ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

হিমুর মৃত্যুতে শোবিজে শোকের ছায়া

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২৩
হিমুর মৃত্যুতে শোবিজে শোকের ছায়া

ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) বিকেলে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে।

হিমুর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিম।

হুমায়রা হিমুর মরদেহ এখন উত্তরার বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তার মৃত্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। কেউ বলছেন আত্মহত্যা, কেউ বলছেন হত্যা। কিন্তু এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।  

তবে সহকর্মী অভিনেত্রীকে হারিয়ে শোকের মাতম চলছে সামাজিকমাধ্যমে। নির্মাতা থেকে অভিনয়শিল্পী, সবাই হিমুর মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না।

এক  পোস্টে আফসোসের কথা তুলে ধরেন নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী। তিনি লেখেন, প্রিয় হিমু। যদিও তোমার সঙ্গে অনেকদিন কথা হয়নি, তাও এক বছর হলো। কিন্তু কাজটা তুমি একদম ভালো করোনি। ভীষণ রাগ হচ্ছে। যত যাই হোক, জীবন একটাই আর জীবন সুন্দর। বেঁচে থাকাটা অনেক আনন্দের।

এসময় আফসোস করে চয়নিকা লিখেছেন,“আসলেই তুমি একটা অন্যায় কাজ করেছ নিজের ওপর। একা একা চলে গেলে? নিজে নিজেই? তোমার আশে পাশের মানুষ একদম ভালো ছিল না। তোমাকে বকাও দিয়েছিলাম। আজ মনে হচ্ছে, বকাটা কন্টিনিউ করতাম যদি!

চিত্রনায়িকা শাহানূর লেখেন, অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) কিছুতেই মানতে পারছি না।

নির্মাতা এস এ হক অলিক লেখেন, এক সময় আমার অনেকগুলো নাটকে অভিনয় করেছিল হিমু। কয়েকদিন আগে কায়সার আহমেদ ভাইয়ের শুটিংয়ে অভিনয় করতে গিয়ে হিমুর সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা হলো কাজ নিয়ে, জীবন নিয়ে। এইমাত্র শুনলাম ও চলে গেছে!! ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

হুমায়রা হিমুর মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না মেহজাবীন চৌধুরী। এক লাইনে শুধু লেখেন, বর্ণনা করার মত কোন শব্দ নেই...।  

আরেক অভিনেত্রী সুষমা সরকারও মেহজাবীনের মতোই একবাক্যে লেখেন, হুমায়রা হিমু, মানতে পারছি না। প্রশ্ন রেখে যোগ করেন, কেন?

অভিনেত্রী অহনা রহমান লেখেন, হুমায়রা হিমু শান্তিতে বিশ্রাম প্রিয়। আমি তোমাকে ভালোবাসি। সঙ্গে একটি লাভ ইমোজি যুগ করেন এই অভিনেত্রী।  

হুমায়রা হিমুর মৃত্যুরে জনপ্রিয় অভিনেত্রী মনিরা মিঠুও শোকে কাতর। তিনি শোক জানিয়ে লেখেন, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।  

ক্ষোভের সুরে কথা বললেন অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি। তিনি লেখেন, এখন হিমুকে নিয়ে সবার বড় বড় কথা দেখবো? কেন চলে গেলা লেখা দেখবো! অনেক আহা উহু দেখবো! এটাই খুবই যন্ত্রনা দেয়, বেঁচে থাকতে কেউ খবরও নেয় না!  কাজের জন্য কেউ হয়তোতাকে ডাকতেন না! কাজের জন্য ফোন দিলে নিশ্চই ফোনটা ধরতেন না! খোজঁ নেওয়া তো দুরের কথা! কেমন যেনো আমরা সবাই মায়া কান্না লোক দেখানোতে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছি! ভালো থেকো হিমু...।  

হুমায়রা হিমুর মৃত্যুতে দেশের শোবিজ তারকাদের এমন অনেক শোক বার্তায় ছেঁয়ে গেছে সামাজিকমাধ্যম।

হুমায়রা হিমু ১৯৮৫ সালের ২৩ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। লক্ষ্মীপুরে ছোটবেলা কেটেছে হোমায়রা হিমুর। ক্লাস টুতে পড়ার সময় থেকেই কাজ করতেন মঞ্চে। বেসরকারি টিভি চ্যানেল দেশ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হিমু নিজেই বলেছিলেন, ছোটবেলা থেকেই স্থানীয় হাইফাই কৌতুক শিল্পগোষ্ঠী ও ফ্রেন্ডস নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করতেন তিনি।  

১৯৯৯ সালে এসএসসি পরীক্ষার পর ঢাকায় আসেন হিমু। প্রথমে ভর্তি হন নাগরিক নাট্যাঙ্গনে। এরপর কাজ করেন আরও কয়েকটি নাটকের দলে। এরপর এক বড় ভাইয়ের পরামর্শে ফটোশুট করে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী সংস্থায় মডেলিংয়ের জন্য জমা দেন। তখন এইডস নিয়ে সচেতনতামূলক একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেন। পরে দেখা যায় আরও কয়েকটি বিজ্ঞাপনচিত্রে। একটি চায়ের বিজ্ঞাপনচিত্রে তাকে দেখার পর প্রথম হিমুকে নাটকে সুযোগ দেন নির্মাতা তাহের শিপন। নাটকের নাম ছিল ‘পি আই’।

২০০৫ সালে বিনোদন দুনিয়ায় কাজ শুরু করেন হুমায়রা হিমু। টিভি নাটকে অভিনয় শুরুর পর নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় তার অভিনয় দর্শকের মধ্যে সাড়া ফেলে। ‘সোনাঘাট’, ‘চেয়ারম্যান বাড়ি’, ‘বাটিঘর’, ‘শোনে না সে শোনে না’, ‘কমেডি-৪২০’, ‘চাপাবাজ’, ‘অ্যাকশান গোয়েন্দা’, ‘ছায়াবিবি’, ‘এক কাপ চা’, ‘এ কেমন প্রতিদান’, ‘হুলো বিড়াল’, ‘ছন্নছাড়া ৪২০’, ‘অ্যাম্বুলেন্স ডাক্তার’, ‘পাগলা প্রেমিক’ ইত্যাদি নাটকে দেখা গেছে তাকে।

২০১১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় হিমুর। সিনেমাটিতে তরু আপা চরিত্রে দেখা যায় তাকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২৩
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।