‘তবুও কিছুই যেন ভালো যে লাগে না কেন...’। সত্যিই কিছু ভালো লাগছে না ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র ভক্তদের।
সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কলকাতার গায়ক রূপম ইসলাম।
তিনি এক স্ট্যাটাসে লেখেন, এরকম কত বাঙ্ময় মুহূর্তই রয়ে গেল শুধু…। সচল হয়েই থেকে গেল গানজীবনের অনন্ত পথ চলা… থেমে গেল বললে ভুল হবে, মারাত্মক ভুল…। বাপিদা- সশরীরে তুমি আর নেই, কিন্তু সর্বত্র এভাবেই তুমি থাকবে। লাল সেলাম। বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।
জানা যায়, তাপস দাস দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন। রোববার সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে কলকাতায় তার মৃত্যু হয়েছে।
১৯৭৬ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত প্রথম বাংলা স্বাধীন রক ব্যান্ড ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’। সত্তর থেকে নব্বইয়ের দশকে আধুনিক বাংলা গানের ধরন বদলে দিয়েছিল দলটি। এই দলের সবচেয়ে পুরনো সদস্যদের একজন তাপস দাস। যিনি সবার কাছে বাপী দা নামেই পরিচিতি।
তাপস দাস ১৯৫৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর একটি সাধারণ বাঙালি পরিবারে নারায়ণ চন্দ্র দাস এবং জ্যোৎস্না দাসের চতুর্থ পুত্র হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট বয়স থেকেই বাপির সঙ্গীত জগতের যাত্রা শুরু হয়। তিনি তার মা জ্যোৎস্না দাসকে তার প্রথম গুরু বা শিক্ষক হিসাবে বিবেচনা করতেন।
স্ব-শিক্ষিত গিটারবাদক বাপি, তার কলেজ জীবনে এই ছয় তারের যন্ত্রের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করেন। ১৯৭৫ সালে গৌতম চট্টোপাধ্যায়, প্রদীপ চ্যাটার্জি, রঞ্জন ঘোষাল, বিশ্বনাথ চট্টোপাধ্যায়, এব্রাহাম মজুমদার এবং তপেশ বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাপি রক ব্যান্ড ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র অংশ হন।
সংবিগ্ন পাখিকূল ও কলকাতা বিষয়ক (১৯৭৭), অজানা উড়ন্ত বস্তু বা অ-উ-ব (১৯৭৮) এবং দৃশ্যমান মহীনের ঘোড়াগুলি (১৯৭৯) এই তিন অ্যালবাম ভারতীয় রক মিউজিকের মাইলস্টোন। আশির দশকের গোড়ায় ব্যান্ড ছেড়ে নিজেদের কর্মজগতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সকলে, তবে ১৯৯৫ সালে ফের মুক্তি পায় মহীনের ঘোড়াগুলির ‘আবার বছর কুড়ি পরে’। এই অ্যালবামেরই গান ‘পৃথিবীটা নাকি ছোট হতে হতে’-যা আজকের জেনারেশনের কাছেও ততটাই জনপ্রিয়।
২০১৫ সালে বাপি মহীন এখন ও বন্ধুরা নামে একটি বাংলা ব্যান্ড গঠন করেন। একই বছরের ৬ অক্টোবর তিনি লগ্নজিতা চক্রবর্তী, মালবিকা ব্রহ্মা এবং তিতাস ভ্রমর সেনের সঙ্গে মহীন এখন ও বন্ধুরা নামে একটি ইপি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। অ্যালবামটিতে পাঁচটি গান এবং মহীনের ঘোড়াগুলির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শনকারী একটি অ্যালবাম রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৩
এনএটি