ধরে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম এই অভিনেতা।
রূপালী পর্দায় ফারুকের হাতেখড়ি হয় বাংলা চলচ্চিত্রের মিষ্টি মেয়ে খ্যাত অভিনেত্রী কবরীর মাধ্যমে। ১৯৭১ সালের কথা। নায়ক ফারুক ‘জলছবি’ নামে সিনেমা দিয়ে অভিনয় জগতে পা রাখেন। সিনেমাটির পরিচালনায় ছিলেন এইচ আকবর।
সেই সিনেমায় ফারুকের বিপরীতে স্ক্রিন শেয়ার করেন কবরী। আর প্রথম সিনেমাতেই বাজিমাত। পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ফারুককে। সিনেপ্রেমীদের হৃদয়ে স্থান করে নেয় ফারুক-কবরী জুটি।
পরবর্তী সময়ে কবরীর সঙ্গে জুটি বেঁধে ফারুক বেশ কয়েকটি সিনেমা করেন। আর সেসব সিনেমার অধিকাংশই জনপ্রিয়তা পায়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘সুজন সখী’, যে সিনেমা এখনও আবেদন তোলে সিনেপ্রেমীদের হৃদয়ে।
অভিনয়ের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে নায়ক উপহার দিয়েছেন একের পর এক হিট সিনেমা। বাংলাদেশের কিংবদন্তি পরিচালক খান আতাউর রহমান, নারায়ণ ঘোষ মিতা, স্বপন ঘোষ, আজিজুর রহমান, আমজাদ হোসেনসহ আরও গুণী পরিচালকদের হাত ধরেই তিনি উপহার দিয়েছেন এসব কালজয়ী সিনেমা।
একশ’র বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন ফারুক। উল্লেখযোগ্য সুপারহিট সিনেমাগুলো হলো-
‘লাঠিয়াল’, ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘মাটির মায়া’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘নাগরদোলা’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘কথা দিলাম’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব’, ‘ছোট মা’, ‘এতিম’, ‘ঘরজামাই’, ‘পালকি’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘জীবন সংসার’,‘মিয়া ভাই’র মতো অসংখ্য সিনেমা।
সবশেষ ২০০৮ সালে ‘ঘরের লক্ষ্মী’ সিনেমায় অভিনয় করেন ফারুক।
লাঠিয়াল সিনেমায় দুখুমিয়া চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন ফারুক এবং ২০১৬ সালে আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
এসএএইচ