নির্মিত হয়েছে মিউজিক্যাল ওয়েবফিল্ম জলরঙের ফড়িং। শুভ্র খানের গল্পে খন্দকার হিমেলের পরিচালনায় নির্মিত ওয়েবফিল্মটি শিগগিরিই মুক্তি পাবে ওটিটি প্লাটফর্মে।
একজন সিঙ্গেল মাদার ও নিঃসঙ্গ বেড়ে ওঠা সন্তানের মধ্যকার দুরত্ব নিয়ে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্রটি। চলচ্চিত্রটিতে ব্যবহৃত হয়েছে পাঁচটি গান।
মিউজিক্যাল ওয়েবফিল্মটি প্রসঙ্গে নির্মাতা খন্দকার হিমেল বলেন, শুভ্র খানের লেখা গল্পটি প্রথম আকর্ষণ করেছিল। গানগুলোও লেখা ছিল। পড়ে মনে হয়েছিল এটি একটি মিউজিক্যাল ওয়েবফিল্ম হতে পারে। আমাদের এই উত্তরাধুনিক সময়ে পারিবারিক সম্পর্কগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে উঠছে, সম্পর্কের সুরগুলো কেটে যাচ্ছে সে সুর ফিরিয়ে আনার গল্পই জলরঙের ফড়িং। ওয়েবফিল্মটি এ জন্যই মিউজিক্যাল করা হয়েছে। এ গল্পের মূল বার্তাটি দিবে এর গানগুলো।
চলচ্চিত্রটিতে বৈচিত্রময় অভিনয় শিল্পীর সন্নিবেশ ঘটেছে। এতে সিঙ্গেল মাদার চরিত্রে অভিনয় করেছেন আশির দশকের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী শায়লা খান। বিটিভির প্রথম ধারাবাহিক আব্দুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত সংসপ্তক নাটকের সুবর্ণা মুস্তাফার বড়বোন আরিফা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। বিটিভিতে নিজের অভিনীত প্রথম নাটকেই পেয়েছিলেন তুমুল জনপ্রিয়তা। বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় রচিত ‘রোমাঞ্চ’ গল্প অবলম্বনে নির্মিত সৈয়দ সিদ্দিক হোসেন পরিচালিত নাটকটির নাম ছিল ‘ভালোবাসা’।
আশির দশকে এ অভিনেত্রী মোস্তাফিজুরের রহমান, সৈয়দ সিদ্দিক হোসেন, মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ’র মতো পরিচালক-প্রযোজকের নাটকে সুবর্ণা মোস্তফা, আল মনসুর, মিতা হক, রাইসুল ইসলাম আসাদ, মামুনুর রশীদের বিপরীতে একে একে বেশকিছু জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করেন।
প্রায় তিনযুগ ধরে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন তিনি। সেখানেও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত রেখেছিলেন। ২০১৩ সাল থেকে দেশে যখনই এসেছেন অভিনয় করেছেন নাটকে। চয়নিকা চৌধুরীর বেশকিছু নাটকে প্রযোজনা ও অভিনয় করেন তিনি। মিউজিক্যাল ওয়েবফিল্ম ‘জলরঙের ফড়িং’-এর প্রযোজকও তিনি।
শায়লা খান বলেন, প্রবাসে থাকলেও সবসময় দেশিয় সংস্কৃতির সঙ্গেই যুক্ত ছিলাম। সাংগঠিকভাবে, ব্যাক্তিগতভাবে একজন শিল্পী হিসেবে কাজ করে গেছি। তাই যখনই দেশে ফিরেছি দেশের পর্দায় হাজির হওয়ার তাড়নাটাও অনুভব করেছি। ‘জলরঙের ফড়িং’ অসম্ভব সুন্দর একটি গল্প। নির্মাতার বলার ধরণটিও ভিন্ন, খুব কম সংলাপ ছিল, বেশ কিছু গান এতে ব্যাবহার হয়েছে। সংলাপ বলা ও অভিনয়ের স্বাধীনতা ছিল। আশা করছি, এই সময়ের দর্শকরা নাটকটি পছন্দ করবেন।
ওয়েবফিল্মটিতে তার সন্তানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন টলিউডের সুপ্রতীম রায়। বাংলাদেশের পর্দায় অভিষেক ঘটতে যাচ্ছে তার। পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে এ অভিনেতার আবার আসিবো ফিরে চলচ্চিত্রটি। এছাড়াও চলচ্চিত্র ‘বড়বাবু’, ‘আকরিক’, ‘কিশোর কুমারের বায়োপিক-এ কিশোর কুমারের চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। বর্তমানে দু’টি মালায়লাম সিনেমায় যুক্ত হয়েছেন তিনি। চলচ্চিত্র দু’টির অভিনয়ে বর্তমানে কেরালায় অবস্থান করছেন এ অভিনেতা।
‘আবার আসিবো ফিরে’ চলচ্চিত্রটির মাধ্যমে টলিউডে সম্প্রতি অভিষেক ঘটে সঞ্চিতা দত্তের। চলচ্চিত্রটিতে সহশিল্পী হিসেবে পেয়েছিলেন সুপ্রতীম রায়কে। এবার তার বিপরীতে জলরঙের ফড়িং-এ দেখা যাবে তাকে। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয়ের পাশাপাশি গানও করেছেন এ শিল্পী।
তিনি বলেন, এ ওয়েবফিল্মটা আমার কাছে বিশেষ কারণ এর গল্পটা ভালো লেগেছে। চরিত্রটাও চ্যালেঞ্জিং ছিল। আর এ চলচ্চিত্রে আমি গান ‘জলরঙের ফড়িং’ নামে একটি গান গেয়েছি। খালিগলায়ও গেয়েছি। এর আগে আমি কখনো গান নিয়ে দর্শকের সামনে আসিনি। তাই এ চলচ্চিত্রটা আমার জন্য বিশেষ অপেক্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চলচ্চিত্রটির চিত্রগ্রহণ করেছেন এনামুল হক সোহেল। মেকআপ করেছেন খলিলুর রহমান। সম্পাদনা করেছেন কাউসার আহমেদ প্রান্ত। শুভ্র খানের কথায় শান্ত শানের সংগীত পরিচালনায় গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছেন বেলাল খান, সঞ্চিতা দত্ত ও শান। দু’টি বাউল গান গেয়েছেন বাউল রহমত শাহ।
নির্মাতা জানান, খুব শিগগিরই একটি ওটিটি প্লাটফর্মে ওয়েবফিল্মটি প্রচার হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
এনএটি