হুমায়ূন সাধু, অভিনেতার পাশাপাশি ছিলেন নির্মাতা ও লেখক। তার পরিচালিত ও অভিনীত আলোচিত নাটক ‘চিকন পিনের চার্জার’।
দেখতে দেখতে পাঁচ বছর হয়ে গেল হুমায়ূন সাধুর বিদায়ের। ২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর পৃথিবী থেকে বিদায় নেন তিনি।
হুমায়ূন সাধুর প্রকৃত নাম হুমায়ূন কবীর সাধু। তার জন্ম ১৯৮২ সালের ১ মে চট্টগ্রামে। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে সেখানেই। ৯ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সপ্তম। মা মরিয়ম বেগম ছিলেন তার জীবনের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।
প্রকৃতির খেয়ালে সাধুর শারীরিক গঠন স্বাভাবিক ছিল না। তিনি অন্যদের চেয়ে কিছুটা খর্বাকৃতির ছিলেন। এজন্য তার বাবা স্কুলে পাঠাতে আগ্রহী ছিলেন না। বড় বোনের কাছেই প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন সাধু। পরে বড় বোন তাকে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠান। কিন্তু বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাকে নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন।
পরে তার ভাইয়ের অনুরোধে সাধুকে সে স্কুলে নিয়ে ভর্তি করা হয় এবং দ্বিতীয় শ্রেণির পরীক্ষায় ১৩০ জন ছেলে-মেয়েকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি। সহপাঠীরা তখন সাধুকে কাঁধে নিয়ে উল্লাস করছিল। তার পরিবারও মিষ্টি কিনে খাইয়েছিল পাড়ার লোকদের।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে ভর্তি হন। ঢাকার বিভিন্ন রেলস্টেশনে, বাস স্টেশনে ঠিকানাহীনভাবে কিছুকাল কাটে তার।
এরপর চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সঙ্গে পরিচয় এবং পরবর্তীতে তার সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন, যাত্রা করেন অভিনয়শিল্পী হিসেবেও।
হুমায়ূন সাধু অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- মেড ইন বাংলাদেশ, বিউটি সার্কাস, সাত ভাই চম্পা, চোরাবালি। এছাড়া ‘ঊন মানুষ’ নামে একটি টেলিফিল্মে অভিনয় করেন তিনি। হুমায়ূন সাধু পরিচালিত নাটক হলো- চিকন পিনের চার্জার ও দরশন।
এছাড়াও রয়েছে তার নাটক সিরিজ- বেঁচে থাকার জন্য আমি, পাখি পাকা পেঁপে খায়। তার টেলিফিল্ম- সিজোফ্রেনিয়া ও অ-মানুষিক। শর্টফিল্ম- গড ভার্সেস গড ও গুঞ্জন। প্রথম চলচ্চিত্র হোমো-সেপিয়েন্স (অসমাপ্ত)।
হুমায়ূন সাধুর প্রযোজনায় ‘আমার ঘরে বিরাজ করে লালনগীতি’ নামে একটি সংগীত অ্যালবাম অ্যামাজন থেকে বের হয়। ২০১৯ সালের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশ পায় সাধুর প্রথম বই ‘ননাই’। একটি সিনেমা নির্মাণের কাজও হাতে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার শেষ ইচ্ছাটা আর পূরণ হয়নি তার।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২০
এনএটি